কলকাতা: সকালে ঘুম থেকে উঠেই পায়ের আঙুলে ব্যথা বা হাতের আঙুল ভাঁজ করতে না পারা, হাত পায়ের অস্থিসন্ধিগুলি ফুলে থাকা ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ হতে পারে বলে জানান চিকিৎসকরা ৷ ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়া মানে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ গ্রহণ করা প্রয়োজন ৷ তবে ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি খাদ্যতালিকার প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন ৷
শরীরে পিউরিনের বিপাকের পর যে বর্জ্য পদার্থ তৈরি হয় তাকে ইউরিক অ্যাসিড বলে । যখন শরীরে এর পরিমাণ অতিরিক্ত হয়ে যায় বা এটি পর্যাপ্ত পরিমাণে শরীর থেকে বের হতে পারে না, তখন এটি জয়েন্টগুলিতে বর্ধিত ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টালের আকারে জমা হতে শুরু করে ৷ যা গাউটের মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে । পিউরিন খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে বা শরীর নিজেই এটি তৈরি করে (Natural Ways to Reduce Uric Acid in the Body)।
যদিও কিছু গুরুতর ক্ষেত্রে, ওষুধ অবশ্যই প্রয়োজন হয়, তবে সঠিক পুষ্টি-সহ একটি খাদ্য খাওয়া এক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । জেনে নিন, কোন কোন খাবার ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে ?
কারি পাতা: এটি ফোলেটের একটি চমৎকার উৎস । কিছু গবেষণায় জানা গিয়েছে, ফোলেট গ্রহণ করলে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমে যায় ।
পেয়ারা: ভিটামিন সি-এর একটি চমৎকার উৎস পেয়ারা ইউরিক অ্যাসিড কমাতেও সাহায্য করে । ডায়েটে এটি অন্তর্ভুক্ত করে উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড এড়ানো যায় ।
হলুদ: হলুদ ভারতীয় রান্নায় ব্যবহৃত একটি জনপ্রিয় মশলা । হলুদ, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ ৷ এটি শরীরকে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য় করে ৷
শণ বীজ: ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত শণের বীজও ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায় ।
আদা: অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ আদাতে জিঞ্জেরল এবং শোগাওল নামক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ঠ্য রয়েছে, যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ।
লেবু: ভিটামিন সি যুক্ত লেবু শরীরে প্রবেশ করার পর ক্ষার হয়ে যায়, যার ফলে শরীরে ক্যালসিয়াম কার্বনেট তৈরি হতে থাকে । এই ক্যালসিয়াম ইউরিক অ্যাসিডের সঙ্গে মিশে এটিকে জল এবং অন্যান্য যৌগগুলিতে ভেঙে দেয় । এতে রক্ত কম অম্লীয় হয় এবং শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণও কমে যায় । এছাড়াও এন আই এইচ দ্বারা গবেষণায় ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায় প্রকাশিত হয়েছে ৷
গবেষণায় বলা হয়েছে, মানুষের মধ্যে, ইউরিক অ্যাসিড হল পিউরিন ক্যাটাবলিজমের চূড়ান্ত পণ্য, প্রধানত টিউবুলার ট্রান্সপোর্টারের মাধ্যমে কিডনি দ্বারা নির্গত হয় । এনজাইম জ্যান্থাইন অক্সিডেস (এক্সও) হাইপোক্সানথাইন থেকে জ্যান্থাইন এবং তারপর ইউরিক অ্যাসিডের অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে অনুঘটক করে ইউরিক অ্যাসিড তৈরির জন্য দায়ী ।
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6723425/
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷