শিলিগুড়ি, 27 ফেব্রুয়ারি: 17 বছর পর লাভের মুখ দেখল ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল) । তিন মাসে 260 কোটি টাকার লাভ করেছে এই সংস্থা । বৃহস্পতিবার টেলিকম অ্য়াডভাইজারি কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা জানান দার্জিলিংয়ের সাংসদ তথা টেলিকম অ্য়াডভাইজারি কমিটির চেয়ারম্যান রাজু বিস্তা ।
এদিন শিলিগুড়িতে বিএসএনএল কার্যালয়ে এক বৈঠক করেন রাজু বিস্তা ৷ সেই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দার্জিলিংয়ের সাংসদ ৷ সেখানেই তিনি একথা জানান ৷ রাজু বিস্তা বলেন, "আমার বলতে খুব ভালো লাগছে 17 বছর পর প্রথমবার বিএসএনএল মুনাফার মুখ দেখেছে । তিনমাসে 260 কোটির লাভ এসেছে । এতোদিন পর সংস্থা লাভ দেখায় কর্মী ও আধিকারিকরাও খুশি ।"
এদিন রাজু বিস্তার সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গের আট জেলার বিএসএনএলের আধিকারিকরা ৷ এই জেলাগুলিতে বিএসএনএলের পরিষেবা নিয়ে আলোচনা হয় ওই বৈঠকে ৷ বৈঠকে মূলত দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় নেটওয়ার্ক পরিষেবা নিয়ে জোর দেওয়া হয় ।
কয়েক দশক থেকেই পাহাড়ের দুই জেলা দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে নেটওয়ার্ক সমস্যা রয়েছে । এতে সমস্যায় পড়তে হয় পাহাড়বাসী থেকে পর্যটকদের । সেই মতো পাহাড়ি এলাকায় নেটওয়ার্ক পরিষেবা উন্নয়নে জোর দেয় । পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে একে একে টাওয়ার বসিয়ে পরিষেবা উন্নত করা হচ্ছে ।

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজু বিস্তা বলেন, "এর আগে কালিম্পংয়ে বিএসএনএলের পরিষেবা শিলিগুড়ি থেকে আগে তিস্তা হয়ে গ্যাংটকে পাঠানো হতো । তারপর সেখান থেকে ঘুরিয়ে কালিম্পংয়ে পৌঁছানো হতো । এখন থেকে সেটা সরাসরি শিলিগুড়ি থেকে দেওয়া হচ্ছে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আগে বারবার ধস ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে পরিষেবা ব্যাহত হতো । কিন্তু এখন বিএসএনএল পাওয়ারগ্রিড কর্পোরেশন ইন্ডিয়া লিমিটেডের মাধ্যমে ব্যান্ড উইথ কিনেছে । বছরে 33 লক্ষ টাকা দিয়ে পিজিসিআইএলের থেকে ব্যান্ড উইথ বিএসএনএল নেবে । বিগত পাঁচ মাস ধরে তা ট্রায়ালে চালানো হচ্ছে । বিগত পাঁচ মাসে ওই লাইনে একবারও সমস্যা হয়নি । এতে মোবাইল কিংবা ইন্টারনেট কোনোটাই সমস্যায় পড়েনি ।"

এদিনের বৈঠক সূত্রে জানা গিয়েছে, পাহাড়ের দার্জিলিং জেলার মধ্যে 561টি গ্রামের মধ্যে 170টি গ্রামে ইতিমধ্যে বিএসএনএলের পরিষেবা পৌঁছে গিয়েছে । পাশাপাশি কালিম্পং জেলার 127টি গ্রামের মধ্যে 43টি গ্রাম নিজেদের কভারেজে এনেছে বিএসএনএল । পাহাড়ের মোট 33 শতাংশ এলাকা কভার করেছে বিএসএনএল ।
এছাড়াও অতিরিক্ত 144টি গ্রামের তালিকা বিএসএনএল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে সাংসদের মাধ্যমে । তার মধ্যেও ছ’টি গ্রামে বিএসএনএলের পরিষেবা পৌঁছে গিয়েছে । বাকি 138টি গ্রামে কভারেজের কাজ চলছে । পরিষেবা উন্নত করতে তিস্তাবাজারের কাছে মংপং, ভুটান সীমান্ত লাগোয়া বিন্দু, লাভা ও জোরথাংয়ের কাছে পাঙখাশ্রী গ্রাম, বিড়িকদাঁড়া, কাফেরগাঁওয়ের কাছে চুইখিম গ্রামে টাওয়ারের কাজ শেষ হয়েছে ।
রাজু বিস্তা আরও জানান, শিলিগুড়িতে 61 জন অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেতন সমস্যা রয়েছে । সেই বিষয়েও পদক্ষেপ করা হয়েছে ।