নয়াদিল্লি, 30 অক্টোবর: মহিলাদের জন্য সুরক্ষিত নয় দিল্লির রাস্তা ৷ এই ধারণাটি মানুষের মনে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে ৷ 2012 সালে নির্ভয়া কাণ্ডের পর এই ধারণাটি আরও দৃঢ় হয়ে যায় মানুষের মনে ৷ তবে মহিলাদের মন থেকে সেই ভয় দূর করার জন্য বিশেষ পরিষেবা চালু করে দিল্লির আম আদমি পার্টি (আপ) সরকার ৷ সরকারি বাসে মহিলাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য 'গোলাপি টিকিট'(পিঙ্ক টিকিট) চালু করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ৷ কিন্তু দিল্লির মহিলারা আজও সন্ধ্যায় বাসে যাত্রা করতে ভয় পান ৷ রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনেছে 'গ্রিনপিস ইন্ডিয়া' ৷
এই বছর 5 বছর পূর্ণ হল দিল্লি সরকারের 'পিঙ্ক টিকিট' প্রকল্প ৷ এই আবহে প্রকল্প সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে 'গ্রিনপিস ইন্ডিয়া' ৷ সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিকেল 5টার পর দিল্লির 77 শতাংশ মহিলা বাসে ভ্রমণ করতে অসুরক্ষিত বোধ করেন ৷ আবার 88 শতাংশ মহিলাদের মতে, গোলাপি টিকিটের জন্য বেসরকারি বাসে ভ্রমণে উৎসাহ পেয়েছেন তারা ৷
সোশাল মিডিয়ার একাধিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একটি সার্ভে চালায় 'গ্রিনপিস ইন্ডিয়া' ৷ সেই সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী, দিল্লির 45 শতাংশ মহিলা কখনও বাসে যাত্রা করেন না ৷ তবে 35 শতাংশ মহিলার রাস্তায় চলাচলের একমাত্র মাধ্যমই হল বাস ৷ আবার 2019 সালের অক্টোবরে গোলাপি টিকিট প্রকল্প চালু হওয়ার পর দিল্লির 25 শতাংশ মহিলা বাসেই যাতায়াত করে থাকেন ৷ এদের মধ্য়ে আবার 23 শতাংশ মহিলা সপ্তাহে 4 বার বাসেই যাত্রা করেন ৷
তবে সন্ধ্যার পর বাসে যাত্রা করতে কার্যত এড়িয়ে যান মহিলারা ৷ এর কারণ হিসাবে মূলত বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করাকেই দায়ী করেছেন মহিলারা ৷ তাঁদের মতে, সন্ধ্যা হয়ে গেলে রাস্তায় বাসের সংখ্য়া ক্রমশ কমতে থাকে ৷ ফলে বাসস্টপে ক্ষীণ আলোয় তাঁদের অপেক্ষা করতে হয় ৷ সেক্ষেত্রে নিরাপত্তায় একটি বড় প্রশ্ন চিহ্নের তৈরি হয় ৷
এই প্রসঙ্গে 87 শতাংশ মহিলাদের মতে, বিকেলের পর তাদের বাসের জন্য কমপক্ষে 10 মিনিট অপেক্ষা করতে হয় ৷ আবার 13 শতাংশ মহিলাদের জন্য অপেক্ষার সময় 30 মিনিট ৷ অর্থাৎ, এই সময়ের মধ্যে রাস্তায় একা দাঁড়িয়ে থাকা কোনও মতেই সুরক্ষিত নয় ৷
উল্লেখ্য, গোলাপি টিকিট প্রকল্পের আওতায় বিনা টিকিটেই বেসরকারি বাসে যাত্রা করতে পারেন দিল্লির মহিলারা ৷ তবে কেউ চাইলে টিকিটের জন্যও টাকা দিতে পারেন ৷ 'গ্রিনপিস ইন্ডিয়া'-এর প্রচারক আকিজ ফারুক বলেন, "সরকারের এই প্রকল্পের জন্য মহিলাদের বেসরকারি বাসে যাত্রা করার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে ৷ তবে এই প্রকল্পকে আরও সফল করে তুলতে সুরক্ষা ও বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার উপর সরকারকে আরও জোর দিতে হবে ৷"