কলকাতা, 11 অক্টোবর: ত্রিধারা সম্মিলনীর সামনে 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' স্লোগান দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত 9 জনকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আলিপুর আদালত। শুক্রবার তাঁদের জামিনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি শম্পা সরকার এই নির্দেশ দিয়েছেন।
কী হল হাইকোর্টে?
বিচারপতি এদিন নির্দেশে জানিয়েছেন, ওঁদের পুলিশ হেফাজতে রাখার দরকার নেই। তাই অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হল হাইকোর্টের তরফে। 1 হাজার টাকা বন্ডে জামিন দিয়েছে আদালত। 15 নভেম্বর পর্যন্ত তাঁদের অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ বহাল থাকবে। তার মানে এই সময় পর্যন্ত এই 9 জনের কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। তবে 9 জনকে বেশ কিছু শর্তও মানতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
- ধৃতদের প্রতি সপ্তাহে থানায় হাজিরা দিতে হবে। রাজ্য সরকারের পুজো কার্নিভালে বিরক্ত করা যাবে না।
- ওই ধৃতরা আর কোনও পুজো মণ্ডপের 200 মিটারের মধ্যে প্রতিবাদ জানাতে পারবে না। পাশাপাশি অভিযুক্তদের অন্য কোনও পুজা মণ্ডপের সামনে গিয়ে স্লোগান দিতেও নিষেধ করেছেন বিচারপতি।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ- আশ্চর্যজনকভাবে, নিম্ন আদালতের নির্দেশনামা এখনও আপলোড হয়নি। উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান, কোনওভাবেই বিদ্বেষ ছড়ায় বলে আদালত মনে করে না। আদালত মনে করে, অভিযুক্তরা কোনওভাবেই এই স্লোগানের মধ্যে দিয়ে মানুষকে সমস্যায় ফেলার চেষ্টা করেনি। আদালতের আরও মনে হয় , 20-25 বছর বয়সি ছেলেরা যাঁরা এই স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁদের কোনও খারাপ অভিসন্ধি ছিল না। এই স্লোগান আরজি করের ঘটনার পর থেকে সবাই দিচ্ছেন। আদালতের কাছে এমন কোনও তথ্যপ্রমাণ নিয়ে যার জেরে ধৃতদের জেলে রাখা যায়।
শুনানিতে রাজ্য কী বলল ?
আদালতে রাজ্যের যুক্তি, অভিযুক্তদের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সেখানে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এগুলো উদ্দ্যেশ্যে প্রণোদিতভাবে করা। এর পিছনে পরিকল্পনা আছে। সকলের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। কিন্তু অন্যের অসুবিধা করে নয়। তবে এখানে সেটাই হচ্ছিল। তাঁদের আরও কোনও পরিকল্পনা ছিল কিনা তা তদন্ত করে খুঁজে বের করা প্রয়োজন। কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তদন্তের জন্য সময় চাই রাজ্য।
দু'পক্ষের আইনজীবীর মত-
অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "দু'টো জামিন যোগ্য ধারা আর দু'টো জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি হয়েছিল। অভিযুক্তরা শুধু উই ওয়ান্ট জাস্টিস বলে স্লোগান দিয়েছিলেন। তাও ত্রিধারার পুজো মণ্ডপ থেকে 1 কিলোমিটারের দূরে। কোনও পোস্টার বা লাঠি তাঁদের কাছে ছিল না। কোনও এফআইআর কপিও আপলোড করা হয়নি। সেদিন 7 টার পর পুলিশ তাঁদের টানতে টানতে লালবাজারে নিয়ে যায়। সরকারিভাবে গ্রেফতার হয় রাত 11টার পর। আমাদের এফআইআরের কপিও দেওয়া হয়নি
রাজ্যের আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত পাল্টা বলেন, "আমাদের কাছে ভিডিয়ো রয়েছে, ভিতরে স্লোগান দেওয়ার। বিচারপতি জানতে চান, নিম্ন আদালতে কি তাঁদের পেশ করা হয়েছিল? অভিযুক্তদের আইনজীবীরা জানান, হ্যাঁ হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাত 8.30টায় অর্ডার দিয়ে জামিন খারিজ করে নিম্ন আদালত। নিম্ন আদালতের নির্দেশের কপিও এখনও পাওয়া যায়নি। সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট ৷