ইসলামাবাদ, 31 জানুয়ারি: ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে বুধবার একটি দুর্নীতির মামলায় 14 বছরের কারাদণ্ড দিল পাকিস্তানের আদালত ৷ প্রধানমন্ত্রী পদে থাকাকালীন স্পর্শকাতর রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস করার জন্য মঙ্গলবারই জেলবন্দি ইমরান খানের 10 বছরের কারাদণ্ড হয় ৷ তার একদিন পর ফের আদালতে ধাক্কা খেলেন তিনি ৷ এবারের সাজা ব্যয়বহুল রাষ্ট্রীয় উপহার রেখে দেওয়ার জন্য হয়েছে ।
ইমরান খান আগেই তিনবছর কারাদণ্ড পাওয়ার জেরে এখন জেলে রয়েছেন ৷ জেল থেকে এই 71 বছর বয়সি প্রাক্তন ক্রিকেটার ভোটে লড়ার চেষ্টা করেছিলেন ৷ কিন্তু তা সম্ভব হয়নি৷ আগামী 8 ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন ৷ তার ঠিক আটদিন আগে পর পর দু’টি সাজা ঘোষণা হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে সমস্যা বাড়ল ইমরানের ৷
যদিও এবারের নির্বাচন ঘিরে শুধু ইমরান খান নন, তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফও (পিটিআই) অনেক সমস্যায় পড়েছে ৷ পিটিআই-এর নির্বাচনী প্রতীক ছিল ব্যাট ৷ এবার পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন সেই প্রতীক দিতে অস্বীকার করে ৷ ইমরান খান ছাড়াও পাকিস্তানের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি এবং আরও বেশ কয়েকজনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাখ্যান করা হয় ৷
জবাবদিহি সংক্রান্ত আদালতের বিচারক মোহাম্মদ বশির তোষাখানা দুর্নীতি মামলায় রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে শুনানি পরিচালনা করেন ৷ ওই জেলেই বন্দি রয়েছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ৷ এ দিন আদালত ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রীকে কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের কোনও সরকারি পদে বসার বিষয়ে 10 বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ৷ প্রত্যেককে পাকিস্তানের মুদ্রায় 787 মিলিয়ন টাকা জরিমানা করা হয়েছে । তবে বুধবার আদালতে হাজির হননি বুশরা বিবি ।
গত মাসে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) ইমরান ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি নতুন মামলা দায়ের করে জবাবদিহি আদালতে ৷ সেখানে অভিযোগ করা হয়, সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের কাছ থেকে পাওয়া একটি গয়নার সেট রেখে দিয়েছেন এই দম্পতি ৷ আদালতে ইমরান জানান, এই মামলার সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর কোনও সম্পর্ক নেই ৷ তাঁর স্ত্রীকে জোর করে আদালতে টেনে আনা হচ্ছে ৷
বুধবার শুনানির বিচারক বশির জানতে চান যে ইমরান তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করেছেন কি না ! উত্তরে ইমরান জানান যে তাঁর আইনজীবী এলেই তিনি বয়ান নথিভুক্ত করবেন ৷ তিনি বলেন, "আমাকে প্রতারিত করা হয়েছে ৷ কারণ, আমাকে শুধুমাত্র শুনানির জন্য আমার উপস্থিত হতে ডাকা হয়েছিল ৷" পরে আদালত তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে সাজা শোনায় ৷ ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর 2022 সাল থেকে এই নিয়ে তৃতীয়বার সাজা হল ইমরানের ৷
রিপোর্ট অনুযায়ী, ইমরান ও তাঁর স্ত্রী বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছ থেকে 108টি উপহার পেয়েছিলেন, যার মধ্যে তাঁরা 58টি উপহার রেখে দিয়েছিলেন । রাষ্ট্রকে বাধ্যতামূলক মূল্য পরিশোধ করার সময়, তাঁরা এই উপহারগুলি অবমূল্যায়িত করেন । তোষাখানা (ফার্সি শব্দ, এর অর্থ ধনসম্পদ রাখার ঘর) পরিচালনাকারী নিয়মের অধীনে সরকারী কর্মকর্তারা অর্থের বিনিময়ে সরকারি উপহার নিজেদের কাছে রাখতে পারেন ৷ তবে এর জন্য প্রথমে উপহারটি জমা করতে হবে তোষাখানায় ৷ কিন্তু ইমরান ও তাঁর স্ত্রী হয় সেটা করেননি অথবা এর সঠিক অর্থ দেননি ৷
সংবাদসংস্থা - পিটিআই
আরও পড়ুন: