কলকাতা, 8 অগস্ট: লাহা কলোনি মাঠের সংস্কার থেকে সুতনুটি পরিষদ তৈরি করা হোক অথবা বীরেন্দ্র মঞ্চকে নবরূপে সাজানো -পুরোনো পাড়া শ্যামপুকুরের প্রতি তাঁর ছিল নাড়ির টান ৷ এমনটাই জানালেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর পারিবারিক বন্ধু করুণা সেনগুপ্ত ৷ বুদ্ধদেবের প্রয়াণের খবর দেখে কার্যত পুরোনো দিনে ফিরলেন একদা কলকাতার ডেপুটি মেয়র পূর্ণেন্দু সেনগুপ্তর স্ত্রী করুণা । তিনিও দীর্ঘদিন কাউন্সিলর ছিলেন ।
তিনি বলেন, "বুদ্ধবাবুকে হারানো এক বড় ক্ষতি। পারিবারিক বন্ধুকে হারালাম বলা যায়। তাঁর জ্যাঠামশাই রাখল ভট্টাচার্যের বন্ধু ছিলেন পূর্ণেন্দু সেনগুপ্ত। আর ভাসুর ছিলেন আমাদের পারিবারিক চিকিৎসক। বহু বার নানা অনুষ্ঠানে রামধন মিত্র লেনের বাড়িতে যাতায়াত লেগেই থাকত আমাদের। তাছাড়া মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা হতো বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে।"
রাজনীতির আঙিনায় এসে মন্ত্রী হওয়ার পর করুণাদের বাড়িতে আসা কমেছিল। কালের নিয়মে তা আরও কমে। তবে পুরোনো ভিটে আর পুরোনো পাড়ার প্রতি তাঁর নাড়ির টান ছিল। অল্প বয়সে খেলেছেন লাহা কলোনির মাঠে। সেই মাঠ ধীরে ধীরে দখল হতে বসেছিল একটা সময় ৷ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর উদ্যোগেই সেটা দখল মুক্ত করে চারদিক ঘিরে রক্ষা করা হয়েছিল।
আলো লাগিয়ে রেলিং দিয়ে ঘরে অধিগ্রহণ করা হয়। নাম দেওয়া হয়েছিল সুকান্ত ভট্টাচার্যের নামে । ঠিক তার উলটোদিকে একটি জায়গায় সুসজ্জিত উদ্যান তৈরি করে নাম দেওয়া হয় পূর্ণেন্দুর নামে। অন্যদিকে, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের নামাঙ্কিত প্রেক্ষাগৃহটি ভগ্নদশা অবস্থায় ছিল ৷ প্রায় বন্ধই হয়ে যায়। তার সংস্কার করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আধুনিক রুপ দেওয়া হয় সেই প্রেক্ষাগৃহের। অন্যদিকে, সুতানুটি পরিষদের প্রেক্ষাগৃহ সংস্কার করেন। তাঁর এই পাড়ার প্রতি এই এলাকার প্রতি চিরকালই নিঃশর্ত ভালোবাসা ছিল। সম্প্রতি প্রয়াত হন দিদি মালবিকা ভট্টাচার্য। তারপরই বৃহস্পতিবার তাঁর প্রয়াণ হল।
নাটক থেকে শুরু করে বই পড়া এবং রবীন্দ্র সাহিত্যের প্রতি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আকর্ষণের শুরুটা কীভাবে তাও জানালেন করুণা ৷ তিনি বলেন, "কলকাতার প্রাক্তন মেয়র কমল বসুর স্ত্রী শান্তা বসুর কাছে তিনি বহুবার গিয়েছেন রবীন্দ্রচর্চার টানে। ঘরোয়া আড্ডায় মেনেও নিতেন রবীন্দ্র সাহিত্যের প্রতি এই অমোঘ আকর্ষণ তৈরির নেপথ্য শান্তা বসুর ভূমিকা ছিল ৷"