কলকাতা, 3 এপ্রিল: দাঁড়িভিট মামলায় এবার ডিভিশন বেঞ্চে ধাক্কা খেল রাজ্য । এই মামলায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ৷ তাঁর এই নির্দেশকেই বহাল রাখল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ । এনআইএ'কে তদন্তের সব নথি তুলে দেবে রাজ্য । একইসঙ্গে ক্ষতিপূরণের টাকা এক সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে ৷ এমনটাই বুধবার রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ।
উত্তর দিনাজপুরের দাঁড়িভিটে পুলিশের গুলিতে দুই যুবকের মৃত্যুর অভিযোগে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ 10 মাস পরেও কার্যকর হয়নি সেই নির্দেশ । সিআইডি এতদিন পরেও এনআইয়ের হাতে তদন্ত সংক্রান্ত নথি না দেওয়ায় আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা । রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও ডিআইজি এবং সিআইডি-র বিরুদ্ধে রুল জারি হয় । গত বছরের মে মাসেই এই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি মান্থা । কিন্তু এখনও সেই নির্দেশ পালন না করায় রুল ইস্যু হয় ।
সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে রাজ্য । সেই আপিলে প্রধান বিচারপতির নির্দেশ দিয়েছেন, রুল ইস্যুতে কোনও স্থগিতাদেশ নয় । বরং 15 মে সিঙ্গেল বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল তা পালনের রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে । যেহেতু সিডিউল অফেন্স আছে, সেই ক্ষেত্রে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ কার্যকর করতে হবে । কন্টেম্পট রুলেও স্টে দেওয়া যাবে না । প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, রুলে স্থগিতাদেশ দেওয়া যাবে কি না, সেটা বিবেচনা করবে সিঙ্গল বেঞ্চ ।
এ দিন রাজ্য বলে, "সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের উপর নির্ভর করেছে । যেখানে, এনএইচআরসি'র রিপোর্টে ভরসা করার কোন জায়গা নেই । ওই রিপোর্ট দেখে সিঙ্গল বেঞ্চ এনআইএ'কে তদন্তভার দিয়ে দিল । মামলায় প্রাথমিকভাবে সিবিআই তদন্তের আবেদন জানানো হয়েছিল । যদিও ন্যাশানাল হিউম্যান রাইটস কমিশনের এক্তিয়ারই না থাকে তবে রিপোর্টের কোন গ্রহণযোগ্যতা থাকতে পারে না ।"
এনআইএ'র তরফে বলা হয়, "সমস্ত নথি চেয়েছিলাম । রাজ্য সেটা দেয়নি । শুধু তাই নয়, রাজ্য আগে কেন স্থগিতাদেশ চেয়ে এল না? মামলাকারী পরিবারের আইনজীবী বলেন, "আদালতের নির্দেশ ছিল ক্ষতিপূরণ দেওয়ার । সেটাও দেওয়া হয়নি । স্থানীয় সাংসদ ও এসপিদেরকে এনএইচআরসি অভিযুক্ত বলেছিল নিজেদের রিপোর্টে।" রাজ্যের তরফে আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় বলেন, "ইতিমধ্যেই এই মামালয় চার্জশিট ফাইল হয়ে গিয়েছে ।" মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, "হ্যাঁ চার্জশিট ফাইল হয়েছে । তবে সেটা নির্দোষ গ্রামবাসীদের নামে ।"
উল্লেখ্য, 2018 সালের 20 সেপ্টেম্বর বাংলা বিষয়ের শিক্ষকের দাবিতে বিক্ষোভ হয় উত্তর দিনাজপুরের দাঁড়িভিটে । উর্দু নয়, বাংলা বিষয়ক শিক্ষক চাই, এই দাবিতে বিক্ষোভ ও আন্দোলন চলে । তারই মাঝে দাঁড়িভিট স্কুলের সামনে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে । দু'জনের গুলিতে প্রাণ যায় । সেই মামলায় 2023 সালের মে মাসে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট ।
আরও পড়ুন: