বসিরহাট, 14 মে: মহিলাকে জোর করে সাদা কাগজে সই করিয়ে তাতে ধর্ষণের 'মিথ্যা' অভিযোগ দায়ের করায় তাঁকে সন্দেশখালি থানায় গিয়ে হাজিরা দিতে বলেছিল পুলিশ। পুলিশের বেঁধে দেওয়া তিনদিনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও থানায় হাজিরা দিতে যাননি রেখা পাত্রের ছায়াসঙ্গী বিজেপি নেত্রী পিয়ালী দাস ওরফে মাম্পি। অবশেষে সেই ঘটনায় মঙ্গলবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন ওই মহিলা বিজেপি নেত্রী।এরপরই তাঁকে সাতদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আগামী 22 মে পুনরায় মাম্পিকে আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
দিন কয়েক আগে এক মহিলাকে সাদা কাগজে সই করিয়ে ধর্ষণের 'মিথ্যা' অভিযোগ দায়ের করার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি নেত্রী পিয়ালী দাস ওরফে মাম্পির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ওই মহিলা জনসমক্ষে মুখ খুলতেই তাঁকে বাড়িতে গিয়ে 'হুমকি' দিয়েছিলেন অভিযুক্ত বিজেপি নেত্রী। এমনই অভিযোগ তুলে মাম্পির বিরুদ্ধে সন্দেশখালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন পাত্রপাড়ার বাসিন্দা ওই মহিলা। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজেপি নেত্রী পিয়ালী দাসের বাড়িতে গিয়ে তলবের নোটিশ সাঁটিয়ে দিয়ে আসে পুলিশ। সেই নোটিশে বলা হয়েছিল, তিনদিনের মধ্যে তাঁকে হাজিরা দিতে হবে সন্দেশখালি থানায়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তিনি আর থানা-মুখো হননি। এরপরই গ্রেফতারির আশঙ্কায় এদিন বসিরহাট মহকুমা আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন মাম্পি। মাম্পির আরও এক পরিচয় তিনি সন্দেশখালি আন্দোলনের অন্যতম মুখ। স্বভাবতই তিনি আত্মসমর্পণ করায় সরগরম হয়ে উঠেছে সন্দেশখালির রাজনীতি। যদিও, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বরাবর তিনি অস্বীকার করে এসেছেন। এদিন অবশ্য মাম্পির কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এ দিকে, বিজেপি নেত্রী আত্মসমর্পণ নিয়ে মুখ খুলেছেন সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো। তিনি বলেন, "আইনের চোখে সবাই সমান।অপরাধ করলে তাঁকে সাজা পেতে হবে। আমরা দেখেছি, ভিডিয়ো-কাণ্ডে গঙ্গাধর কয়ালকে কীভাবে ধর্ষণের 'মিথ্যা' অভিযোগ করা নিয়ে বলতে।মাম্পির বিরুদ্ধেও বলতে শোনা গিয়েছে মহিলাদের। নিশ্চয়ই এর সত্যতা আছে বলেই মহিলারা অভিযোগ করতে শুরু করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে।সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপি যে চক্রান্ত করেছে, তা আজকে পরিষ্কার। ওদের উদ্দেশ্য ছিল তৃণমূলকে বদনাম করে। কিন্তু, সন্দেশখালির মানুষ তা বুঝে গিয়েছে।"
অন্যদিকে, সোমবার সন্দেশখালির রামপুর বাগদীপাড়া বাজারে শুভেন্দু অধিকারীর পোস্টার ছেঁড়া নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ধৃত সুশান্ত মণ্ডল এবং জুলফিকার মোল্লাকে মঙ্গলবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, এদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি গুলি-ভরা আগ্নেয়াস্ত্র।
আরও পড়ুন: