হাওড়া, 21 মে: বিজেপি করার অপরাধে ভোট পর্ব মিটতেই রাতের অন্ধকারে নেশায় মত্ত হয়ে বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটল হাওড়াতে। সোমবার রাতে হাওড়ার শিবপুর বিধানসভা এলাকার 34 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে চড়াও হয় তৃণমূলের কর্মীরা। ওই এলাকার চার নম্বর মন্ডলের বুথ সভাপতি ও যুব মোর্চার সহসভাপতি শুভজিৎ ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। তাঁর অনুপস্থিতিতে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বাড়িতে ওই বিজেপি নেতা নেই জেনে মোবাইলে একাধিকবার কল করে তাঁকে শাসানি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
বাড়ির দরজায় লাথি মেরে বিজেপি নেতার বাবা ও মাকেও হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে ওই তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনার কথা জানতে পেরে মঙ্গলবার সকালে ওই কর্মীর বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তী। শুভজিতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে, তাদের আশ্বস্তও করেন। ঘটনায় পরিবার-সহ ওই বিজেপি কর্মীর নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিজেপি প্রার্থী। পাশাপাশি দল তাদের পাশে আছে বলেও আশ্বস্ত করেন। ঘটনা প্রসঙ্গে ওই কর্মীর মা সাগরিকা চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করে বলেন, "আমার ছেলে 2024 সাল থেকে বিজেপি করে ৷ এটাই তাঁর অন্যায়। কাল রাতে তৃণমূল কর্মীরা এসে ছেলেকে মারধর করার চেষ্টা করে। সে বাড়ি নেই জানতে পেরে আমার উপরেই তারা অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলে। আমরা থানাতে অভিযোগ করেছি।"
অপরদিকে বিজেপি কর্মী শুভজিৎ জানান, গতকাল রাতে ওই তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে না পেয়ে তাঁর বয়স্ক বাবা-মাকে হেনস্থা করে। দরজায় লাথি মারে। থানায় এফআইআর করতে চাইলেও এখনও এফআইআর নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সকালে রথীন চক্রবর্তী এসেছিলেন, দেখা করে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সবরকমের ব্যবস্থা নেওয়া হবে আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে একই চিত্র ভোট পরবর্তী হিংসার। হাওড়ার জগদীশ পুরে বিজেপি নেতা গোবিন্দ হাজরার বাড়িতে হামলা চালায় তৃণমুল কর্মীরা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ তার বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সমস্ত ঘটনা বাড়ির সিসিটিভিতে ধরা পড়ে। আক্রান্ত গোবিন্দ হাজরা শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহসভাপতি পদে রয়েছেন। তিনি জানান, ভোট মিটতেই গতরাত থেকে তৃণমূল মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা বিজেপি কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে তাঁর বাড়ি ও সিসিটিভি ভাঙচুর করা হয়। অন্য বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হাওড়াতে এখনও নির্বাচন কমিশনের আওতায় থাকলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেও অভিযোগ। যদিও হাওড়া সদরের তৃণমূল সভাপতি কল্যাণ ঘোষ বলেন, "এটা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এতে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করছে।"
আরও পড়ুন