নয়াদিল্লি, 21 জুন: ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন বনাম বিদায়ী কোচ ইগর স্টিম্য়াচের বিচ্ছেদ পর্বের আগুনে ক্ষতবিক্ষত নয়দিল্লির দ্বারকা ভবন। প্রাক বিশ্বকাপের তৃতীয় রাউন্ডে উঠতে না-পারার দায় নিয়ে ভারতীয় ফুটবল দলের কোচের পদ থেকে ইগর স্টিম্য়াচকে সরিয়েছে ফেডারেশন। চাকরি যাওয়ার পর স্টিম্য়াচ এক্সে জানান তিনি সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় ফুটবলের ব্যাপারে মুখ খুলবেন ৷ আজ, শুক্রবার একটি ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে স্টিম্যাচ এআইএফএফ-সহ কল্যাণ চৌবেকে নিয়ে একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন ৷
পদচ্যুত হয়ে স্টিম্যাচ চুক্তির টাকা না-পেলে মামলার হুমকি দিয়েছিলেন। তখন থেকেই তিনি যে ফেডারেশন কর্তাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করবেন তার ইঙ্গিত ছিল। শুক্রবার ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্স করে ক্ষোভ উগরে দেন। পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতায় গুরপ্রীত সিং, মনবীর সিং, মহেশ নাওরেমদের কাছ থেকে দেখেছেন। সেই নিরিখে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। প্রাক বিশ্বকাপের তৃতীয় পর্বে পৌঁছতে না-পারার ধাক্কায় বিশ্বক্রমপর্যায়ে নেমে গিয়েছে ভারত।
সাংবাদিক সম্মেলন এই অধঃপতন নিয়ে বলতে গিয়ে স্টিম্যাচ বলেন, "কিংস কাপ, মারডেকা কাপ এবং বিশ্বকাপ যোগ্যতা অর্জনপর্বে আমাদের সঙ্গে চুরি না-হলে আমরা ফিফা ব়্যাঙ্কিংইয়ে প্রথম 100-তে থাকতাম।" ভারতের জাতীয় দলকে প্রস্তত করার সময় সেভাবে দেওয়া হয় না-বলে দলের প্রাক্তন কোচের অভিযোগ বহুদিনের। শুক্রবারও একই জিনিস নিয়ে সরব হলেন।
তাঁর আরও কথা, "এশিয়ান কাপের থেকে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনকারী পর্ব অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটাই আমি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু এআইএফএফ আমাকে হুমকি দিয়েছিল। 2 ডিসেম্বর যখন আমি শেষ হুমকি পাই, তখন আমাকে হাসপাতালে পর্যন্ত যেতে হয়। এই ঘটনার কথা কারওরই জানা নেই। যা ঘটছিল তা নিয়ে আমি অত্যন্ত বিরক্ত ছিলাম। এই ধরনের সমস্যা নিয়ে অবসাদে ভুগছিলাম। আমার হার্টে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল। আমি সর্বসমক্ষে বলতে চাইনি কোনওদিনই।"
ক্রোয়েশিয়ান কোচের তোপের মুখে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের কর্তারাও। ছাড় পাননি ফেডারেশন প্রেসিডেন্টও। "ভারতীয় ফুটবলের প্রশাসকরা সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমেই দেশের ফুটবল পরিচালনা করতে চান। ভারতীয় ফুটবলের ক্যালেন্ডার সম্পর্কে তাঁদের অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান নেই বললেই চলে," কটাক্ষ স্টিমাচের। প্রায় একইসঙ্গে যোগ করেছেন, "ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের প্রশাসকদের ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে কোনও জ্ঞানই নেই। ভারতীয় ফুটবলের ক্যালেন্ডার তাঁরা জানেন না। ওদের নজর কেবল ক্ষমতা দখল করা এবং কুর্সি ধরে রাখা।"
এখানেই শেষ নয়। ফেডারেশ ন প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবেরও কড়া সমালোচনা করেছেন। বলেন, "কল্যাণ কেবল জনপ্রিয় হওয়ারই চেষ্টা করেছে। সাম্প্রতিক মিডিয়া মিট সেকথাই বলছে। সবাই বলছেন, কল্যাণ রাজনৈতিক নেতা। কলকাতাতেই ওকে কেউ চেনে না। এমন একজনকে দরকার যে সত্যিকারের ক্ষমতাবান এবং দেশের ফুটবলকে নেতৃত্ব দিতে পারবে।" বিদায়ী কোচের তোপের মুখে ফেডারেশন। কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে দু'জনের বিচ্ছেদ পর্বটা যে তিক্ত হতে চলেছে তা পরিষ্কার হয়ে গেল।