ETV Bharat / sukhibhava

মাটিতে বসে খাওয়া পরিপাক ক্রিয়াসহ সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো - মাটিতে বসে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো

খাবার যাতে যথাযথভাবে হজম হয় এবং খাবার থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টিও আমরা পেতে পারি, তার জন্য উচিত হয় সুখাশনে (কমফর্ট পোজ়) বা পদ্মাসনে (লোটাস পজ়িশন) বসা ।

Sitting And Eating Is Good
Sitting And Eating Is Good
author img

By

Published : Dec 16, 2020, 9:02 AM IST

মাটিতে বসে খাবার খাওয়া একটি প্রাচীন ভারতীয় প্রথা, যা এখনও ভারতের নানা জায়গায় অনুসরণ করা হয় । আপনি নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন, বাড়ির বয়স্করা মাটিতে বসে শান্তভাবে খাবার খাওয়ার উপর জোর দেন, যাতে খাবারের সমস্ত পুষ্টি মেলে এবং অদ্ভূতভাবে চিকিৎসকরাও এটাই মনে করেন । কিন্তু আধুনিকতার যুগে বেশিরভাগ মানুষই হয় এই প্রথা মানেন না বা মানতে অস্বীকার করেন ।

ইন্দোরের এমজিএম মেডিকেল কলেজ এবং নেহরু চিলন্ড্রেন্স হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের পুষ্টিবিদ ড. সঙ্গীতা মালুর মতে, আমাদের খাদ্যাভাস অর্থাৎ আমরা কী খাই, কীভাবে খাই এবং কী রকম মানসিক অবস্থায় খাই, তা আমাদের শুধুমাত্র পরিপাক তন্ত্র নয় বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে । দাঁড়িয়ে খেলে পরিপাক ক্রিয়া ব্যাহত হয় । ড. সঙ্গীতা বলেন, দাঁড়িয়ে খাওয়ার তুলনায় বসে খাওয়া আমাদের কাছে বেশি আরামদায়ক মনে হয় এবং এটি আমাদের শরীর এবং মন দু’টিকেই শান্ত করে । সুতরাং, যদি আমরা বসে খাই, তাহলে খাবারটি গোটা পরিপাক ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় এবং এতে হজমশক্তি ভাল হয় এবং পরিপাক তন্ত্রের উপর বেশি ভার এসে পড়ে না ।

আবার অন্যদিকে, যদি আমরা দাঁড়িয়ে খাই, তাহলে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে খাবার দেহের পরিপাক ক্রিয়ার অন্তর্গত সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে যায় যার ফলে খাবার না যথাযথভাবে হজম হয়, উল্টে পরিপাকতন্ত্রের উপর চাপ বাড়ে । এর ফলে পাচনতন্ত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এবং দেহ জরুরি পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয় । এর থেকে বেশ কিছু রোগও হতে পারে ।

বসে খাওয়ার সঠিক উপায় -

ড. সঙ্গীতা বলেন, "আজকের দিনে বেশিরভাগ মানুষই ডাইনিং টেবিলে বসে খাবার খাওয়া পছন্দ করেন যা দাঁড়িয়ে খাওয়ার থেকে ভালো । কিন্তু খাবার যাতে যথাযথভাবে হজম হয় এবং খাবার থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টিও আমরা পেতে পারি, তার জন্য উচিত হয় সুখাশনে (কমফর্ট পোজ়) বা পদ্মাসনে (লোটাস পজ়িশন) বসা । এই ভঙ্গিতে বসে খেলে আমাদের পরিপাক প্রক্রিয়া পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয় না ।"

আরও পড়ুন - কামশক্তি হ্রাস পাচ্ছে, আপনার কি চিন্তিত হওয়া উচিত?

মাটিতে বসে খাওয়ার উপকারিতা -

  1. হৃদয় ভালো রাখে : মাটিতে বসে খেলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় এবং আমাদের হার্ট আরও ভালো কাজ করতে পারে ।
  2. মাংসপেশির প্রসারণের ফলে পরিপাক ক্রিয়া ভালো থাকে : খাওয়ার সময় যখন আমরা সুখাসন বা পদ্মাসনে বসি, আমরা সাধারণত সামনের দিকে ঝুঁকে খাবার গ্রহণ করি আর ফের আগের অবস্থায় ফিরি আসি, তা গেলার জন্য । এইভাবে একবার সামনে আরেকবার পিছনে শরীর চলাচল করায় আপনার পেটের মাংসপেশী আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং প্রসারিত হয়, যার জন্য আমাদের পরিপাক প্রক্রিয়া আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারে আর স্বাস্থ্যও বজায় থাকে ।
  3. জয়েন্ট তথা সন্ধিস্থলের জন্য উপকারী : পদ্মাসন এবং সুখাসনের ভঙ্গিমা কেবলমাত্র পরিপাক ক্রিয়াকেই সক্রিয় করে না, বরং জয়েন্ট তথা সন্ধিস্থলগুলিকেও নমনীয় করে তোলে । এর ফলে গতিবিধি সচল থাকে, যাতে মাটিতে কোনও ব্যথা ছাড়াই বসতে সুবিধা হয় । এর পাশাপাশি, এই প্রক্রিয়ায় মানুষ ‘ডি জেনারেটিভ’ রোগ-ব্যধি যেমন আর্থাইটিস এবং অস্ট্রিওপোরেসিসের থেকে দূরে থাকতে পারে ।
  4. ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে : সুখাসন বা পদ্মাসনে বসলে স্নায়ুর উপর প্রভাব পড়ে, মস্তিষ্ক শান্ত হয় তাই মানুষ এই ভঙ্গিতে বসে ধ্যান করেন । যেহেতু এই ভঙ্গিতে বসে খেলে খাবার যথাযথভাবে পরিপাক হয় তাই মানুষ দরকারের থেকে বেশি খেতে পারে না । তাই এতে অতিরিক্ত খাওয়া হয় না এবং ওজনও বাড়ে না ।
  5. শিরদাঁড়ার সমস্যা দূর করে : এই প্রাচীন প্রথা অনুসারে খাবার খেলে শিরদাঁড়া এবং পিঠের ব্যাথা সংক্রান্ত সমস্যা দূরে থাকে । যাদের এই ধরনের ব্যাথা হয়, তাদের তা হওয়ার কারণ ভুল ভঙ্গিতে বসে খাওয়া । কিন্তু এই ভঙ্গিতে মাটিতে বসে খাবার খেলে তাদের এই সমস্যাও অনেকটাই কমে যাবে ।

মাটিতে বসে খাবার খাওয়া একটি প্রাচীন ভারতীয় প্রথা, যা এখনও ভারতের নানা জায়গায় অনুসরণ করা হয় । আপনি নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন, বাড়ির বয়স্করা মাটিতে বসে শান্তভাবে খাবার খাওয়ার উপর জোর দেন, যাতে খাবারের সমস্ত পুষ্টি মেলে এবং অদ্ভূতভাবে চিকিৎসকরাও এটাই মনে করেন । কিন্তু আধুনিকতার যুগে বেশিরভাগ মানুষই হয় এই প্রথা মানেন না বা মানতে অস্বীকার করেন ।

ইন্দোরের এমজিএম মেডিকেল কলেজ এবং নেহরু চিলন্ড্রেন্স হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের পুষ্টিবিদ ড. সঙ্গীতা মালুর মতে, আমাদের খাদ্যাভাস অর্থাৎ আমরা কী খাই, কীভাবে খাই এবং কী রকম মানসিক অবস্থায় খাই, তা আমাদের শুধুমাত্র পরিপাক তন্ত্র নয় বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে । দাঁড়িয়ে খেলে পরিপাক ক্রিয়া ব্যাহত হয় । ড. সঙ্গীতা বলেন, দাঁড়িয়ে খাওয়ার তুলনায় বসে খাওয়া আমাদের কাছে বেশি আরামদায়ক মনে হয় এবং এটি আমাদের শরীর এবং মন দু’টিকেই শান্ত করে । সুতরাং, যদি আমরা বসে খাই, তাহলে খাবারটি গোটা পরিপাক ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় এবং এতে হজমশক্তি ভাল হয় এবং পরিপাক তন্ত্রের উপর বেশি ভার এসে পড়ে না ।

আবার অন্যদিকে, যদি আমরা দাঁড়িয়ে খাই, তাহলে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে খাবার দেহের পরিপাক ক্রিয়ার অন্তর্গত সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে যায় যার ফলে খাবার না যথাযথভাবে হজম হয়, উল্টে পরিপাকতন্ত্রের উপর চাপ বাড়ে । এর ফলে পাচনতন্ত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এবং দেহ জরুরি পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয় । এর থেকে বেশ কিছু রোগও হতে পারে ।

বসে খাওয়ার সঠিক উপায় -

ড. সঙ্গীতা বলেন, "আজকের দিনে বেশিরভাগ মানুষই ডাইনিং টেবিলে বসে খাবার খাওয়া পছন্দ করেন যা দাঁড়িয়ে খাওয়ার থেকে ভালো । কিন্তু খাবার যাতে যথাযথভাবে হজম হয় এবং খাবার থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টিও আমরা পেতে পারি, তার জন্য উচিত হয় সুখাশনে (কমফর্ট পোজ়) বা পদ্মাসনে (লোটাস পজ়িশন) বসা । এই ভঙ্গিতে বসে খেলে আমাদের পরিপাক প্রক্রিয়া পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয় না ।"

আরও পড়ুন - কামশক্তি হ্রাস পাচ্ছে, আপনার কি চিন্তিত হওয়া উচিত?

মাটিতে বসে খাওয়ার উপকারিতা -

  1. হৃদয় ভালো রাখে : মাটিতে বসে খেলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় এবং আমাদের হার্ট আরও ভালো কাজ করতে পারে ।
  2. মাংসপেশির প্রসারণের ফলে পরিপাক ক্রিয়া ভালো থাকে : খাওয়ার সময় যখন আমরা সুখাসন বা পদ্মাসনে বসি, আমরা সাধারণত সামনের দিকে ঝুঁকে খাবার গ্রহণ করি আর ফের আগের অবস্থায় ফিরি আসি, তা গেলার জন্য । এইভাবে একবার সামনে আরেকবার পিছনে শরীর চলাচল করায় আপনার পেটের মাংসপেশী আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং প্রসারিত হয়, যার জন্য আমাদের পরিপাক প্রক্রিয়া আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারে আর স্বাস্থ্যও বজায় থাকে ।
  3. জয়েন্ট তথা সন্ধিস্থলের জন্য উপকারী : পদ্মাসন এবং সুখাসনের ভঙ্গিমা কেবলমাত্র পরিপাক ক্রিয়াকেই সক্রিয় করে না, বরং জয়েন্ট তথা সন্ধিস্থলগুলিকেও নমনীয় করে তোলে । এর ফলে গতিবিধি সচল থাকে, যাতে মাটিতে কোনও ব্যথা ছাড়াই বসতে সুবিধা হয় । এর পাশাপাশি, এই প্রক্রিয়ায় মানুষ ‘ডি জেনারেটিভ’ রোগ-ব্যধি যেমন আর্থাইটিস এবং অস্ট্রিওপোরেসিসের থেকে দূরে থাকতে পারে ।
  4. ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে : সুখাসন বা পদ্মাসনে বসলে স্নায়ুর উপর প্রভাব পড়ে, মস্তিষ্ক শান্ত হয় তাই মানুষ এই ভঙ্গিতে বসে ধ্যান করেন । যেহেতু এই ভঙ্গিতে বসে খেলে খাবার যথাযথভাবে পরিপাক হয় তাই মানুষ দরকারের থেকে বেশি খেতে পারে না । তাই এতে অতিরিক্ত খাওয়া হয় না এবং ওজনও বাড়ে না ।
  5. শিরদাঁড়ার সমস্যা দূর করে : এই প্রাচীন প্রথা অনুসারে খাবার খেলে শিরদাঁড়া এবং পিঠের ব্যাথা সংক্রান্ত সমস্যা দূরে থাকে । যাদের এই ধরনের ব্যাথা হয়, তাদের তা হওয়ার কারণ ভুল ভঙ্গিতে বসে খাওয়া । কিন্তু এই ভঙ্গিতে মাটিতে বসে খাবার খেলে তাদের এই সমস্যাও অনেকটাই কমে যাবে ।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.