চেন্নাই, 28 জুলাই: গয়না আর টাকার লোভে 78 বছর বয়সি এক বৃদ্ধাকে খুন করল দম্পতি ! পরে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে একটি বস্তায় ভর্তি করে ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয় ৷ পুলিশি জেরায় খুনের কথা স্বীকারও করেছে ওই দম্পতি ৷
নিহত প্রৌঢ়া বিজয়া (78) চেন্নাইয়ের এমজিআর নগরের মায়িলাই শিবমূর্তি স্ট্রিটের বাসিন্দা ৷ গত 17 জুলাই কাজ থেকে আর বাড়ি ফেরেনি তিনি ৷ এরপরই তাঁর মেয়ে লগনায়াকি তাঁর খোঁজ করতে থাকে ৷ এরপরে, 19 তারিখে লগনায়াকি এমজিআর নগর থানায় মায়ের নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন ৷
অভিযোগে তাঁর মেয়ে জানিয়েছেন, "গত 17 জুলাই আমি কাজের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম ৷ আমি যখন বাড়ি ফিরে আসি, তখন থেকে আর মায়ের খোঁজ পাইনি ৷ বাড়ির মালিক জানিয়েছেন, তিনি একটি হোটেলে কাজ করতে গিয়েছিলেন ৷"
জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বিজয়ার পরনে ছিল সাদা শাড়ি, গলায় একটি একটি পুঁতির হার এবং কানে 8 গ্রামের গয়না ৷ এছাড়াও, তাঁর ব্যাগে বেশ কিছু নগদ টাকা এবং সোনার গয়না ছিল ৷ মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে বিজয়ার খোঁজ শুরু করে পুলিশ ৷
তদন্ত করতে গিয়ে, পুলিশ বিজয়ার প্রতিবেশী পার্থিবনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ৷ তবে তিনি সেই বাড়ি ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান ৷ যদিও পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় পরে মোবাইল ফোনের সিগন্যাল ধরে পার্থিবনকে ফের জেরা করে। তারা বিরুধুনগর এলাকায় লুকিয়ে ছিল বলে জানা গিয়েছে ৷ পরে জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি ধরা পড়ে এবং বিরুধুনগর পূর্ব থানার পুলিশ পার্থিবন-সঙ্গীতা দম্পতিকে গ্রেফতার করে।
পরে ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক বিরুধুনগরে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। জানা গিয়েছে, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে পার্থিবন এবং তার স্ত্রী সঙ্গীতা স্বীকার করে, তারাই বিজয়াকে হত্যা করেছে ৷ পরে তাঁর দেহ একটি বস্তায় বেঁধে যাবতীয় সোনার গয়না লোপাটও করেছে ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দম্পতি বিজয়ার মেয়ে লগনায়কির কাছ থেকে 20 হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল। পরে লগনায়কি একাধিকবার সেই টাকা শোধ করতে বললেও ওই দম্পতি দেয়নি ৷ পাশাপাশি সঙ্গীতা বিজয়ার ব্যাগে টাকা রাখতে দেখেছে বলেও জানায় পুলিশি জেরায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, সঙ্গীতা বিজয়ার কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়। বিজয়া চিৎকার করলে একটি লোহার রড নিয়ে বৃদ্ধার উপর হামলা চালায় ৷ এরপর পার্থিবন এবং সঙ্গীতা বিজয়াকে অজ্ঞান করে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে বস্তায় ভরে রাখে ৷ তদন্তে জানা গিয়েছে, পরে সাইদাপেট চেন্নাইয়ের ইস্ট জোন্স রোডের একটি ড্রেনে ফেলে দেয় টুকরো দেহাংশগুলি ৷ পুলিশ দেহাংশগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কেকে নগর সরকারি হাসপাতালে পাঠিয়েছে ৷