দুর্গাপুর, 10 ফেব্রুয়ারি: চাকরির লোভে ছেলের হাতে বাবা খুনের ঘটনায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। শনিবার ধৃতকে নিয়ে খুনের পুনর্নির্মাণ করেন উখরা ফাঁড়ির তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা। বাবার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইসিএলে চাকরির মেয়াদ ছিল মাত্র 1 মাস। বাবাকে খুন করতে পারলেই মিলবে কয়লাখনির মোটা মাইনের চাকরি। সেই ভাবনা থেকেই ছেলে বাবাকে খুনের পরিকল্পনা করে বলে তদন্তকারীদের অনুমান ৷
কী ঘটেছিল: চলতি বছরের 21 জানুয়ারি অন্ডাল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে ৷ সেখানেই উল্লেখ করা হয় এতয়ারী মিঞা নিখোঁজ (51) ৷ পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ ৷ তদন্তে নেমে 23 জানুয়ারি বাঁকোলা সুভাষ কলোনির জঙ্গল থেকে একটি ক্ষত-বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় ৷ পরিবারে সদস্যরা জানান, সেটি নিখোঁজ এতয়ারী মিঞার দেহ ৷ ময়না তদন্তের পর জানা যায় ওই ব্যক্তি খুন হয়েছেন ৷ তদন্তের স্বার্থে পরিবারে সদস্যদের জেরা শুরু করে পুলিশ ৷
ছেলের আবদুল হাকিমের কথায় একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে ৷ তাকে প্রথমে আটক করে পড়ে গ্রেফতার করা হয় ৷ আদলতে পেশ করা হলে 7 দিনের পুলিশ হেফাজতও হয় ৷ পুলিশের জেরায় উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চঞ্চনী কোলিয়ারির কর্মী এতয়ারী মিঞার আর 1মাস চাকরি ছিল। বাবার মৃত্যু হলে সেই চাকরি ছেলে পেতে পারে ৷ তাই বাবাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে 'গুণধর' ছেলে ৷ 21 তারিখ এতয়ারী মিঞা যখন এলাকায় বসেছিলেন, তখন ছেলে আব্দুল হাকিম তাঁর টোটোতে বাবাকে চাপতে বলে। মুদিখানার দোকানে তাঁকে নিয়ে যাবে বলেও জানায় অভিযুক্ত। তারপর সেই টোটোতে চাপিয়ে বাবাকে নিয়ে যায় বাঁকোলা সুভাষ কলোনির বালি ব্যাংকার জঙ্গলের দিকে।
এরমধ্যে রাস্তায় টোটো থামিয়ে একটি দড়ি কুড়িয়ে গাড়িতে রাখে। বাঁকোলা সুভাষ কলোনির জঙ্গলে টোটো থামায়। পুলিশের অনুমান, বাবা এতয়ারী মিঞার গলায় থাকা একটি গামছা নিয়ে প্যাঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে 'খুন' করে ছেলে। তারপর রাস্তায় কুঁড়িয়ে পাওয়া দড়ি দিয়ে হাত, পা আর গলায় বেঁধে জঙ্গলের ধারে ফেলে দেয় । দেহ যাতে চিনতে পারা না যায় তার জন্য মুখ পাথর দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়। দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে গামছা, দড়ি আর পাথরও।
আরও পড়ুন: