ETV Bharat / state

'জমি মাফিয়াদের আমি ছাড়ব না', মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে গৌতম দেবও - Mamata Banerjee

Mamata Review Meeting at Nabanna: জমি মাফিয়া থেকে জঞ্জাল অপসারণ, শিলিগুড়ি পৌরনিগমের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ এসবের জন্য দায়ী মুখ্যমন্ত্রী নিজেই পালটা অভিযোগ বিরোধীদের ৷

Mamata Banerjee Review Meeting at Nabanna
মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে গৌতম দেবও (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 24, 2024, 10:01 PM IST

শিলিগুড়ি, 24 জুন: ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে এক শ্রেণির জমি মাফিয়াদের দৌরাত্মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন সময় উত্তরবঙ্গের শান্তিপূর্ণ এই এলাকায় জমি মাফিয়াদের রেষারেষিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে । সোমবার নবান্নে বিভিন্ন পুরসভাগুলিকে নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুলে আনেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকার এই জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যের বিষয়টিও। পুলিশ প্রশাসন এবং পুর নিগমের একাংশের পৃষ্ঠপোষকতাতেই যে এই জমি মাফিয়াদের বাড়-বাড়ন্ত, তা বুঝতে এতটুকু ভুল হয়নি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের। আর তাই এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর রোষের মুখে পড়লেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবও।

মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে গৌতম দেবও (ইটিভি ভারত)

প্রসঙ্গত, এই এলাকায় জমি মাফিয়াদের তাণ্ডবের অভিযোগ নতুন নয়। বিভিন্ন সময় সরকারি জমি দখলের পাশাপাশি নদীর চর পর্যন্ত দখলের অভিযোগ উঠেছে জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। মাফিয়াদের সঙ্গে যোগ রয়েছে শাসকদলের একাংশের, এমন অভিযোগও উঠে এসেছে একাধিকবার ৷ এমনকি জমি লুঠে পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ করলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী । এরপর গত মে মাসে রামকৃষ্ণ মিশনের জমি দখলকে কেন্দ্র করে গোটা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আসে ।

এদিন বৈঠক থেকেই এই জমি হাঙরদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সাফ কথা, "ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে একটা ল্যান্ড মাফিয়া গ্রুপ তৈরি হয়েছে ৷ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি ৷ সেখানে বিএলআরও এবং পুলিশের লোকও জড়িত আছে ৷ সব অ্য়াকশান হবে ৷ ওই ল্যান্ড মাফিয়া গ্রুপ সেখানে জমির পর জমি গ্রাস করে নিচ্ছে। আগেও এ বিষয়ে আমি সতর্ক করেছিলাম। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। টাকার বিনিময়ে জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের কেউ কেউ অনৈতিক এবং অবৈধ ভাবে জমি 'ভরানোর' কাজ করছেন। অনেকে আছেন এর মধ্যে। নাম বলে কাউকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাই না।"

এখানেই থেমে থাকেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ তিনি আরও বলেন, "সেবক রোড, কাউয়াখালী, ডাবগ্রাম, ফুলবাড়িতে যা হয়েছে তার জন্য গৌতম তুমি তোমার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারো না ৷" এরপরই পুলিশকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে ৷ ওই গ্রুপকে আমি ছাড়ব না ৷ সবাইকে গ্রেফতার করো ৷ এ ক্ষেত্রে কাউকে ক্ষমা করা হবে না । সমস্ত জমি উদ্ধার করা হবে। কেউ পাকা বাড়ি করে নিয়েছেন বলে ছাড় পেয়ে যাবেন, এমনটা ভাবার কারণ নেই। "

এবিষয়ে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী নিজে পুলিশমন্ত্রী। এসব হলে তাহলে তাঁরই সবার আগে পদত্যাগ করা উচিৎ। আমি একা ঠিক বাকি সবাই খারাপ, এখন এটা প্রমাণ করতে চাইছেন । কিন্তু আসল চোর তার পরিবারে রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ করছেন না তিনি। পৌরনিগমের পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। সাধারণ মানুষ তিতিবিরক্ত । সরকারি জমি দখল হচ্ছে। রামকৃষ্ণ মিশনের জমি দখল হয়েছে।" বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, "এই যে উত্তরবঙ্গ পাশাপাশি শিলিগুড়ি জুড়ে জমি মাফিয়া, বালি চুরি, নদী চুরি হচ্ছে, এসব কি মুখ্যমন্ত্রী জানেন না? সেটা হতেই পারে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসব ফ্র্যাঞ্চাইজি দিয়েছেন। তাঁর ব্র্যান্ড ব্যবহার করতে দিয়েছেন দলের লোকদের । যে কারণে এটা হয়েছে ।" যদিও এ বিষয়ে শিলিগুড়ি ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেই মতো কাজ হবে । আর কে কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না । বিজেপি যদি কিছু বলে থাকে, তার কোনও গুরুত্ব নেই । কারণ, সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি রয়েছে বিজেপির মধ্যেই ।"

শিলিগুড়ি, 24 জুন: ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে এক শ্রেণির জমি মাফিয়াদের দৌরাত্মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন সময় উত্তরবঙ্গের শান্তিপূর্ণ এই এলাকায় জমি মাফিয়াদের রেষারেষিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে । সোমবার নবান্নে বিভিন্ন পুরসভাগুলিকে নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুলে আনেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকার এই জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যের বিষয়টিও। পুলিশ প্রশাসন এবং পুর নিগমের একাংশের পৃষ্ঠপোষকতাতেই যে এই জমি মাফিয়াদের বাড়-বাড়ন্ত, তা বুঝতে এতটুকু ভুল হয়নি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের। আর তাই এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর রোষের মুখে পড়লেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবও।

মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে গৌতম দেবও (ইটিভি ভারত)

প্রসঙ্গত, এই এলাকায় জমি মাফিয়াদের তাণ্ডবের অভিযোগ নতুন নয়। বিভিন্ন সময় সরকারি জমি দখলের পাশাপাশি নদীর চর পর্যন্ত দখলের অভিযোগ উঠেছে জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। মাফিয়াদের সঙ্গে যোগ রয়েছে শাসকদলের একাংশের, এমন অভিযোগও উঠে এসেছে একাধিকবার ৷ এমনকি জমি লুঠে পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ করলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী । এরপর গত মে মাসে রামকৃষ্ণ মিশনের জমি দখলকে কেন্দ্র করে গোটা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আসে ।

এদিন বৈঠক থেকেই এই জমি হাঙরদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সাফ কথা, "ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে একটা ল্যান্ড মাফিয়া গ্রুপ তৈরি হয়েছে ৷ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি ৷ সেখানে বিএলআরও এবং পুলিশের লোকও জড়িত আছে ৷ সব অ্য়াকশান হবে ৷ ওই ল্যান্ড মাফিয়া গ্রুপ সেখানে জমির পর জমি গ্রাস করে নিচ্ছে। আগেও এ বিষয়ে আমি সতর্ক করেছিলাম। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। টাকার বিনিময়ে জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের কেউ কেউ অনৈতিক এবং অবৈধ ভাবে জমি 'ভরানোর' কাজ করছেন। অনেকে আছেন এর মধ্যে। নাম বলে কাউকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাই না।"

এখানেই থেমে থাকেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ তিনি আরও বলেন, "সেবক রোড, কাউয়াখালী, ডাবগ্রাম, ফুলবাড়িতে যা হয়েছে তার জন্য গৌতম তুমি তোমার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারো না ৷" এরপরই পুলিশকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে ৷ ওই গ্রুপকে আমি ছাড়ব না ৷ সবাইকে গ্রেফতার করো ৷ এ ক্ষেত্রে কাউকে ক্ষমা করা হবে না । সমস্ত জমি উদ্ধার করা হবে। কেউ পাকা বাড়ি করে নিয়েছেন বলে ছাড় পেয়ে যাবেন, এমনটা ভাবার কারণ নেই। "

এবিষয়ে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী নিজে পুলিশমন্ত্রী। এসব হলে তাহলে তাঁরই সবার আগে পদত্যাগ করা উচিৎ। আমি একা ঠিক বাকি সবাই খারাপ, এখন এটা প্রমাণ করতে চাইছেন । কিন্তু আসল চোর তার পরিবারে রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ করছেন না তিনি। পৌরনিগমের পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। সাধারণ মানুষ তিতিবিরক্ত । সরকারি জমি দখল হচ্ছে। রামকৃষ্ণ মিশনের জমি দখল হয়েছে।" বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, "এই যে উত্তরবঙ্গ পাশাপাশি শিলিগুড়ি জুড়ে জমি মাফিয়া, বালি চুরি, নদী চুরি হচ্ছে, এসব কি মুখ্যমন্ত্রী জানেন না? সেটা হতেই পারে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসব ফ্র্যাঞ্চাইজি দিয়েছেন। তাঁর ব্র্যান্ড ব্যবহার করতে দিয়েছেন দলের লোকদের । যে কারণে এটা হয়েছে ।" যদিও এ বিষয়ে শিলিগুড়ি ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেই মতো কাজ হবে । আর কে কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না । বিজেপি যদি কিছু বলে থাকে, তার কোনও গুরুত্ব নেই । কারণ, সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি রয়েছে বিজেপির মধ্যেই ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.