বর্ধমান, 3 অক্টোবর: প্রাচীন রীতি মেনে প্রতিপদ তিথিতে ঘট স্থাপন করা হল বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ৷ এদিন থেকেই রাঢ়বঙ্গে দুর্গোৎসবের সূচনা হয়ে গেল ৷ আজ, বৃহস্পতিবার প্রতিপদে বর্ধমান মহারাজার খনন করা শ্যামসায়রের ঘাট থেকে ঘট আনা হয় ৷ ঘোড়ার গাড়িতে চাপিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় পা মেলালেন হাজার হাজার মানুষ ৷
বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সর্বমঙ্গলা ৷ রাজা তেজচন্দ্রের আমলে সর্বমঙ্গলা মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয় ৷ রাজ আমলের প্রাচীন রীতি মেনে মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদে রুপোর ঘটে করে জল আনা হয় ৷ মন্দিরে সেই ঘট স্থাপন করা হয় ৷ প্রতিপদ তিথি থেকে নবমী পর্যন্ত চলে মন্দিরে পুজো ৷ নবমীর দিনে ন'জন কুমারীকে পুজো করা হয় ৷
এদিন সকালে ঢাক, বাজনার তালে তালে ঘোড়ার গাড়িতে করে শ্যামসায়রের ঘাট থেকে জল আনতে যায় মন্দিরের পুরোহিতরা ৷ প্রশাসনিক আধিকারিক-সহ হাজার হাজার সাধারণ মানুষ এদিনের শোভাযাত্রায় পা মেলান ৷ শ্যামসায়রের ঘাট থেকে জল নেওয়ার পরে সেই জল রুপোর ঘটে করে মন্দিরে এসে স্থাপন করে পুজো শুরু করা হয় ৷
সর্বমঙ্গলা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত অরুন ভট্টাচার্য বলেন, " বুধবার রাত 11টা 10 মিনিটের পরে পিতৃপক্ষের অবসান ঘটেছে ৷ সূচনা হয়েছে দেবীপক্ষের ৷ নিয়ম মেনে দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথিতে শারদীয়া দুর্গোৎসবের শুভ সূচনা হয় ৷ নবররাত্রির পুজো শুরু হয় ৷ আজ প্রতিপদে বর্ধমান মহারাজার শ্যামসায়রের ঘাট থেকে ঘট এনে পুজোর সূচনা করা হয় ৷ পূর্ব বর্ধমান জেলায় এদিন পুজো শুরু হয়ে যায় ৷ সর্বমঙ্গলা মন্দির অবিভক্ত বাংলায় প্রথম নবরত্ন মন্দির ৷ মন্দিরের ন'টি চূড়া আছে ৷ প্রাচীন রীতি আজ প্রতিপদ থেকে মহানবমী পর্যন্ত চলবে পুজো ৷ মহানবমীতে ন'জন কুমারীর পুজো করা হয় ৷ পুজো শেষে ভক্তদের প্রসাদ দেওয়া হয় ৷ প্রতিদিন চলবে পুজো ৷ চলবে চণ্ডীপাঠ ৷"
দর্শনার্থী সমাপ্তিকা মণ্ডল বলেন, "আমি প্রায় 12 বছর ধরে এই অনুষ্ঠান দেখতে আসি ৷ বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সর্বমঙ্গলা ৷ আজ বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ঘট উত্তোলন করা হয় ৷ শুরু হয় নবরাত্রির পুজো ৷ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে শ্যামসায়র ঘাট থেকে সেই ঘট আনা হয় ৷ সকাল সকাল মন্দিরে হাজির হয়ে যাই ৷ এখানে এসে এক অসাধারণ অনুভূতি লাভ করি ৷"