মেদিনীপুর, 21 ফেব্রুয়ারি: মেদিনীপুরের দুই শিশুকন্যাকে দত্তক নিলেন বেলজিয়ামের এক দম্পতি ৷ বিদেশে পাড়ি দিতে চলেছে জেলার আরও দুই অনাথ শিশু ৷ এই নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বিদেশে পাড়ি দেওয়া শিশুর সংখ্যা দাঁড়াল 45 ৷
পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বালিকা হোমে বড় হচ্ছে বেশ কয়েকটি অনাথ শিশু । তাদের মধ্যে থেকে দুই শিশুকন্যার দায়িত্বভার নিতে চলছে বেলজিয়ামের দম্পতি । ভারতীয় বংশোদ্ভূত আদিল মাসুদ ও তাঁর স্ত্রী রেহিলা বানু বেলজিয়ামের ব্রাসেলসের বাসিন্দা ৷ পেশায় কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির কর্মী এই দম্পতি । দশ বছরের বিবাহিত জীবন তাঁদের ৷
বিয়ের এত বছর পরও কোনও বাচ্চা না হওয়ায় অবশেষে দত্তক নেওয়ার পথে হাঁটেন তাঁরা ৷ সেই মতো দম্পতি অনলাইনের মাধ্যমে রাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বালিকা হোমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন । এরপর বিদ্যাসাগর হোমের দুই শিশুকন্যাকে দত্তক নিয়ে যাবতীয় নিয়ম কানুন সম্পূর্ণ করেন তাঁরা ৷ ইতিমধ্যে কাগজপত্র সব প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে ৷
এ দিন জেলাশাসকের পুরনো বিল্ডিংয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক কেম্পাহোন্নায়ার হাত ধরে এই দুই শিশু পেল তাদের নতুন মা-বাবাকে । এই দুই শিশু গত দেড় বছর ধরে বিদ্যাসাগর বালিকা হোমে বড় হচ্ছিল । এ দিন এই ছোট্ট অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন অতিরিক্ত জেলাশাসক, বেলজিয়ামের দম্পতি এবং বিদ্যাসাগর বালিকা হোম কর্তৃপক্ষ ।
এ দিন আদিল মাসুদ বলেন, "বিয়ের 10 বছর পেরোলেও আমাদের কোনও বাচ্চা নেই । তাই আমরা দত্তক নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করি । বেলজিয়ামে বাচ্চা নিতে গেলে নানারকম ঝামেলা রয়েছে ৷ তাই আমরা ভারত থেকেই বাচ্চা দত্তক নেওয়ার আবেদন করেছিলাম অনলাইনের মাধ্যমে । যেহেতু একটা বাচ্চা দত্তক নিয়ে তাকে বড় করতে সমস্যা হতে পারে ৷ তাই দুই বোনকে একসঙ্গে আমরা দত্তক নিলাম । ওরা ভবিষ্যতে যা হতে চায় তাই হবে ৷ সর্বদা আমরা পাশে থেকে সাহায্য করার চেষ্টা করব তাদের ।"
অতিরিক্ত জেলাশাসক কেম্পাহোন্নায়া বলেন, "দত্তক নেওয়ার একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে ৷ সেই পদ্ধতি মেনে এই দুই শিশু বেলজিয়াম যাচ্ছে । এই নিয়ে জেলার 45টি শিশু বিদেশে গেল । বিদ্যাসাগর হোমে এখনও ছ'টি শিশু রয়েছে যারা বাইরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে । আমরা ওই বাবা-মা হারা শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি ।"
আরও পড়ুন: