বারুইপুর, 9 ডিসেম্বর: রাজ্যে আরও এক শিশু আক্রান্ত বিরল স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি রোগে ৷ যার চিকিৎসার খরচ হাজার বা লাখে নয় ৷ প্রায় 16-18 কোটি টাকা খরচ করলে সম্ভব এই বিরল রোগের চিকিৎসা ৷ দক্ষিণ 24 পরগনার বারুইপুর থানার শংকরপুরের গাজিরহাট সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি ওই শিশুপুত্রের ৷ এই রোগে 2 বছর 8 মাস বয়সি শিশুর হাঁটা তো দূর, বসতেও পারে না ৷
স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি অর্থাৎ, মেরুদণ্ডের বিরল এই রোগ নিরাময় সম্ভব একটি উপায়ে ৷ এর জন্য প্রয়োজন একটি ইনজেকশন ৷ যা এদেশে নয়, পাওয়া যায় সুদূর আমেরিকাতেও ৷ আর সেই ওষুধের দাম প্রায় 16-18 কোটি টাকা ৷ এই বিপুল পরিমাণ টাকা জোগাড় করা কোনওমতেই সম্ভব নয় বছর আড়াইয়ের শিশুর বাবা-মায়ের পক্ষে ৷
বারুইপুরের শংকরপুর গাজিরহাটের বাসিন্দা দম্পতির পুত্রসন্তান হয় 2022 সালে ৷ বাকি শিশুদের মতোই বড় হচ্ছিল সে ৷ কিন্তু, নির্দিষ্ট সময়ের পরেও হামাগুড়ি দেওয়া বা বসতে শেখা, সেই স্বাভাবিক শারীরিক বৃদ্ধি হচ্ছিল না তার ৷ 9 মাস বয়সে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেই চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, দ্রুত বসতে শিখে যাবে ৷
কিন্তু, বেশ কয়েক মাসে কোনও পরিবর্তন না-হওয়ায়, সন্তানকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা ৷ সেখানেই চিকিৎসকরা জানান শিশুটি মেরুদণ্ডের বিরল স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি টাইপ-2 তে আক্রান্ত ৷ কলকাতায় কিছুদিন চিকিৎসার পর বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে ৷ সেখানকার চিকিৎসকই দম্পতিকে জানান, ওই বিপুল পরিমাণ দামের ইনজেকশনের কথা ৷
চিকিৎসকদের মতে, স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি বা এসএমএ একটি জেনেটিক ডিসঅর্ডার ৷ যা মেরুদণ্ডের মোটর নিউরনকে প্রভাবিত করে ৷ যার ফলে পেশির অবক্ষয় এবং দুর্বলতা দেখা দেয় ৷ এই রোগের লক্ষণ সাধারণত 6-18 মাস বয়স থেকে বোঝা যায় ৷
শিশুটির মা জানান, "আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয় ৷ ডাক্তার বলেছেন, প্রায় 16 কোটি টাকা খরচ হবে ৷ আমি চাই আমার ছেলেও বাকিদের মতো চলা ফেরা করুক ৷ খেলুক, দৌড়ক, স্বাভাবিকভাবে বড় হোক ৷ এর জন্য অনেক টাকা লাগবে ৷ কেউ সাহায্য করলেই, তা সম্ভব ৷"
উল্লেখ্য, এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফির চিকিৎসা হয়েছিল ৷ সেবার বিনামূল্যে একটি সংস্থার মাধ্যমে ওই হাসপাতাল প্রায় 17.50 কোটি টাকা মূল্যের ওই ওষুধ 16 মাসের শিশুর শরীরে ইনজেক্ট করানো হয়েছিল ৷ যদিও, সেই সংস্থার সঙ্গে 31 জুলাই বেসরকারি হাসপাতালের চুক্তি শেষ হয়ে যায় ৷