ETV Bharat / politics

মহারাষ্ট্রে 40 এর বেশি আসন জয়ে আত্মবিশ্বাসী একনাথ শিন্ডে - Eknath Shinde Exclusive Interview - EKNATH SHINDE EXCLUSIVE INTERVIEW

Eknath Shinde Exclusive Interview: মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ইটিভি ভারত মহারাষ্ট্র এডিটর সচিন পরবের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন । মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, মহারাষ্ট্রে মহায়ুতি 40টিরও বেশি আসন পাবে । মহারাষ্ট্রে 48টি লোকসভা আসন রয়েছে । একনাথ শিন্ডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করেছেন এবং কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধিকে কটাক্ষ করেছেন ।

Eknath Shinde
একনাথ শিন্ডে (ফাইল চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 27, 2024, 8:52 PM IST

Updated : May 28, 2024, 4:48 PM IST

হায়দরাবাদ/মুম্বই: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাজের ভিত্তিতে মহারাষ্ট্রে মহায়ুতি 40টিরও বেশি লোকসভা আসনে জিতবে ৷ এমনটাই মনে করেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ৷ মহায়ুতিতে বিজেপি ছাড়াও রয়েছে একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা, মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারের নেতৃত্বে থাকা এনসিপি ও রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা ৷ সেই জোটের ভালো ফলাফল নিয়ে এই মতামত একনাথ শিন্ডে প্রকাশ করেছেন ইটিভি ভারত-এর মহারাষ্ট্র এডিটর সচিন পরবকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৷

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের সাক্ষাৎকার (ইটিভি ভারত)

তিনি বলেন, "মহারাষ্ট্রে পাঁচ দফার ভোটের পরে আমি নিশ্চিত যে মহায়ুতি 40টির বেশি আসন পাবে ৷ এর কারণ, রাজ্যে আমাদের সরকারের করা কাজ ৷ তার মধ্যে রয়েছে বন্ধ প্রকল্পগুলি শুরু করা, মেট্রো সম্পর্কিত কাজ, বালাসাহেব ঠাকরে সমৃদ্ধি মহামার্গ, মেট্রো কার শেড, অটল সেতু, মুম্বই কোস্টাল রোড পরিবর্তন করা হচ্ছে । আমাদের সরকার কৃষক, মহিলা ও যুবকদের জন্য, শিল্পের বৃদ্ধির জন্য নেওয়া সিদ্ধান্তগুলি ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত 10 বছরে যে কাজ করেছেন, যা কংগ্রেস 50-60 বছরে করতে ব্যর্থ হয়েছে ৷ আগামী 100 বছরেও তারা সেই কাজ করতে পারবে না ৷ আমরা উন্নয়ন এজেন্ডা নিয়ে জনগণের কাছে গিয়েছি ৷ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছি ৷’’

শিন্ডের মতে, তাঁর ক্ষমতায় আসার আগে মহাবিকাশ আঘাড়ি সরকারের সময় মহারাষ্ট্র এফডিআই এর ক্ষেত্রে চার নম্বরে ছিল ৷ জিডিপিতে অনেক পিছিয়ে ছিল ৷ তিনি বলেন, "আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর, মহারাষ্ট্র এফডিআই-তে প্রথম স্থান অধিকার করেছে ৷ আমরা জিডিপিতে প্রচুর অবদান রেখেছি ৷ সেখানে 6 লক্ষ (কোটি) টাকার বিনিয়োগ এসেছে এবং শিল্প রাজ্যে আসছে ৷ আগে এখান থেকে সবাই পালিয়ে যেত ৷ এখন অনেকেই রাজ্যে আসছেন ৷ আগে মানুষ শিল্পপতিদের বাড়ির কাছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হতো, আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা শিল্পপতিদের রেড কার্পেট পেতে আহ্বান জানিয়েছি ৷ ভর্তুকি ও ওয়ান উইন্ডো ক্লিয়ারেন্সের জন্য মহারাষ্ট্রকে সারা বিশ্বের শিল্পপতিরা অগ্রাধিকার দিচ্ছেন এবং পছন্দ করছেন ।’’

তিনি আরও বলেন, "আমাদের পরিকাঠামো, সম্ভাবনা, ভালো সংযোগ, দক্ষ কর্মী রয়েছে এবং বিনিয়োগের কারণে এগুলি কর্মসংস্থান তৈরিতে সহায়তা করবে, লোকেরা চাকরি পাবে এবং রাজ্যে উন্নয়ন হবে । কেন্দ্রও এই বিষয়ে আমাদের সাহায্য করছে ৷’’

আরও পড়ুন:

একনাথ শিন্ডে তোপ দেগেছেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে) উদ্ধব ঠাকরের বিরুদ্ধে ৷ তাঁর কথায়, বাড়িতে বসে শুধু ফেসবুক লাইভ করলে ভোট পাওয়া যায় না ৷ যাঁরা উন্নয়নের কাজ মাঠে নেমে করেন, তাঁদেরই মানুষ সমর্থন করেন ৷ তাই তাঁরা যে উন্নয়নের কাজ করেছেন, তার ভিত্তিতেই তিনি ও তাঁর সরকারের দুই উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ ও অজিত পাওয়ার ভোট চাইছেন ৷

তিনি বলেন, "আমরা উন্নয়নের ইস্যুতে ও আমাদের সরকারের কাজগুলি নিয়ে জনগণের কাছে গিয়েছি, আমাদের সরকার প্রথম, যারা দুই বছরের মধ্যে মহিলাদের জন্য লেক লড়কি প্রকল্প, রাষ্ট্রীয় পরিবহণ বাসে 50 শতাংশ ছাড়, তরুণদের জন্য স্টার্ট আপ তৈরির মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷ তাই আমি বিশ্বাস করি যে মানুষ আমাদের কাজকে ভোট দেবে এবং তারা আমাদের কাজ পছন্দ করবে ।"

কিন্তু নির্বাচন কি সত্যিই সহজ ছিল ? যদি সহজই হবে, তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কেন দু’টি রোড শো করতে হল মুম্বইতে ? শিন্ডের জবাব, "এটা কি নিয়ম বা আইন যে প্রধানমন্ত্রী আসবেন না... যে মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী এলেন, বিরোধীরা ভয় পেল... রাজ্যের উন্নয়ন কাজের জন্য মোদিজি মহারাষ্ট্রের প্রশংসা করেছেন ।"

তিনি আরও বলেন, "যখনই আমরা মেট্রো 2, মেট্রো 7, সমৃদ্ধি হাইওয়ে, অটল সেতু উদ্বোধনের জন্য মোদিজিকে ডেকেছি, তিনি স্বেচ্ছায় এসেছিলেন ৷ কারণ তিনি উন্নয়ন পছন্দ করেন । মোদিজির মতো মানুষ এবং তাঁকে দেখতে লক্ষ লক্ষ লোক ছিল (রোড শো এবং সমাবেশের সময়) । বিরোধীরা দুর্বল হয়ে পড়েছে ৷ কারণ তাদের ছোট ছোট রাস্তায় ও রাস্তার মোড়ে মিছিল করতে হচ্ছে ।" এর পর শিন্ডের সংযোজন, বিরোধী দলকে চিরতরে রাস্তায় আনতে, রাস্তায় নেমেছেন মোদিজি ।’’

শিন্ডে বিরোধীদের নিন্দা করে জানান যে বিরোধীদের কথা বলার মতো কোনও ইস্যু নেই । তিনি বলেন, "তারা (বিরোধীরা) উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে পারে না ৷ কারণ তারা যদি সেটা করে, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর কাজের তালিকা তৈরি শুরু হবে ৷ আর তাদের মুখ বন্ধ হয়ে যাবে । এবং তাই তারা সংবিধান পরিবর্তনের কথা বলে... ড. বাবাসাহেব আম্বেদকরের সংবিধানের কারণে দেশ চলছে । সেই কারণে মোদিজির মতো একজন সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন...যা প্রধানমন্ত্রীও স্বীকার করেন ৷”

তাঁর আরও বক্তব্য, কংগ্রেস 50-60 বছর ধরে দেশের সংবিধানের কথা ভাবেনি ৷ শিন্ডে বলেন, "সাংবিধান দিবস উদযাপন কে শুরু করেছিলেন, মোদিজি ৷ কে ড. বাবাসাহেব আম্বেদকরকে পরাজিত করেছিল, কংগ্রেস । ড. আম্বেদকর বলতেন যে কংগ্রেসের ঘরই জ্বলছে, এবং এটি থেকে দূরে থাকা উচিত । তাই আমি বলব সংবিধানে কোনও পরিবর্তন হবে না, কংগ্রেস 82 বার সংবিধান সংশোধন করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করেন না, কংগ্রেস তা হজম করতে পারেনি ।’’

আরও পড়ুন:

শিন্ডের দাবি, মোদি নিশ্চিত করবেন যে দেশ যেন একটি সুপার পাওয়ার হয়ে উঠতে পারে এবং দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাবেন মোদি । তিনি বলেন, "কংগ্রেস কী করে, তারা বিদেশে দেশের মানহানি করে, এটা কি দেশাত্মবোধ ? তারা পাকিস্তানের ভাষায় কথা বলছে এবং তারা হেমন্ত কারকারে, বিজয় সালাসকার, তুকারাম ওম্বলের মতো পুলিশ কর্মীদের শহিদ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছে... এটা ওই শহিদদের অবমাননা ৷ কংগ্রেসের একটাই এজেন্ডা আছে, মোদিকে পরাজিত করা ৷ কিন্তু তারা 2014 সালে পরাজিত হয়েছিল, 2019 ও 2024 সালে তাদের উড়িয়ে দেওয়া হবে ।’’

রাহুল গান্ধি দাবি করেছেন যে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে বিজেপি নেতাদের জেলে পাঠানো হবে ৷ এই নিয়ে একনাথ শিন্ডের বক্তব্য, "কেউ স্বপ্নেও ভাববে না যে রাহুল গান্ধিকে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন ৷ ভারত জোড়া, ভারত তোড়ো করতে করতে তিনি বিদেশে পাড়ি জমান, প্রধানমন্ত্রী মোদি 10 বছরে একদিনের ছুটি নেননি এবং নিজেকে উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য ৷ ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় যদি প্রশ্ন করেন, কে হবেন প্রধানমন্ত্রী, সবাই মোদির নামই বলবে ৷ রাহুল গান্ধির নাম কে নেবে ? বলুন, তিনি কী কাজ করেছেন ? তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না ৷ তাই এই নিয়ে আলোচনা করে লাভ নেই ৷"

শিন্ডের দাবি, মহারাষ্ট্রের মানুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভোটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই ৷ পুনে পোরসে দুর্ঘটনা নিয়েও কথা বলেছেন শিন্ডে ৷ ওই দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত 17 বছরের এক নাবালক ৷ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আইনের সামনে সবাই সমান । আমি (পুনের) পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে স্পষ্টভাবে বলেছিলাম যে এই মামলায় কাউকে রেহাই দেওয়া উচিত নয় । অপরাধী যত বড়ই হোক না কেন, তাদের জেলে যেতে হবে । এটা আমার নির্দেশ ছিল ৷ কারণ যে দুজনের জীবন গিয়েছে, তারাও তো কারও ছেলে-মেয়ে ৷ কারও এবার ধাক্কা দেওয়ার অধিকার নেই, আমাদের রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না ।"

শিন্ডে কথা বলেছেন শিবসেনা ভাগ হয়ে যাওয়া নিয়েও ৷ তাঁর কথায়, দল এবং প্রতীক (তীর-ধনুক) বাঁচাতে শিবসেনাকে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার ছিল । তিনি বলেন, "শিব সৈনিকদের বাঁচাতে এই সিদ্ধান্ত ৷ কারণ আমাদের নেতারা ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল । মহারাষ্ট্রের 12.5 কোটি মানুষ বিজেপি এবং শিবসেনার পক্ষে ভোট দিয়েছিল, কিন্তু সরকার গঠন করা হয়েছিল কংগ্রেসের সঙ্গে ৷ তাই তারা প্রথমে তারা মহারাষ্ট্রের জনগণের পিঠে ছুরি মেরেছিল এবং বালাসাহেব ঠাকরের আদর্শ থেকে দূরে সরে গিয়ে, তাঁকেও ছুরি মেরেছে ৷ যদি আমরা (সংযুক্ত) শিবসেনা থাকতাম, তাহলে দল শেষ হয়ে যেত ৷ তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ আর মানুষও এটা পছন্দ করেছে ৷"

আরও পড়ুন:

হায়দরাবাদ/মুম্বই: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাজের ভিত্তিতে মহারাষ্ট্রে মহায়ুতি 40টিরও বেশি লোকসভা আসনে জিতবে ৷ এমনটাই মনে করেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ৷ মহায়ুতিতে বিজেপি ছাড়াও রয়েছে একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা, মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারের নেতৃত্বে থাকা এনসিপি ও রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা ৷ সেই জোটের ভালো ফলাফল নিয়ে এই মতামত একনাথ শিন্ডে প্রকাশ করেছেন ইটিভি ভারত-এর মহারাষ্ট্র এডিটর সচিন পরবকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৷

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের সাক্ষাৎকার (ইটিভি ভারত)

তিনি বলেন, "মহারাষ্ট্রে পাঁচ দফার ভোটের পরে আমি নিশ্চিত যে মহায়ুতি 40টির বেশি আসন পাবে ৷ এর কারণ, রাজ্যে আমাদের সরকারের করা কাজ ৷ তার মধ্যে রয়েছে বন্ধ প্রকল্পগুলি শুরু করা, মেট্রো সম্পর্কিত কাজ, বালাসাহেব ঠাকরে সমৃদ্ধি মহামার্গ, মেট্রো কার শেড, অটল সেতু, মুম্বই কোস্টাল রোড পরিবর্তন করা হচ্ছে । আমাদের সরকার কৃষক, মহিলা ও যুবকদের জন্য, শিল্পের বৃদ্ধির জন্য নেওয়া সিদ্ধান্তগুলি ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত 10 বছরে যে কাজ করেছেন, যা কংগ্রেস 50-60 বছরে করতে ব্যর্থ হয়েছে ৷ আগামী 100 বছরেও তারা সেই কাজ করতে পারবে না ৷ আমরা উন্নয়ন এজেন্ডা নিয়ে জনগণের কাছে গিয়েছি ৷ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছি ৷’’

শিন্ডের মতে, তাঁর ক্ষমতায় আসার আগে মহাবিকাশ আঘাড়ি সরকারের সময় মহারাষ্ট্র এফডিআই এর ক্ষেত্রে চার নম্বরে ছিল ৷ জিডিপিতে অনেক পিছিয়ে ছিল ৷ তিনি বলেন, "আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর, মহারাষ্ট্র এফডিআই-তে প্রথম স্থান অধিকার করেছে ৷ আমরা জিডিপিতে প্রচুর অবদান রেখেছি ৷ সেখানে 6 লক্ষ (কোটি) টাকার বিনিয়োগ এসেছে এবং শিল্প রাজ্যে আসছে ৷ আগে এখান থেকে সবাই পালিয়ে যেত ৷ এখন অনেকেই রাজ্যে আসছেন ৷ আগে মানুষ শিল্পপতিদের বাড়ির কাছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হতো, আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা শিল্পপতিদের রেড কার্পেট পেতে আহ্বান জানিয়েছি ৷ ভর্তুকি ও ওয়ান উইন্ডো ক্লিয়ারেন্সের জন্য মহারাষ্ট্রকে সারা বিশ্বের শিল্পপতিরা অগ্রাধিকার দিচ্ছেন এবং পছন্দ করছেন ।’’

তিনি আরও বলেন, "আমাদের পরিকাঠামো, সম্ভাবনা, ভালো সংযোগ, দক্ষ কর্মী রয়েছে এবং বিনিয়োগের কারণে এগুলি কর্মসংস্থান তৈরিতে সহায়তা করবে, লোকেরা চাকরি পাবে এবং রাজ্যে উন্নয়ন হবে । কেন্দ্রও এই বিষয়ে আমাদের সাহায্য করছে ৷’’

আরও পড়ুন:

একনাথ শিন্ডে তোপ দেগেছেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে) উদ্ধব ঠাকরের বিরুদ্ধে ৷ তাঁর কথায়, বাড়িতে বসে শুধু ফেসবুক লাইভ করলে ভোট পাওয়া যায় না ৷ যাঁরা উন্নয়নের কাজ মাঠে নেমে করেন, তাঁদেরই মানুষ সমর্থন করেন ৷ তাই তাঁরা যে উন্নয়নের কাজ করেছেন, তার ভিত্তিতেই তিনি ও তাঁর সরকারের দুই উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ ও অজিত পাওয়ার ভোট চাইছেন ৷

তিনি বলেন, "আমরা উন্নয়নের ইস্যুতে ও আমাদের সরকারের কাজগুলি নিয়ে জনগণের কাছে গিয়েছি, আমাদের সরকার প্রথম, যারা দুই বছরের মধ্যে মহিলাদের জন্য লেক লড়কি প্রকল্প, রাষ্ট্রীয় পরিবহণ বাসে 50 শতাংশ ছাড়, তরুণদের জন্য স্টার্ট আপ তৈরির মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷ তাই আমি বিশ্বাস করি যে মানুষ আমাদের কাজকে ভোট দেবে এবং তারা আমাদের কাজ পছন্দ করবে ।"

কিন্তু নির্বাচন কি সত্যিই সহজ ছিল ? যদি সহজই হবে, তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কেন দু’টি রোড শো করতে হল মুম্বইতে ? শিন্ডের জবাব, "এটা কি নিয়ম বা আইন যে প্রধানমন্ত্রী আসবেন না... যে মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী এলেন, বিরোধীরা ভয় পেল... রাজ্যের উন্নয়ন কাজের জন্য মোদিজি মহারাষ্ট্রের প্রশংসা করেছেন ।"

তিনি আরও বলেন, "যখনই আমরা মেট্রো 2, মেট্রো 7, সমৃদ্ধি হাইওয়ে, অটল সেতু উদ্বোধনের জন্য মোদিজিকে ডেকেছি, তিনি স্বেচ্ছায় এসেছিলেন ৷ কারণ তিনি উন্নয়ন পছন্দ করেন । মোদিজির মতো মানুষ এবং তাঁকে দেখতে লক্ষ লক্ষ লোক ছিল (রোড শো এবং সমাবেশের সময়) । বিরোধীরা দুর্বল হয়ে পড়েছে ৷ কারণ তাদের ছোট ছোট রাস্তায় ও রাস্তার মোড়ে মিছিল করতে হচ্ছে ।" এর পর শিন্ডের সংযোজন, বিরোধী দলকে চিরতরে রাস্তায় আনতে, রাস্তায় নেমেছেন মোদিজি ।’’

শিন্ডে বিরোধীদের নিন্দা করে জানান যে বিরোধীদের কথা বলার মতো কোনও ইস্যু নেই । তিনি বলেন, "তারা (বিরোধীরা) উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে পারে না ৷ কারণ তারা যদি সেটা করে, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর কাজের তালিকা তৈরি শুরু হবে ৷ আর তাদের মুখ বন্ধ হয়ে যাবে । এবং তাই তারা সংবিধান পরিবর্তনের কথা বলে... ড. বাবাসাহেব আম্বেদকরের সংবিধানের কারণে দেশ চলছে । সেই কারণে মোদিজির মতো একজন সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন...যা প্রধানমন্ত্রীও স্বীকার করেন ৷”

তাঁর আরও বক্তব্য, কংগ্রেস 50-60 বছর ধরে দেশের সংবিধানের কথা ভাবেনি ৷ শিন্ডে বলেন, "সাংবিধান দিবস উদযাপন কে শুরু করেছিলেন, মোদিজি ৷ কে ড. বাবাসাহেব আম্বেদকরকে পরাজিত করেছিল, কংগ্রেস । ড. আম্বেদকর বলতেন যে কংগ্রেসের ঘরই জ্বলছে, এবং এটি থেকে দূরে থাকা উচিত । তাই আমি বলব সংবিধানে কোনও পরিবর্তন হবে না, কংগ্রেস 82 বার সংবিধান সংশোধন করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করেন না, কংগ্রেস তা হজম করতে পারেনি ।’’

আরও পড়ুন:

শিন্ডের দাবি, মোদি নিশ্চিত করবেন যে দেশ যেন একটি সুপার পাওয়ার হয়ে উঠতে পারে এবং দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাবেন মোদি । তিনি বলেন, "কংগ্রেস কী করে, তারা বিদেশে দেশের মানহানি করে, এটা কি দেশাত্মবোধ ? তারা পাকিস্তানের ভাষায় কথা বলছে এবং তারা হেমন্ত কারকারে, বিজয় সালাসকার, তুকারাম ওম্বলের মতো পুলিশ কর্মীদের শহিদ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছে... এটা ওই শহিদদের অবমাননা ৷ কংগ্রেসের একটাই এজেন্ডা আছে, মোদিকে পরাজিত করা ৷ কিন্তু তারা 2014 সালে পরাজিত হয়েছিল, 2019 ও 2024 সালে তাদের উড়িয়ে দেওয়া হবে ।’’

রাহুল গান্ধি দাবি করেছেন যে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে বিজেপি নেতাদের জেলে পাঠানো হবে ৷ এই নিয়ে একনাথ শিন্ডের বক্তব্য, "কেউ স্বপ্নেও ভাববে না যে রাহুল গান্ধিকে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন ৷ ভারত জোড়া, ভারত তোড়ো করতে করতে তিনি বিদেশে পাড়ি জমান, প্রধানমন্ত্রী মোদি 10 বছরে একদিনের ছুটি নেননি এবং নিজেকে উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য ৷ ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় যদি প্রশ্ন করেন, কে হবেন প্রধানমন্ত্রী, সবাই মোদির নামই বলবে ৷ রাহুল গান্ধির নাম কে নেবে ? বলুন, তিনি কী কাজ করেছেন ? তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না ৷ তাই এই নিয়ে আলোচনা করে লাভ নেই ৷"

শিন্ডের দাবি, মহারাষ্ট্রের মানুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভোটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই ৷ পুনে পোরসে দুর্ঘটনা নিয়েও কথা বলেছেন শিন্ডে ৷ ওই দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত 17 বছরের এক নাবালক ৷ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আইনের সামনে সবাই সমান । আমি (পুনের) পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে স্পষ্টভাবে বলেছিলাম যে এই মামলায় কাউকে রেহাই দেওয়া উচিত নয় । অপরাধী যত বড়ই হোক না কেন, তাদের জেলে যেতে হবে । এটা আমার নির্দেশ ছিল ৷ কারণ যে দুজনের জীবন গিয়েছে, তারাও তো কারও ছেলে-মেয়ে ৷ কারও এবার ধাক্কা দেওয়ার অধিকার নেই, আমাদের রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না ।"

শিন্ডে কথা বলেছেন শিবসেনা ভাগ হয়ে যাওয়া নিয়েও ৷ তাঁর কথায়, দল এবং প্রতীক (তীর-ধনুক) বাঁচাতে শিবসেনাকে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার ছিল । তিনি বলেন, "শিব সৈনিকদের বাঁচাতে এই সিদ্ধান্ত ৷ কারণ আমাদের নেতারা ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল । মহারাষ্ট্রের 12.5 কোটি মানুষ বিজেপি এবং শিবসেনার পক্ষে ভোট দিয়েছিল, কিন্তু সরকার গঠন করা হয়েছিল কংগ্রেসের সঙ্গে ৷ তাই তারা প্রথমে তারা মহারাষ্ট্রের জনগণের পিঠে ছুরি মেরেছিল এবং বালাসাহেব ঠাকরের আদর্শ থেকে দূরে সরে গিয়ে, তাঁকেও ছুরি মেরেছে ৷ যদি আমরা (সংযুক্ত) শিবসেনা থাকতাম, তাহলে দল শেষ হয়ে যেত ৷ তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ আর মানুষও এটা পছন্দ করেছে ৷"

আরও পড়ুন:

Last Updated : May 28, 2024, 4:48 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.