নয়াদিল্লি, 20 জানুয়ারি: জামিন পেতে ইদানীং অভিযুক্তরা মিথ্যারও আশ্রয় নিচ্ছে কিংবা সত্যকে লুকিয়ে রাখছে ৷ শুক্রবার একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ এই কথা বলেছে ৷ শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতি বিক্রম নাথ ও রাজেশ বিন্দালকে নিয়ে গঠিত ওই বেঞ্চের বক্তব্য, জামিন পেতে অভিযুক্তরা সবরকম চেষ্টা করে যায় ৷ প্রয়োজনে আদালতকে বিভ্রান্ত করতেও পিছপা হয় না ৷ সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের নৈতিক অবক্ষয় হচ্ছে ৷ সেই কারণেই বারবার এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে আদালতকে ৷
2023 সালের মার্চে ওড়িশা হাইকোর্ট মাদক মামলায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তির জামিনের আবেদন বাতিল করে দেয় ৷ সেই সময় আদালত জানায় যে সংশ্লিষ্ট মামলার অপর অভিযুক্ত ওই বছর জানুয়ারিতে জামিন পান ৷ ওই বছর জুলাইতে সুপ্রিম কোর্টে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে জামিনের আবেদন করেন ওই অভিযুক্ত ৷ শুনানিতে বিলম্ব হওয়ায় তিনি আবার ওড়িশা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন ৷ এবার জামিন পেয়েও যান ৷ কিন্তু তিনি এই বিষয় সুপ্রিম কোর্টে জানাননি ৷ গত 6 ডিসেম্বর মামলা শুনানির জন্য উঠলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের তরফে জামিনের বিষয়টি শীর্ষ আদালতে জানানো হয় ৷
এর পর সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি খারিজ করে দেয় ৷ তবে মামলাকারীকে 10 হাজার টাকা জরিমানা করে ৷ আগামী 26 জানুয়ারির মধ্য়ে তা জমা দিতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ পাশাপাশি জানিয়েছে যে আগামিদিনে এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে কোনও অভিযুক্ত কতবার জামিনের আবেদন করেছেন, সেই সংক্রান্ত আবেদনে আদালত কী নির্দেশ দিয়েছে, তা বিস্তারিত জানাতে হবে ৷
কিন্তু জামিন পেতে মরিয়া হয়ে এভাবে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ৷ আদালত বলেছে, “গত 40 বছরে মূল্যবোধের অবনতি হয়েছে এবং এখন মামলাকারীরা আদালতকে বিভ্রান্ত করার জন্য যে কোনও পর্যায় পর্যন্ত যেতে পারেন । সত্যের প্রতি তাঁদের কোনও শ্রদ্ধা নেই ।’’ আর এটা যে আদালতের কাছে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং, সেই কথাও জানিয়েছে বেঞ্চ ৷
বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, “এখন আমরা সত্য ছাড়া অন্য কিছু শুনতে চাই ৷ সত্য ছাড়া কিছু সব পড়ুন ৷ সত্য ব্যতীত কিছু বলুন এবং সত্য ব্যতীত যা কিছু, সব বিশ্বাস করুন । এটা ঠিক বলা হয়ে থাকে যে মিথ্যা খুব মিষ্টি ৷ সত্য তিক্ত৷ তাই বেশিরভাগ মানুষ মিথ্যা বলতে পছন্দ করে ৷’’
আরও পড়ুন: