কলকাতা, 18 জুন: স্কুল-কলেজ থেকে সরিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা রক্ষীদের কোথায় রাখা যেতে পারে, তা নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র দু’পক্ষের আইনজীবীর কাছেই মঙ্গলবার জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট । রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার কথা মাথায় রেখে বাড়ানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার সময়সীমা । 400 কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী আপাতত আগামী 21 জুন পর্যন্ত থাকবে রাজ্যে । খুব সম্ভবত এই সময়সীমা বাড়তে চলেছে বলেই মনে হচ্ছে । কেন্দ্রের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী এ দিন হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আরও বেশিদিন এই রাজ্যে বাহিনী রাখার ব্যাপারে আপত্তি নেই ।
গত 14 জুন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ স্কুল ও কলেজ থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরানো নিয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি । তবে রাজ্যকে কতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত, সেই সংখ্যা জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল ।
এ দিন রাজ্য আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানায়, 125টি স্কুল, কিছু কলেজ ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা রক্ষীরা এখনও রয়েছেন । তারপরই রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছে আদালত জানতে চেয়েছে, কোথায় এঁদের স্থানান্তর করে রাখা যায়, সেই ব্যাপারে 21 জুন জানাতে হবে । কেন্দ্রের তরফে প্রাথমিকভাবে ব্যারাকপুরের ব্যারাকে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ব্যারাকপুর থেকে গোটা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বাহিনীর লোকজনের যাতায়াত সম্ভব নয় ।
মামলাকারী কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে দাবি করেন, লোকসভা নির্বাচনের পরেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে । 10 জুন গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষ হয়ে গিয়েছে । তারপরও স্কুলে পঠনপাঠন শুরু করা যায়নি । প্রতিষ্ঠানগুলির ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে এতে । যেটা সংবিধানের 21 নম্বর অনুচ্ছেদের পরিপন্থী ।
কেন্দ্র জানিয়েছিল, 400 কোম্পানির মধ্যে 251 কোম্পানি ভিন্ন স্কুল-কলেজে আছে । রাজ্যে যেখানে থাকার ব্যবস্থা করবে, তারা সেখানে সরে যাবে । 21 জুন অবধি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার সময় বর্ধিত হয়েছে । কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় থাকবে, সেটা নির্ধারিত করে রাজ্য ।
তারপরই বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন জানতে চেয়েছিলেন, "মোট কত স্কুলে এই বাহিনী আছে ?" রাজ্য, কেন্দ্র বা আবেদনকারী কেউই সেই সংখ্যা আগের শুনানিতে জানাতে পারেনি । তারপর এ দিন ফের এই মামলার শুনানি হয় । সেখানেই আদালত জানতে চেয়েছে যে স্কুল-কলেজ থেকে সরিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় রাখা হবে ? তা কেন্দ্র ও রাজ্যকে জানতে চেয়েছে আদালত ৷