লাহোর, 27 ফেব্রুয়ারি: চুরি করা জনসমর্থনে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মরিয়ম নওয়াজ ৷ এমনই অভিযোগ পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই-এর ৷ মঙ্গলবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে ৷ সেখানে আরও জানানো হয়েছে যে ইমরানের দল পঞ্জাব অ্যাসেম্বলিতে একটি ‘সমান্তরাল’ অধিবেশন ডাকতে চলেছে ৷ সেখানে তারা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, অ্যাসেম্বলির স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করবে ৷
পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিটিআই-এর দাবি যে তাদের কাছে 250 সদস্য রয়েছে ৷ এর মধ্য়ে মহিলা ও সংখ্যালঘুদের আসনও রয়েছে ৷ তাদের তরফে পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য 71 বছর বয়সী রানা আফতাবকে প্রার্থী করা হয়েছিল ৷ পরে তিনি ভোট বয়কট করেন৷ এর পর পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজ বা পিএমএল-এন এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা নওয়াজ শরিফের কন্যা মরিয়ম পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন ৷ 50 বছর বয়সী এই নেত্রী পেয়েছেন 220 ভোট ৷
পঞ্জাব প্রদেশের অ্যাসেম্বলিতে মোট আসন 327 ৷ 187 জনের সমর্থন প্রয়োজন ৷ ফলে তার থেকে 33টি ভোট বেশি পেয়ে মুখ্য়মন্ত্রী হয়েছেন মরিয়ম ৷ কিন্তু পিটিআই-এর সওকত বসরা এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান যে মরিয়ম জনসমর্থন চুরি করেছেন ৷ তাঁর দাবি, লাহোরের পিপি-159 আসনে পিটিআই সমর্থিত মেহের সরাফতের কাছে হেরে গিয়েছিলেন মরিয়ম ৷ পরে তাঁকে রিগিং করে জেতানো হয়, যাতে তিনি পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন ৷ তাঁর আরও দাবি, অনেকেই চান যে ইমরান খান আবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদে বসুন ৷ কিন্তু ইমরান চান যে পাকিস্তানের মানুষের সমর্থনে ‘জয়ী’ সমস্ত পিটিআই প্রার্থীকে আগে জয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হোক ৷
ইমরানের দলের আরও দাবি, পিটিআই সদস্য়দের অ্যাসেম্বলিতে প্রবেশ ঠেকাতে কারফিউ জারি করা হয়েছিল ৷ শুধুমাত্র একজন পরাজিত মহিলাকে পদে বসানোর জন্য অ্যাসেম্বলির পবিত্রতা নষ্ট করা হয়েছে ৷ ফলে এই মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পঞ্জাব প্রদেশ সুরক্ষিত নয় ৷ সেখানে ইতিমধ্যে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে ৷ এই অপমান পঞ্জাব প্রদেশের মানুষ সহ্য করবে না ৷
কিন্তু প্রশ্ন হল, কেন ভোট বয়কট করেছিল পিটিআই ? পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিটিআই-এর মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী রানা আফতাবের আনা পয়েন্ট অফ অর্ডার গ্রাহ্য হয়নি ৷ বরং সভার নতুন নেতা নির্বাচনের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন নব-নির্বাচিত স্পিকার মালিক আহমেদ খান ৷ তখনই পিটিআই সমর্থিত 103 জন সদস্য ওয়াকআউট করেন ৷
তার পর মরিয়ম মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন ৷ স্পিকারের পাশাপাশি ডেপুটি স্পিকার পদেও পিএমএল-এন এর জয় হয় ৷ ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হয়েছেন জাহের ইকবাল চান্নার ৷ উল্লেখ্য, পঞ্জাব প্রদেশের অ্যাসেম্বলিতে পিএমএল-এন এর সদস্য 137 ৷ ইমরান খানের দলের সমর্থিত সদস্য 113 ৷ এছাড়া 20 জন নির্দল সদস্য় রয়েছেন ৷ তাঁরা পিএমএল-এন কেই সমর্থন করেন ৷
(সংবাদসংস্থা - পিটিআই)
আরও পড়ুন: