কলকাতা, 6 অক্টোবর: এসে গিয়েছে উৎসবের মরশুম ৷ এই অবস্থায় বাজি প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে শনিবার নবান্নে বৈঠক করলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। এদিন নবান্নে সবুজ বাজি প্রস্তুতকারক সংস্থাদের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলার জেলাশাসকও ৷ ছিলেন ডিজি রাজীব কুমার । উৎসবে যাতে শুধুই সবুজ বাজি বিক্রি হয়, তা নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়েছে নবান্ন ৷
প্রসঙ্গত, উৎসবের মরশুমে এই মুহূর্তে রাজ্য সরকার একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম চালু করেছে যাতে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র লাইসেন্সধারীরাই বাজি তৈরি করতে পারবে এবং বাজি বিক্রির ক্ষেত্রেও যাতে কোনওভাবেই সরকার অনুমোদিত সবুজ বাজি ছাড়া অন্য কোনও বাজি বিক্রি না-হয়, সে বিষয়ে নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে ।
এদিন এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আট অক্টোবরের মধ্যে বিক্রেতাদের সমস্ত লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হয়ে যাবে । আশা করা হচ্ছে, যত সংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে তার সমস্ত আবেদনই পুনর্নবীকরণ করা হবে । এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, গত বছরে যাঁদের এক বছরের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের আগামী পাঁচ বছরের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হবে । এবার থেকে রাস্তাঘাটে বাজি বিক্রি হোক, তা চাইছে না রাজ্য সরকার । আর সে কারণেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাঁরা রাস্তাঘাটে বাজি বিক্রি করতেন, তাঁদের মেলাতে গিয়েই বাজি বিক্রি করতে হবে ।
আর সেই লক্ষ্যে এবার মেলার সংখ্যাও বাড়ছে রাজ্যে । এতদিন পর্যন্ত রাজ্যে 52টি বাজির মেলা হত এই পুজোর সময় গুলিতেই । শহর, শহরতলি এবং জেলা মিলে এবার সেই মেলা বেড়ে হচ্ছে 72টি । মেলা সম্পন্ন হলে যে সমস্ত বাজি উদ্বৃত্ত থাকবে, সেগুলিও সংরক্ষণের জন্য জায়গা দেবে রাজ্য সরকার । ব্যবসায়ীরা টাকা দিয়ে গোডাউন করে সেখানে আতশবাজি জমা করে রাখতে পারবেন ।
আতশবাজি সংগঠনগুলির দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, যেহেতু গত কয়েক বছর ধরে ক্লাবগুলিকে বিদ্যুতের উপর ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তাই যে বাজির মেলা হবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, সেখানেও যাতে বিদ্যুতের মাশুলে ছাড় দেওয়া হয় তা সরকারকে পর্যালোচনা করে দেখার জন্য বলা হয়েছিল । যতদূর জানা যাচ্ছে, সরকারের তরফ থেকে বিষয়টি বিবেচনার জন্য মেনে নেওয়া হয়েছে ।
এদিন মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বাজি প্রস্তুতকারকদের দীর্ঘদিনের দাবি, সারা দেশে যখন শব্দের মাত্রা 125 ডেসিবেল রয়েছে, কেন রাজ্যে তা 90 ডেসিবেল করা হবে । এক্ষেত্রে এই বৈঠক থেকে বলা হয়েছে, প্রত্যেক জেলার জেলাশাসকেরা তাঁদের জেলাতে আতশবাজির একটি টেস্টিং সেন্টার করবেন । এক্ষেত্রে পরীক্ষা করে তাঁরা দেখবেন যে আতশবাজিগুলি 125 ডেসিবেলের নীচে থাকবে তাদের ছাড় দেওয়া হবে । এক্ষেত্রে সরকারের তরফ থেকে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে, বাজি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি যে বাজি তৈরি এবং বিক্রি করবেন তা যেন সবুজ তথা পরিবেশবান্ধব বাজিই হয় ।
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে রাজ্যে 232টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বাজি প্রস্তুতকারী সংস্থা রয়েছে । একইসঙ্গে, 2800 বিক্রেতা বাজি বিক্রির জন্য লাইসেন্স পেয়েছেন । মনে করা হচ্ছে, সর্বসাকুল্যে এবছর বাজি বিক্রির জন্য লাইসেন্স দেওয়া হতে পারে কুড়ি হাজারের মতো । গত বছর যে সংখ্যাটি ছিল 14 হাজারের কাছাকাছি ।