ডায়মন্ড হারবার, 23 সেপ্টেম্বর: অপেক্ষার অবসান ৷ শেষ হতে চলেছে দীর্ঘ এক বছরের প্রতীক্ষার অবসান। সপরিবার উমা আসছে বাপের বাড়িতে। দুর্গাপুজো মানে ঢাকের তাল আর ধুনুচি নাচ। পুজোর এই পাঁচটা দিন এক বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকে দক্ষিণ 24 পরগনার ঢাকি পাড়ার বাদ্যকররা। ঢাকিরা বলছেন, পুজো প্রাঙ্গনে ঢাকের বোল জোরালো হোক। যাতে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তির জয়গানের বার্তা ছড়িয়ে পড়ে।
ঢাকশিল্পীরা মুখিয়ে থাকেন, উৎসব কবে শুরু হবে, কবে হাতে লক্ষ্মী আসবে। গ্রাম থেকে শহরে আসার জন্য তোড়জোড় । এখন তাই পুজো মাত করার জন্য মহড়া চালাচ্ছেন ঢাকিরা। সারা রাজ্যের ঢাকিরাই চাইছেন, উৎসবের আনন্দমুখর অঙ্গনে সাড়া ফেলতে। কারণ ঢাকের বোল ফুটলে তবেই তাঁদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ভরে ওঠে। পাশাপাশি, সারা বছরের অর্থের খরা দূর হয়ে রোজগারে জোয়ার আসে। পরিবার, স্বজনকে ছেড়ে লক্ষ্মী লাভের আশায় রাজ্য এবং শহরতরিতে পাড়ি দেন ঢাকিরা।
এবার পুজো নিয়ে নানা মহলে প্রচার চলছে। কেউ কেউ পুজোর আড়ম্বর কমিয়ে দিতে চান, আরজি কর কাণ্ডের জেরে। ঢাকিরা বলছেন, পুজো প্রাঙ্গনে ঢাকের বোল জোরালো হোক। যাতে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তির জয়গানের বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। পুজোর দিকে তাকিয়েই স্বপ্ন বোনেন ঢাকিরা। ঠিকমতো বায়না এলে সংসারের অভাব কাটে। স্ত্রী-সন্তানের মুখে হাসি। ডায়মন্ড হারবারের হাঁটুগঞ্জে রুইদাস পাড়াতে এখন যেন বাদ্যকরদের না-হওয়ার সময় নেই। না-খাওয়া ভুলে এখন ব্যস্ত তাদের বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুত করতে।
এবিষয়ে গোষ্ঠ রুইদাস নামে এক বাদ্যকর বলেন, "সারা বছর আমরা চাষবাস এবং অন্যান্য কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও, পুজোর এই পাঁচটা দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকি আমরা। ইতিমধ্যেই শহরতলির বিভিন্ন দুর্গোৎসব কমিটির সদস্যরা আমাদেরকে বায়না দিয়ে গিয়েছে। আমরা এখন আমাদের বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুতির কাজে লেগে পড়েছি। পরিবার ছেড়ে পুজোর পাঁচটা দিন দূরে থাকলেও ফিরে এসে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ খুশিতে মেতে উঠি।"
ভগীরথ রুইদাস নামে আরেক বাদ্যকর বলেন, "পুজো এলেই আমাদের এই ঢাকি পাড়াতে উৎসবের মেজাজে ফিরে আসে ৷ বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে মহড়া সমস্ত কিছুই চলে। এই পাড়াতে প্রায় 100টি বাদ্যকর পরিবার রয়েছে। আমরা অপেক্ষা করে থাকি, কবে উমা সপরিবার তাঁর বাপের বাড়িতে আসবে।"
পুজোর বাকি আর চারদিন! প্রস্তুতি তুঙ্গে শেওড়াফুলি সর্বমঙ্গলা রাজবাড়িতে