মালদা, 5 মার্চ: প্রতিপক্ষ কে, এখনও জানেন না ৷ তবে বিলক্ষণ জানেন, তাঁকে প্রার্থী করায় দলের অনেকেরই গোঁসা হয়েছে ৷ অবশ্য এনিয়ে কিছু বলতে নারাজ তিনি ৷ নিজেকে বিজেপির সামান্য কর্মী হিসাবে বারবার উল্লেখ করছেন ৷ লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়নি বটে, কিন্তু সময় নষ্ট করতে নারাজ দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রের পদ্ম প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী ৷ কখনও মন্দির, কখনও মনীষীদের মূর্তি-সহ রাস্তা সাফাই করে চলেছেন তিনি ৷ প্রচারের প্রাথমিক পর্বে মানুষের নজর তাঁর দিকে কেন্দ্রীভূত করানোই প্রথম কৌশল তাঁর ৷
দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে অবাধ যাতায়াত শ্রীরূপার ৷ সেই সুবাদেই ভোট রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ ঊনিশের লোকসভায় ৷ অবশ্য তার অনেক আগে থেকে জমি তৈরি করেছিলেন তিনি ৷ সেই সুবাদেই নিজেকে নির্ভয়া দিদি হিসাবে তুলে ধরেছিলেন দক্ষিণ মালদার আমজনতার কাছে ৷ ঊনিশের ভোটে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে পদ্মের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী আবু হাসেম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৷
যদিও সামান্য ব্যবধানে ডালু মিঞার (আবু হাসেম) কাছে হেরে যান ৷ শ্রীরূপা পেয়েছিলেন 4 লাখ 36 হাজার 58 ভোট, ডালু পান 4 লাখ 44 হাজার 270 ভোট ৷ সেই ভোটে জোর লড়াই দেওয়ার সুবাদে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ইংরেজবাজার কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করে গেরুয়া শিবির ৷ এবার অবশ্য তিনি তৃণমূলের পরাক্রমী প্রার্থী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে 20 হাজার 99 ভোটে হারিয়ে বিধানসভায় যোগ দেন ৷ তারই পুরস্কার স্বরূপ অথবা তাঁর শীর্ষ মহলে ভালো যোগাযোগের জন্য এবারও দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করেছে দলের থিংক ট্যাংক ৷
শ্রীরূপা বলছেন, “আমি বিজেপির একজন সাধারণ কর্মী ৷ আমরা মানুষের জন্য যে লড়াই লড়ছি, সেটাই আমাদের নির্বাচন ৷ আমাদের কাছে নির্বাচন মানে একটা প্ল্যাটফর্ম ৷ নির্বাচন আসে, যায় ৷ আমি 2019 সাল থেকে দক্ষিণ মালদার মানুষের জন্য লড়াই করছি ৷ নরেন্দ্র মোদি আমাদের তিনটি মন্ত্র দিয়েছেন ৷ সেবা, সুশাসন এবং গরিব কল্যাণ ৷ এই তিনটি কাজের জন্যই আমাদের লড়াই ৷ এই লড়াই দিয়েই আমরা মানুষের কাছে পৌঁছোনোর চেষ্টা করি ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘বিরোধীরা তাদের কাজ করুক ৷ আমার কাজ, মানুষের সেবা ৷ আমাকে সবাই নির্ভয়াদি বলে ডাকে ৷ আমি রাজনীতির প্রাথমিক স্কুলে পড়ছি ৷ এখনও রাজনীতির শিক্ষা নিচ্ছি ৷ তাই রাজনীতিতে গালিগালাজ আমার অভ্যেস নেই ৷ সেটা বিজেপির প্রশিক্ষণেরও অংশ নয় ৷ সেবার কাজ করার সময় বিরোধী কিংবা শত্রু দেখি না ৷ এটা গান্ধিজির দেশ ৷ এক গালে থাপ্পড় মারলে আরেকটি গাল এগিয়ে দিতে বলেছিলেন তিনি ৷ আমি রাজনীতির ভাষা বুঝি না ৷ আমি শুধুই সেবক ৷ দীর্ঘ 12 বছর ধরে দক্ষিণ মালদার মানুষের সেবা করে আসছি ৷”
ভোটে জেতার ব্যাপারে অবশ্য এখনই নিশ্চিত শ্রীরূপা ৷ তাঁর কথায়, “সারা দেশ জুড়ে এখন গেরুয়া ঝড় ৷ এখন সবকিছুর রং পালটে যাচ্ছে ৷ টোটোর গেরুয়া রং৷ ম্যাজিক গাড়ি চলছে ৷ গেরুয়া রং ৷ এমনকি মালদার একটি শপিং মলের উপর গেরুয়া রংয়ের ওম লোগো ৷ মানুষ শুধু ভোটের দিন জানতে চাইছে ৷ আমি তিনটি ভোট লড়তে চলেছি ৷ এমন জনউচ্ছ্বাস আগে কখনও দেখিনি ৷”
আরও পড়ুন: