হায়দরাবাদ: অনেক মহিলাই প্রতি বছর গাইনোকোলজিক্যাল ক্যানসারে আক্রান্ত হন ৷ যার মধ্যে রয়েছে এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার বা জরায়ু ক্যানসার, ডিম্বাশয়ের ক্যানসার ও স্তন ক্যানসার । যেখানে মহিলাদের মেনোপজের পরে এই নির্দিষ্ট ক্যানসারগুলি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে । কিন্তু মেনোপজের আগে মহিলাদের মধ্যে গাইনোকোলজিক্যাল ম্যালিগন্যান্সিও হতে পারে । অন্যদিকে পরিবারের সদস্যদের মধ্য়ে ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে অর্থাৎ জিনগতভাবেও এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে । তবে ভয় না করে ক্যানসার হওয়ার ব্যাপারে সচেতন ও সতর্ক থাকুন ।
গাইনোকোলজিক্যাল ক্যানসারে প্রায়ই লক্ষণগুলি অস্পষ্ট থাকে ৷ যা অন্যান্য রোগের মতো । কেবলমাত্র স্ক্রিনিংই সার্ভাইকাল এবং স্তন ক্যানসার শনাক্ত করতে পারে । তাই এই লক্ষণগুলি সনাক্ত করুন এবং গাইনোকোলজিস্টের সঙ্গে আলোচনা করুন । এটি প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার খুঁজে পাওয়া এবং সময়মতো চিকিৎসা করার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলবে ।
1) অস্বাভাবিক রক্তপাত: এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসারে আক্রান্ত 90 শতাংশেরও বেশি রোগীদের মধ্যে অনিয়মিত রক্তপাত ঘটে । আপনার যদি ইতিমধ্যেই মেনোপজ হয়ে থাকে তবে যে কোনও রক্তপাত এমনকি দাগও দেখা উচিত । অথবা মেনোপজ না হলেও প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয় বা পিরিয়ডের মধ্যে রক্তপাত হয় বা যৌন মিলনের সময় রক্তপাত হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ৷ এটি যোনি বা সার্ভাইকাল ক্যানসারের লক্ষণও হতে পারে ।
2) স্তনে পরিবর্তন: বেশিরভাগ স্তন ক্যানসার মহিলাদের মধ্যে পাওয়া যায় শেভিং, স্নান বা স্ক্র্যাচিং করার সময় । স্তনে শক্ত কোনও মাংসপিণ্ড অনুভব হলে সতর্ক থাকুন । স্তনবৃন্তের অসামঞ্জস্যতা, স্তনের অনুভূতি এবং চেহারার পরিবর্তন এবং স্তনের ত্বকের পরিবর্তনের দিকে মনোযোগ দিন ।
3) আপনার বাথরুম অভ্যাস পরিবর্তন: এমনকি আপনি যদি প্রচুর পরিমাণে তরল পান না করেন বা গর্ভবতী না হন তবে আপনার মূত্রাশয়ের উপর সব সময় চাপের অনুভূতি বা ঘন ঘন প্রস্রাব করার জন্য হঠাৎ তাগিদ একটি লক্ষণ হতে পারে ।
ক্যানসারের অন্যান্য লক্ষণ যা মহিলাদের উপেক্ষা করা উচিত নয়
পেটে ব্যথা: পেটে ক্রমাগত বা তীব্র ব্যথা ডিম্বাশয় বা অন্যান্য প্রজনন ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে ।
অন্ত্র বা মূত্রাশয়ের অভ্যাসের পরিবর্তন: কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া বা প্রস্রাব করতে অসুবিধার মতো অন্ত্র বা মূত্রাশয়ের অভ্যাসের কোনও পরিবর্তন অনুভব করা কোলরেক্টাল বা মূত্রাশয় ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে ।
ব্যাখ্যাতীত ওজন হ্রাস: যদি কোনও প্রচেষ্টা ছাড়াই আপনার ওজন কমে যায় তবে এটি ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে ৷ বিশেষ করে যদি আপনি খিদে কমে যাওয়া বা ক্লান্তি বোধ করেন ।
ত্বকের পরিবর্তন: আঁচিলের রঙ বা আকারের পরিবর্তন বা ত্বকের অন্যান্য ক্ষত একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা করা উচিত ।
ক্রমাগত কাশি: এক মাসের বেশি সময় ধরে থাকা কাশি বা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কর্কশ হওয়া গলার স্বর ফুসফুসের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে ।
এগুলির মধ্যে এক বা একাধিক উপসর্গ থাকলেই যে আপনার ক্যানসার আছে এমন নয় ৷ তবে যদি সেগুলি দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকে তবে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করাতে ভুলবেন না ।
আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় কোভিড শিশুদের স্থূলতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে: গবেষণা
(পরামর্শগুলি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে ৷ আপনার কোনও প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন)