অমরাবতী, 27 ফেব্রুয়ারি: মধ্যপ্রদেশের কাছে রুদ্ধশ্বাস কোয়ার্টার ফাইনাল হেরে রঞ্জি ট্রফি থেকে ছিটকে গিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ ৷ তারপরই রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার বিরুদ্ধে বোমা ফাটালেন হনুমা বিহারী ৷ অন্ধ্রপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার আচরণে অপমানিত হনুমা ক্ষোভের সঙ্গেই জানিয়ে দিলেন আর কখনও খেলবেন না অন্ধ্রপ্রদেশের হয়ে। সেইসঙ্গে তিনি এও জানালেন, অন্ধ্রের হয়ে খেলতে গিয়ে তাঁর আত্মসম্মান বলে আর কিছু অবশিষ্ট নেই! তার কারণও উল্লেখ করলেন ক্রিকেটার ৷ জানালেন তিনি রাজনীতির শিকার ৷
ঘটনাটা ঠিক কী?
মধ্যপ্রদেশের কাছে 4 রানে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে সোমবার রঞ্জি ট্রফি অভিযান শেষ হয় অন্ধ্রের। তিনি চলতি রঞ্জি ট্রফিতে দলের অধিনায়ক থাকলেও হঠাৎই দ্বিতীয় ম্যাচে হনুমা খেলেন সাধারণ ক্রিকেটার হিসেবে। শোনা যায়, বাংলার বিরুদ্ধে ম্যাচ চলাকালীন স্কোয়াডে থাকা এক ক্রিকেটারের উপর নাকি গলা চড়িয়েছিলেন হনুমা। যে ক্রিকেটারের বাবা আবার প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। হনুমার বিরুদ্ধে সেই ক্রিকেটার নাকি নালিশ করেন বাবার কাছে। যারপর সেই নেতা সোজা ফোন করেন অন্ধ্রপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্তাদের। হনুমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এরপরই অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় হনুমাকে। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটল এদিন।
বিহারী নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লেখেন, "(মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে) আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়েছি। যদিও তা যথেষ্ট ছিল না। অন্ধ্রর হয়ে আরও একটি কোয়ার্টার ফাইনাল হেরে ব্যথিত। তবে কিছু বিষয় জানানোর উদ্দেশ্যেই এই পোস্ট। বাংলার বিরুদ্ধে রঞ্জির প্রথম ম্যাচে আমি ক্যাপ্টেন ছিলাম। প্রথম ম্য়াচ চলাকালীন আমি দলের 17 নম্বর ক্রিকেটারকে বকাঝকা করেছিলাম। সে তাঁর বাবাকে গিয়ে অভিযোগ করে। তার বাবা একজন রাজনীতিবিদ। সেই ক্রিকেটারের বাবা অ্যাসোসিয়েশনকে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলে।"
এরপর হনুমার সংযোজন, "আমরা গত বছরের ফাইনালিস্ট বাংলার বিরুদ্ধে 410 রান তাড়া করেছিলাম। কোনও দোষ ছাড়াই আমাকে অধিনায়কত্ব থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছিল। আমি কখনোই কোনও ক্রিকেটারকে ব্যক্তিগতভাবে কিছু বলিনি। কিন্তু সাত বছর ধরে অন্ধ্রপ্রদেশ রঞ্জি দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পর একজন ক্রিকেটার তাঁর চেয়ে বড় গেল, যে কি না পাঁচটি মরশুমে দলকে রঞ্জির নক-আউটে পৌঁছে দিয়েছে এবং দেশের হয়ে 16টি টেস্ট খেলেছে ৷ সমস্ত ঘটনায় আমি অত্য়ন্ত বিব্রত বোধ করছি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমি কখনোই আর অন্ধ্রের হয়ে খেলব না। কারণ সেখানে আমি আত্মসম্মান হারিয়েছি। আমি দলকে ভালোবাসি।"
হনুমার বিস্ফোরণের পরই তাঁর বর্ণিত সেই 'প্লেয়ার' অর্থাৎ কেএন প্রুধবি রাজ পালটা দেন। লেখেন, "আমিই সেই ক্রিকেটার, যাকে আপনারা সবাই কমেন্ট বক্সে খুঁজছেন। আপনারা যা যা শুনলেন, পুরোটাই মিথ্যে। আমার কাছেও আত্মসম্মান বড়।" ফের এর পালটা দেন বিহারীবাবু। নিজের লেখা একটা ছবি পোস্ট করেন। যার নীচে দলের সমস্ত ক্রিকেটারদের সই করা। সঙ্গে লেখেন, "কী ঘটেছে সেদিন, পুরো টিম জানে।" সবমিলিয়ে সরগরম অন্ধ্র ক্রিকেট।
আরও পড়ুন: