কলকাতা, 17 ডিসেম্বর: 20 ডিসেম্বর কুড়মিদের ডাকা আন্দোলনে জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ করা যাবে না ৷ বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ৷ আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ করলে রাজ্য সরকার উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ করতে পারবে বলে জানিয়েছে আদালত ৷
তবে, কুড়মি, মাঝি ও জাকাত-সহ আদিবাসীরা যাতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে পারে, তা রাজ্য সরকার দেখবে ৷ সেক্ষেত্রে প্রশাসন কঠোর হতে পারবে না-বলে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ ৷
তবে, বিষয়টি নিয়ে শুরুতে আপত্তি জানিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত ৷ তিনি সওয়াল করেন, কুড়মিদের দাবির বিষয়গুলি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ৷ তাই এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ৷ তবে, সেই আপত্তি খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি ৷
উল্লেখ্য, কুড়মি সমাজকে আদিবাসী তফসিলি উপজাতি বা এসটি-র অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে ৷ এর আগে যতবার কুড়মিদের আন্দোলন হয়েছে, প্রতিবার রেল ও জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়েছে ৷ এবারেও রেল রোকো ও জাতীয় সড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হয় ৷ 20 ডিসেম্বর থেকে কুড়মি সমাজ ফের অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনে নামছে ৷ তার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন এক ব্যক্তি ৷
শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী কটাক্ষ করে বলেন, "এটা এখন একটা বাৎসরিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়ে গিয়েছে ৷ রেল-রাস্তা আটকে আন্দোলন হয় ৷ আগেরবার এটা পুরুলিয়া আর মেদিনীপুরে ছিল ৷ এবারেও মেদিনীপুর ৷" এর সঙ্গে জাতীয় সড়ক অবরোধের সম্পর্ক কোথায়, সেটা নিয়েও বিস্ময়প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি৷ অ্যাডভোকেট জেনারেল জানিয়ে দেন, কুড়মিদের এই দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ৷ তাই রাজ্য সেই দাবি নিয়ে কিছু বলতে পারে না ৷
উল্লেখ্য, কুড়মি সমাজকে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত করা হলেও, তফসিলি উপজাতির তকমা দেওয়া হয়নি ৷ এরপর কুড়মিদের লাগাতার আন্দোলনের ফলস্বরূপ 2017 সালে কালচারাল রিসার্চ ইন্সটিটিউটকে দিয়ে সমীক্ষা করায় রাজ্য সরকার ৷ সমীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয় ৷ কিন্তু, তারপর বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায় বলে অভিযোগ ৷ আর তারপর থেকেই মুহূর্মুহু আন্দোলন ও রেল রোকো কর্মসূচির ডাক দিয়েছে কুড়মি সমাজ ৷