জলপাইগুড়ি, 7 সেপ্টেম্বর: গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ভবন সাসপেন্ড করেছে চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে ৷ তার ঠিক একদিন আগে পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের সহ-সভাপতি চিকিৎসক সুশান্তকুমার রায়কে নিয়ে লম্বা-চওড়া একটি ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন তিনি ৷ কিন্তু, সাসপেন্ড হওয়ার পরপরই ওই পোস্ট তো দূর, বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটাই গায়েব হয়ে গিয়েছে ৷ আর সেই নিয়েই একাধিক প্রশ্ন বিরূপাক্ষের একদা সহকর্মীদের মধ্যে ৷
উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডে গত 9 অগস্ট সেমিনার রুমের ঘটনাস্থলে দেখা গিয়েছিল তৎকালীন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র রেসিডেন্ট বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে ৷ ছিলেন ডা. অভীক দে-সহ চিকিৎসক সুশান্ত রায়ের অনুগামীদের ৷ সুশান্ত রায় নিজেও সেখানে ছিলেন ৷ এরপর থেকেই সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠতে থাকে ৷ যেখানে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে, জলপাইগুড়িতে উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য দফতরের ওএসডি থাকাকালীন ৷ সেই সময় একাধিক চিকিৎসককে বেআইনিভাবে বদলি করানোর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে ৷
এই সব অভিযোগকে নসাৎ করে লম্বা একটি পোস্ট ফেসবুকে করেন বিরূপাক্ষ বিশ্বাস ৷ সেখানেই জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল তৈরি করার ক্ষেত্রে সুশান্ত রায়ের অবদানের বিষয়ে লেখেন ৷ উল্লেখ করেন, করোনার সময় জলপাইগুড়ি স্টেডিয়ামে কোভিড আইসোলেশন সেন্টার তৈরির বিষয় ৷ এমন নানা বিষয়ে 'জেঠু' সুশান্ত রায়ের প্রশংসা করেছিলেন বিরূপাক্ষ বিশ্বাস ৷ কিন্তু, সেই ফেসবুক পোস্ট যেমন গায়েব হয়ে গিয়েছে ৷ তেমনি বিরূপাক্ষের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটাই এই মুহূর্তে আর নেই ৷
এ নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় বিরূপাক্ষকে কটাক্ষও করেছেন, তাঁর একদা সহকর্মী তথা শিলিগুড়ির চিকিৎসক অরুণিমা ঘোষ ৷ সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে বিরূপাক্ষের একটি 'থ্রেট পোস্ট' শেয়ার করেন নিজের ফেসবুকে ৷ উল্লেখ্য, বেশ কয়েকবছর আগে বিরূপাক্ষ একটি পোস্ট করেছিলেন ৷ অভিযোগ, সেখানে তিনি হুমকির সুরে লিখেছিলেন, "কয়েকমাস ধরে দেখছি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের কিছু ডাক্তাররা সিপিআইএম করছে... কেউ লুকিয়ে কেউ প্রকাশ্যে ৷ তাঁদের বলি... অনেক হয়েছে, মেরে চামড়া তুলে দেব ৷ সে যত বড় হনুই হোক না-কেন..."
সেই পোস্ট শেয়ার করে চিকিৎসক অরুণিমা ঘোষ লিখেছেন, "বিরূপাক্ষ প্রোফাই ডিঅ্যাক্টিভেট করে দিয়েছেন, কারও সঙ্গে পার্সোনাল কন্ট্যাক্ট থাকলে একটু জানিয়ে দিন যে 'এআই ইঞ্জিনিয়ার্ড', এই পোস্টটা বাজারে ঘুরছে ৷ উনি একটু প্রকাশ্যে এসে যেন ব্যাপারটা একটু ব্যাখ্যা করেন ৷ অবশ্য় আমি এটা বুঝতে পারছি না, উনি নিজের প্রোফাইল ওড়ালেন কেন ? ওঁর চামড়া অক্ষত আছে তো ?"
এ নিয়ে বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে ফোনে যোগাযোগ করা হয় ইটিভি ভারতের সঙ্গে ৷ কেন তিনি ফেসবুক প্রোফাইল ইনঅ্যাক্টিভ করে দিয়েছেন ? জবাবে বিরূপাক্ষ বলেন, "আমি ফেসবুকে অতটা থাকি না ৷ আমি মূলত এক্স হ্যান্ডেল বেশি ব্যবহার করি ৷"