জলপাইগুড়ি, 19 এপ্রিল: নেই ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড ৷ বিধ্বংসী ঝড়ে চালচুলো হারিয়েছেন আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ির বহু মানুষ ৷ কমিশনের কথা মতো আজ তাঁরা ভোটার স্লিপ দেখিয়েই ভোট দিলেন ৷ তবে এখনও ঝড়ের আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাঁদের ৷
কয়েক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে উত্তরের দুই জেলায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে বহু ঘরবাড়ি । প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন ৷ শতাধিক মানুষ আহত । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে কাগজপত্র । লোকসভা ভোটের আগে এই ঘটনায় ঝড়ে দুর্গতরা কীভাবে নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করবেন, তা নিয়ে চিন্তা ছিল ৷ তবে কালবৈশাখী-বিধ্বস্ত জেলাগুলির সামগ্রিক অবস্থা পর্যালোচনা করে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, দুর্যোগ কবলিত এলাকার ভোটারদেরর কাছে শুধু ভোটার স্লিপ থাকলেই তাঁরা ভোট দিতে পারবেন ।
কমিশনের সেই নির্দেশ মতোই আজ লম্বা লাইন দিয়ে ভোটদান করলেন জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের ঝড়ে দুর্গতরা ৷ পুলতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের 16/115 নং বুথে ভোট দেন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভোটাররা । কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নজরদারিতে শান্তিপূর্ণভাবে চলছে ভোট।
ঝড়ে বিধ্বস্ত ষাটোর্ধ্ব দুর্যোগমোহন রায় বলেন, ঝড় কাটলেও আতঙ্ক এখনও কাটেনি । সামান্য হওয়া দিলেই সে দিনের বিধ্বংসী ঝড়ের কথা মনে পড়ায় আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে ৷ ঝড়ে আহত তাঁর স্ত্রী ৷ তবে হাজারো সমস্যা মাথায় নিয়েও ভোটদানে শামিল হয়েছেন সবাই ৷ শুক্রবার সকাল থেকে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছেন । ভোটার কার্ড নেই ,আধার কার্ডটুকুও নিজের বাসস্থানের থেকেও কয়েক কিলোমিটার দূরে উদ্ধার হয়েছে সহৃদয় এক ব্যক্তির দৌলতে । তাই বাধ্য হয়ে ভোটার স্লিপ দিয়েই ভোট দেন দুর্যোগমোহন রায় ।
বিধ্বংসী ঝড়ে তাঁর পরিবারে মাথার আশ্রয় উড়ে গিয়েছে । ঝড়ের পর গত কয়েকদিন ধরে কোনও রকমে অস্থায়ী একটি ঘর বানিয়ে সমগ্র পরিবার একসঙ্গে রয়েছেন । ঝড়ে আহত স্ত্রী এখনও শয্যাশায়ী ।
তাঁর পাশাপাশি ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন তাঁর এলাকার অন্যান্যরা ৷ তাঁরাও ঝড়ে সচিত্র পরিচয় পত্র হারিয়েছেন ৷ তাই ভোটাধিকার প্রয়োগে তাঁদেরও একমাত্র ভরসা ছিল ভোটার স্লিপ ।
আরও পড়ুন: