বর্ধমান, 24 সেপ্টেম্বর: জামিন পেয়ে দীর্ঘ দু'বছর পর মঙ্গলবার সকালে বাড়ি ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল ৷ তৃণমূলের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার আগমনকে কেন্দ্র করে বীরভূমের নিচুপট্টিতে তাঁর বাড়ির সামনে ছিল সাজো সাজো রব ৷ অনুরাগীদের উপচে পড়া ভিড় ৷ পুষ্পবৃষ্টির মাধ্যমে হল 'কেষ্ট বরণ'৷ তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার ঘরে ফেরাকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না বিজেপির দাপুটে নেতা দিলীপ ঘোষ ৷ তিনি এ দিন বললেন, "আজ বীরভূমে পার্টি হবে । অনেকদিন পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে অনুব্রত মণ্ডল ।"
তিহাড় জেল থেকে ছাড়া পেয়ে মঙ্গলবার ভোরে মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকে নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন অনুব্রত ৷ এরপর সেখান থেকে যান নিজের বাড়িতে ৷ আর অনুব্রতর এই ঘরে ফেরার দিনেই বীরভূম জেলা সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বোলপুর গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন তিনি ৷ একই দিনে মমতার বীরভূম সফরকে তীব্র কটাক্ষ করলেন দিলীপ ঘোষ ৷
তাঁর কথায়, "বীরভূম থেকে দলের ইনকাম কমে গিয়েছে । আবার মালকড়ি আসার প্রস্তুতি কী হল, সবকিছু খতিয়ে দেখার জন্য বীরভূমে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী । পাশাপাশি সবকিছু ঠিক আছে কি না, নাকি কাজল শেখ সব খেয়ে নিল, এগুলোও দেখতে দিদি বীরভূম যাচ্ছেন । সেখানে আজ বিরাট বড় মিলন উৎসব হবে । চুরির দায়ে জেল খাটা নেতা ছাড়া পেয়েছেন । তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে এরাই গর্ব । এরাই তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বাঘ, সিংহ, হাতি । কারণ এদের সম্পত্তি আছে তো । যাঁরা সৎ সাধারণ নেতা তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে তাঁদের কোনও গুরুত্ব নেই ।"
মঙ্গলবার সকালে বর্ধমান শহরের টাউন হল এলাকায় প্রাতঃভ্রমণ করতে যান দিলীপ ঘোষ । সেখানে চা-চক্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি । রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, "গত 13 বছরে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী পদক্ষেপ করেছেন ? বৃষ্টি কমে গিয়েছে ওঁর কপাল ভালো ৷ চাষ করার দরকার নেই কারণ কেন্দ্র সরকার চাল দিচ্ছে । সেই চাল খেয়ে বেঁচে আছি । উত্তরবঙ্গে বন্যা হচ্ছে আর উনি বন্যা দেখতে যাচ্ছেন । গোড়ালি পর্যন্ত জলে দাঁড়িয়ে উনি সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য দিয়ে চলে আসছেন । সেটাই ওঁর দায়িত্ব । বাকি এনজিও ও কেন্দ্রীয় সরকার ত্রাণ দেবে ।"
বিজেপি নেতার কথায়, "বন্যার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু টাকার জন্য দাবি জানাবেন । এত হাজার কোটি টাকা চাই । সেই টাকা দিয়ে ইলেকশন ফান্ড তৈরি করবেন । আসলে উনি টাকা লুটবার জন্য যান । উনি হেলিকাপ্টারে ঘুরে ঘুরে বুঝতে পেরে যান কত বাড়ি ভেঙেছে । ওঁর যে কোলের ভাই দেব, উনি কথা দিয়েছেন, ভেবেছিলেন এবার সিজন তো পেরিয়ে গেল হয়তো বন্যা হবে না । প্রতি বছর সেই ঘাটালে বন্যা হচ্ছে, সেই পুরনো ডায়লগ শুনে শুনে আমরা ক্লান্ত । আমরা ত্রাণ দিয়ে দিচ্ছি, কী করব গরিব মানুষকে বাঁচাতে হবে ।"