ETV Bharat / international

গাড়ি চালিয়ে 150 কিমি! ডিকিতে স্ত্রীর দেহ ফেলে পালালেন স্বামী

ভারতীয় বংশোদ্ভূত হর্ষিতা ব্রেল্লার খুনে নয়া তথ্য পেলেন তদন্তকারীরা ৷ পুলিশের অনুমান, অভিযুক্ত হর্ষিতার স্বামী তাঁর দেহ ফেলে রেখে ইংল্যান্ড ছেড়ে পালিয়েছেন ৷

HARSHITA BRELLA MURDER CASE
হর্ষিতা ব্রেল্লা ও স্বামী পঙ্কজ লাম্বা (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 2 hours ago

Updated : 48 minutes ago

নর্থহ্যাম্পটনশায়ার, 20 নভেম্বর: ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণী হর্ষিতা ব্রেল্লা খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেল পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, স্ত্রী হর্ষিতাকে খুন করে ইংল্যান্ড ছেড়েছেন স্বামী পঙ্কজ লম্বা। পাশাপাশি প্রমাণ লোপাট করতে বাড়ি থেকে 150 কিলোমিটার দূরে দেহ রেখে আসা হয়েছিল বলেও মনে করছে পুলিশ।

24 বছর বয়সি হর্ষিতা মূলত দিল্লির বাসিন্দা ছিলেন ৷ গত 10 নভেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় কর্বি শহরে 23 বছর বয়সি স্বামী পঙ্কজ তাঁকে খুন করেন বলে অভিযোগ ৷ নর্থহ্যাম্পটনশায়ার পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে যে তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিল। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, হর্ষিতাকে খুন করার পর, পঙ্কজ তাঁর গাড়ির ডিকিতে স্ত্রীর দেহটি রাখে ৷
তারপর কর্বি শহর থেকে প্রায় 150 কিলোমিটার দূরে গাড়ি চালিয়ে ইলফোর্ডের ব্রিসবেন রোডে গাড়িটি পার্ক করে রাখেন। পুলিশের বিশ্বাস, এরপরই পঙ্কজ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। স্থানীয় সময় 14 নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভোরে পূর্ব লন্ডনের একটি জায়গা থেকে পঙ্কজের গাড়িটি উদ্ধার হয় । তার ডিকিতে ছিল হর্ষিতার দেহ।

মামলার গোয়েন্দা প্রধান জনি ক্যাম্পবেল জানান, তাঁর দল হর্ষিতার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে দ্রুত কাজ করছে । নর্থহ্যাম্পটনশায়ার পুলিশের জারি করা সর্বশেষ বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, "আমাদের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, পঙ্কজ লাম্বা 11 নভেম্বর, সোমবার সকালে কর্বি থেকে ইলফোর্ডের দিকে একটি গাড়ি নিয়ে রওনা হন। আমাদের সন্দেহ, কর্বি ছাড়ার আগে লাম্বা গাড়ির ডিকিতে হর্ষিতার দেহ রেখেছিলেন। তারপর ইলফোর্ডের ব্রিসবেন রোডে গাড়িটি রেখে তিনি পালিয়ে যান ৷"

তিনি আরও বলেন, " এই খুনের তদন্তের জন্য আমাদের আরও তথ্য প্রয়োজন। সেই তথ্য জানাতে সকলের কাছে আবেদন রাখছি ৷ এই ঘটনার পর থেকে যদি কেউ কর্বি বা ইলফোর্ড বা অন্য কোথাও পঙ্কজ লাম্বাকে দেখে থাকেন তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ।"

পারিবারিক সহিংসতার শিকার :

2023 সালের অগস্ট মাসে পঙ্কজকে বিয়ে করেন হর্ষিতা ৷ 2024 সালের এপ্রিল মাসে ইংল্যান্ডে চলে আসেন ৷ সেখানে পঙ্কজ পড়াশোনা করতেন। হর্ষিতা একটি গোডাউনে কাজ করতেন। নিহতের পরিবার জানায়, হর্ষিতা দাম্পত্য জীবনে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন । অগস্টের শেষের দিকে বাবা সাতবীর ব্রেল্লাকে ফোন করে জানান যে তাঁর স্বামী মারধর করেন। তাঁর পরিবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পঙ্কজ অভিযোগ করেছিলেন, হর্ষিতা সময়মতো রান্না করতে পারেন না। মায়ের সঙ্গে খুব বেশি সময় ফোনে কথা বলেন। এদিকে, নর্থহ্যাম্পটনশায়ার পুলিশও নিশ্চিত করেছে, হর্ষিতা এর আগেও একাধিকবার গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়েছিলেন ৷ সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ সংক্রান্ত একটি মামলাও হয়েছিল ।

ভাতের মূল্যবান বিকল্প হতে পারে বাজরা, ইটিভি ভারতে কারণ বিশ্লেষণে সৌম্যা স্বামীনাথন

অভিভাবকরা বিচার চান :

হর্ষিতার বাবা-মা তাঁদের মেয়ের বিচার চেয়েছেন । বাবা সতবীর ব্রেল্লা বলেন, "আমি চাই আমার জামাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক এবং আমি চাই আমার মেয়ের দেহ দেশে আনা হোক ।"

পরিবার জানিয়েছে, মেয়ের সঙ্গে তাদের শেষ কথা হয় 10 নভেম্বর ৷ সেই ফোনে হর্ষিতা জানিয়েছিলেন, তিনি তখন ডিনার করেছেন এবং পঙ্কজের বাড়ি ফেরার জন্য অপেক্ষা করছে । পরের দু'দিন হর্ষিতার ফোন বন্ধ ছিল ৷ তাতেই উদ্বিগ্ন হয়ে তাঁর পরিবার নর্থহ্যাম্পটনশায়ারের স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুলিশ কর্তারা খুঁজতে শুরু করলে হর্ষিতার দেহ পান ৷ নর্থহ্যাম্পটনশায়ার পুলিশ জানিয়েছে 60 জনেরও বেশি গোয়েন্দা এই মামলায় কাজ করছেন ৷

উষ্ণতম 2024! বাড়ছে বিশ্বের তাপমাত্রা, ভারতের পরিস্থিতিও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ :

হর্ষিতার দিদি সোনিয়া দাবাস দিল্লি থেকে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকাকে বলেছেন, "পুলিশ আমার বোনকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি । আমার বোন খুব নির্দোষ ও দয়ালু ৷ পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি ৷ সেই কারণে আমার বোন ভয় পেয়েছিল। একাকিত্ব তাকে গ্রাস করেছিল। পঙ্কজের কাছে ফিরে যেতে বাধ্য হয় ৷ তাতেই এই ঘটনা ৷"

নর্থহ্যাম্পটনশায়ার, 20 নভেম্বর: ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণী হর্ষিতা ব্রেল্লা খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেল পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, স্ত্রী হর্ষিতাকে খুন করে ইংল্যান্ড ছেড়েছেন স্বামী পঙ্কজ লম্বা। পাশাপাশি প্রমাণ লোপাট করতে বাড়ি থেকে 150 কিলোমিটার দূরে দেহ রেখে আসা হয়েছিল বলেও মনে করছে পুলিশ।

24 বছর বয়সি হর্ষিতা মূলত দিল্লির বাসিন্দা ছিলেন ৷ গত 10 নভেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় কর্বি শহরে 23 বছর বয়সি স্বামী পঙ্কজ তাঁকে খুন করেন বলে অভিযোগ ৷ নর্থহ্যাম্পটনশায়ার পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে যে তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিল। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, হর্ষিতাকে খুন করার পর, পঙ্কজ তাঁর গাড়ির ডিকিতে স্ত্রীর দেহটি রাখে ৷
তারপর কর্বি শহর থেকে প্রায় 150 কিলোমিটার দূরে গাড়ি চালিয়ে ইলফোর্ডের ব্রিসবেন রোডে গাড়িটি পার্ক করে রাখেন। পুলিশের বিশ্বাস, এরপরই পঙ্কজ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। স্থানীয় সময় 14 নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভোরে পূর্ব লন্ডনের একটি জায়গা থেকে পঙ্কজের গাড়িটি উদ্ধার হয় । তার ডিকিতে ছিল হর্ষিতার দেহ।

মামলার গোয়েন্দা প্রধান জনি ক্যাম্পবেল জানান, তাঁর দল হর্ষিতার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে দ্রুত কাজ করছে । নর্থহ্যাম্পটনশায়ার পুলিশের জারি করা সর্বশেষ বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, "আমাদের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, পঙ্কজ লাম্বা 11 নভেম্বর, সোমবার সকালে কর্বি থেকে ইলফোর্ডের দিকে একটি গাড়ি নিয়ে রওনা হন। আমাদের সন্দেহ, কর্বি ছাড়ার আগে লাম্বা গাড়ির ডিকিতে হর্ষিতার দেহ রেখেছিলেন। তারপর ইলফোর্ডের ব্রিসবেন রোডে গাড়িটি রেখে তিনি পালিয়ে যান ৷"

তিনি আরও বলেন, " এই খুনের তদন্তের জন্য আমাদের আরও তথ্য প্রয়োজন। সেই তথ্য জানাতে সকলের কাছে আবেদন রাখছি ৷ এই ঘটনার পর থেকে যদি কেউ কর্বি বা ইলফোর্ড বা অন্য কোথাও পঙ্কজ লাম্বাকে দেখে থাকেন তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ।"

পারিবারিক সহিংসতার শিকার :

2023 সালের অগস্ট মাসে পঙ্কজকে বিয়ে করেন হর্ষিতা ৷ 2024 সালের এপ্রিল মাসে ইংল্যান্ডে চলে আসেন ৷ সেখানে পঙ্কজ পড়াশোনা করতেন। হর্ষিতা একটি গোডাউনে কাজ করতেন। নিহতের পরিবার জানায়, হর্ষিতা দাম্পত্য জীবনে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন । অগস্টের শেষের দিকে বাবা সাতবীর ব্রেল্লাকে ফোন করে জানান যে তাঁর স্বামী মারধর করেন। তাঁর পরিবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পঙ্কজ অভিযোগ করেছিলেন, হর্ষিতা সময়মতো রান্না করতে পারেন না। মায়ের সঙ্গে খুব বেশি সময় ফোনে কথা বলেন। এদিকে, নর্থহ্যাম্পটনশায়ার পুলিশও নিশ্চিত করেছে, হর্ষিতা এর আগেও একাধিকবার গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়েছিলেন ৷ সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ সংক্রান্ত একটি মামলাও হয়েছিল ।

ভাতের মূল্যবান বিকল্প হতে পারে বাজরা, ইটিভি ভারতে কারণ বিশ্লেষণে সৌম্যা স্বামীনাথন

অভিভাবকরা বিচার চান :

হর্ষিতার বাবা-মা তাঁদের মেয়ের বিচার চেয়েছেন । বাবা সতবীর ব্রেল্লা বলেন, "আমি চাই আমার জামাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক এবং আমি চাই আমার মেয়ের দেহ দেশে আনা হোক ।"

পরিবার জানিয়েছে, মেয়ের সঙ্গে তাদের শেষ কথা হয় 10 নভেম্বর ৷ সেই ফোনে হর্ষিতা জানিয়েছিলেন, তিনি তখন ডিনার করেছেন এবং পঙ্কজের বাড়ি ফেরার জন্য অপেক্ষা করছে । পরের দু'দিন হর্ষিতার ফোন বন্ধ ছিল ৷ তাতেই উদ্বিগ্ন হয়ে তাঁর পরিবার নর্থহ্যাম্পটনশায়ারের স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুলিশ কর্তারা খুঁজতে শুরু করলে হর্ষিতার দেহ পান ৷ নর্থহ্যাম্পটনশায়ার পুলিশ জানিয়েছে 60 জনেরও বেশি গোয়েন্দা এই মামলায় কাজ করছেন ৷

উষ্ণতম 2024! বাড়ছে বিশ্বের তাপমাত্রা, ভারতের পরিস্থিতিও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ :

হর্ষিতার দিদি সোনিয়া দাবাস দিল্লি থেকে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকাকে বলেছেন, "পুলিশ আমার বোনকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি । আমার বোন খুব নির্দোষ ও দয়ালু ৷ পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি ৷ সেই কারণে আমার বোন ভয় পেয়েছিল। একাকিত্ব তাকে গ্রাস করেছিল। পঙ্কজের কাছে ফিরে যেতে বাধ্য হয় ৷ তাতেই এই ঘটনা ৷"

Last Updated : 48 minutes ago
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.