কলকাতা, 29 জুলাই: বর্ষা শুরু হলেই শহরে দেখা দেয় মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব । তবে এবার স্বস্তির বিষয়, গত বছরের তুলনায় এবছর মহানগরে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কম। এমনটাই দাবি কলকাতা পুরনিগমের । বর্ষা দেরিতে আসার কারণেই চলতি বছরে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ কম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ তবে বেশি করে সচেতনতা প্রচার চালানোর বার্তা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের।
মেয়র বলেন, "এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে সচেতনতায় জোর দিতে বলেছি। নজরদারি, স্প্রে করা আরও বাড়ানো হবে। আগের থেকে মানুষ অনেক সচেতন। আরও সচেতন থাকতে হবে। সিভিয়ার কেস বা মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। মশার লার্ভা পুরোনো বাড়ি ও খোলা জায়গায় বেশি থাকে।"
সাধারণত বর্ষা শুরু হলেই শহরে মশাবাহিত রোগের আতঙ্ক ফেরে। পুরনিগমের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এই সময় পর্যন্ত মহানগরে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল 2 হাজার 329 জন। চলতি বছরে সেই সংখ্যা হয়েছে 1 হাজার 38 জন। চলতি মাসের 21 জুলাই পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন 184 জন। গত বছর এই সময় মহানগরে ডেঙ্গি আক্রান্ত সংখ্যা ছিল 271 জন। এবছর ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা 954 জন। গত বছর এই সময় ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল 2158 জন। গত বছরের তুলনায় এবছর পরিস্থিতি ভালো ৷ এর প্রথম কারণ হল বর্ষা দেরিতে আসা ।
তবে এখনও পর্যন্ত শহরের ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি ভালো হলেও, স্বাভাবিকভাবে বর্ষা না-হওয়া ও গরম বৃদ্ধি নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় পুরপ্রশাসন। বর্ষা শুরু হলেও মশাবাহিত রোগের বাড়বাড়ন্ত আটকাতে প্রচারে জোড় দিচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। লিফলেট দেওয়া থেকে মৌখিকভাবে সচেতনতার কাজ করছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা । পাশাপশি চলছে ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের নজরদারি। প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে সুপার ভাইজার বা ভেক্টর কন্ট্রোল অফিসারের নেতৃত্বে এই টিম কাজ করে। বরো ভিত্তিক একটি র্যাপিড অ্যাকশন টিম তৈরি রয়েছে । বরোর কোনও ওয়ার্ডে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়লেই, র্যাপিড অ্যাকশন টিম সেখানে তৎপর হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে জমা জল, স্যাঁতস্যাঁতে এলাকা অর্থাৎ মশা ডিম পাড়তে পারে এমন জায়গাগুলি চিহ্নিত করে স্প্রে করার কাজ শুরু করা হয়েছে ৷ এছাড়া দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা ভাঙা বাড়িতে ড্রোনের সাহায্যে মশার লার্ভা ধ্বংসকারী কীটনাশক স্প্রে করা হয়েছে। ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া পরীক্ষার জন্য পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।