কলকাতা, 27 অক্টোবর: আরজিকর কান্ডকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে গঠন হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স’ ফ্রন্ট। অন্যদিকে, এরই প্রতিদ্বন্দ্বী আরেকটি চিকিৎসক সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে শনিবার ৷ ডাক্তারদের নতুন সংগঠনের নাম ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স’ অ্যাসোসিয়েশন ৷ ঘটনাচক্রে, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে থ্রেট কালচারে অভিযুক্তদের অনেকেই রয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকদের নতুন এই সংগঠনে ৷ শনিবার ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স’ অ্যাসোসিয়েশন একটি বৈঠকও করেছে ৷ তার পরই প্রকাশ্যে এসেছে নতুন সংগঠনের সদস্যদের কয়েকটি ছবি-ভিডিয়ো, যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বিতর্কিত ওই ছবিতে আরজি কর মেডিক্যালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে জুনিয়র চিকিৎসকদের নতুন সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স’ অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক শ্রীশ চক্রবর্তী, হাসপাতালে থ্রেট কালচারের অন্যতম অভিযুক্ত অভীক দে-কে ৷ যদিও এই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত ৷
ছবি এবং ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, প্রাক্তনীদের ঘরের সামনে তালা দিয়ে দাঁড়িয়ে নির্জন বাগচী, শ্রীশ চক্রবর্তী। ওই ছবির প্রসঙ্গে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এক প্রাক্তনী তাপস প্রামাণিক বলেন, "2023 সালে আচমকাই সন্দীপ ঘোষ প্রাক্তনীদের ঘরে তালা দিয়ে দেন। সেই দায়িত্ব তিনি দিয়েছিলেন নির্জন বাগচী, আশিস পান্ডে, শ্রীশ চক্রবর্তীদের। তাঁরা তালা দিয়ে প্লাস্টার অফ প্যারিস করে দেয় প্রাক্তনীদের ঘরে। এটা করার কোনও অধিকার ওদের নেই। এই শ্রীশ চক্রবর্তী, নির্জন বাগচীর সামনে আমাদের প্রাক্তনী চিকিৎসক আলপনা দে হাতজোড় করে অনুরোধ করেছিলেন। তার পরেও কিছুই হয়নি।"
তবে এই দাবি খারিজ করে দেন জুনিয়র চিকিৎসকদের নতুন সংগঠনের আহ্বায়ক শ্রীশ চক্রবর্তী। তিনি ইটিভি ভারতকে বলেন, "ভিডিয়ো দেখলে বুঝতে পারবেন, আমি একেবারেই ওখানে কোনও খারাপ উদ্দেশ্যে যায়নি। বরং যাঁরা খারাপ কথা বলেছেন, আমি তাঁদের হয়ে ক্ষমা চাইতে গিয়েছিলাম। এর পাশাপাশি ওখানে কী হচ্ছে, সেটাই দেখতে গেছিলাম।"
তবে এই ভিডিয়োর কিছুক্ষণ পরেই আবার প্রকাশ্যে আসে একটি ছবি। এখানে দেখা যাচ্ছে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া সন্দীপ ঘোষ এবং স্বাস্থ্য ভবনে পাহাড় প্রমাণ অভিযোগের অভিযুক্ত অভিক দে'র সঙ্গে ছবি রয়েছে এই শ্রীশ চক্রবর্তীর। তবে শুধু শ্রীশ নয়, সেখানে রয়েছেন নির্জন বাগচী, অভিষেক সেন, রামিজ আহমেদ, চয়ন ভট্টাচার্য, শরিফ হাসান-সহ বেশ কয়েকজন সদস্য ।
আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের এক জুনিয়র চিকিৎসক অনুপম রায় বলেন, "আমরা প্রথম থেকেই বলেছি এরা সকলেই সন্দীপ ঘোষ ও শাসক দলের ঘনিষ্ঠ। শুধু সন্দীপ ঘোষ নয়, অভিক দে, এই ছবিতে তিনিও রয়েছেন। সেই সন্দীপ ঘোষের আমলে আরজি করে যে ব্যাপক থ্রেট সিন্ডিকেট চলত, সেখানে এই শ্রীশ চক্রবর্তী-সহ আরও কয়েকজন জড়িত ছিলেন। এই ছবি তার একটি উদাহরণ ।"
এর জবাবে চিকিৎসক শ্রীশ বলেন, "আমি প্রথম থেকেই কলেজে সমস্ত কাজে অংশ নিতাম। ফলে সন্দীপ ঘোষ স্যার যখন দ্বিতীয়বার আমাদের অধ্যক্ষ হয়ে আসেন, এটা তারই ছবি। তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য একটি ব্যবস্থা করা হয়েছিল কলেজ ক্যাম্পাসে। সেই অনুষ্ঠানের পর সবাই মিলে একটা ছবি তোলে। ফলে আমিও সেই ছবিতে অংশ নিয়েছিলাম। এই ছবিকে দেখিয়ে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে সন্দীপ ঘোষ স্যার ঘনিষ্ঠ বা থ্রেট কালচারের কোনও যোগাযোগ নেই ।"