কোভিড-19 প্যানডেমিক 2020 সালে বিশ্বজুড়ে চাকরির বাজারকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে । লক্ষ লক্ষ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন আর বাকিদের ক্ষেত্রে অফিস বন্ধ থাকায় ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে হয়েছে । যাদের চাকরিতে সবচেয়ে বেশি শারীরিক সংস্পর্শ প্রয়োজন নয়, তাদের ক্ষেত্রেই বেশি প্রভাব পড়েছে । বিশ্বব্যাপী কর্মশক্তির অন্তত 25 শতাংশের চাকরি বদলের প্রয়োজন প্যানডেমিকের আগের সময়ের তুলনায় বর্তমানে বেশি দেখা দিয়েছে । এই পরিস্থিতিতে নতুন নতুন প্রযুক্তি অধিগ্রহণের চাহিদা চোখে পড়েছে যা নতুন ধরনের চাকরি, কেরিয়ার এবং ভূমিকার খোঁজ দিয়েছে, যার বেশিরভাগই অটোমেশন, ডিজিটাল প্রযুক্তি, ডেটা সিকিউরিটি এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত । কাজের ভবিষ্যত আজ দক্ষতার বিবিধ বিচরণ দাবি করে, যা বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হতে সক্ষম । এই দক্ষতার তালিকায় রয়েছে প্রযুক্তিগত দক্ষতা, শিল্প পরিচালনার বিশেষ দক্ষতা এবং বাণিজ্য করার দক্ষতা । গোটা পৃথিবী যখন লকডাউনের আওতায় চলে গিয়েছিল, যেভাবে আমরা কাজ করেছি, অনেক কিছু শিখেছি, দোকান-হাট করেছি, সমাজের সঙ্গে মিশেছি এবং নিজেদের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা নিজেরাই করেছি, তা সম্ভবত ভবিষ্যতেও করতে হতে পারে ।
এই প্যানডেমিক বিশ্বজুড়ে নতুন নতুন ট্রেন্ডের সূচনা করেছে যেমন ওয়ার্ক ফ্রম হোম, ই-কমার্স, ভার্চুয়াল মিটিং, অনলাইন এডুকেশন এবং অটোমেশন । বহু সংস্থা পরিকল্পনা করেছে ‘রিমোট’ এবং ‘অন-সাইট’ ওয়ার্কিংয়ের নতুন ধরনের মেলবন্ধন কেমন কাজ করে তা দেখতে । এটি এক ধরনের হাইব্রিড, ভার্চুয়াল মডেল যেখানে কিছু কর্মচারীরা ওই চত্বরেই কাজ করে আর বাকিরা কাজ করে বাড়ি থেকে । এই নতুন মডেল প্রতিভাদের একজোট করতে, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে, ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গিয়ে কাজ করতে, খরচ কমাতে এবং কাজের ক্ষেত্রে আরও বেশি নমনীয়তা প্রয়োগ করতে সাহায্য করে । উদাহরণস্বরূপ, বিশ্বজুড়ে বর্তমানে বিজ্ঞানীরা চান, এই ধরনের ভার্চুয়াল মিটিংয়ের চল স্থায়ী হোক, কোভিড প্যানডেমিকের পরও । ‘নেচার’ ম্যাগাজিনের নতুন সমীক্ষায় এটাই বলা হয়েছে ।
ম্যাককিনসে-র সাম্প্রতিক রিপোর্ট ‘দ্য ফিউচার অফ ওয়ার্ক আফটার কোভিড-19’ অনুযায়ী, বিশ্বের আটটি ‘ফোকাসড’ দেশ যেমন চিন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, জাপান, স্পেন, ব্রিটেন এবং আমেরিকায় 100 মিলিয়নেরও বেশি কর্মী বা আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে, প্রতি 16 জনের মধ্যে একজন কর্মী, 2030 সালের মধ্যে ভিন্ন ধরনের পেশা নিজের জন্য খুঁজে নেবে । একজোট হয়ে এই আটটি দেশ বিশ্বে মোট জনসংখ্যার অন্তত অর্ধেক এবং বিশ্বব্যাপী জিডিপির 62 শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে । কোভিড-19 প্যানডেমিক অন্তত 1.8 কোটি ভারতীয়কে 2030 সালের মধ্যে নতুন কোনও পেশা খুঁজে নিতে বাধ্য করবে বলেই জানাচ্ছে ম্যাককিনসের রিপোর্ট ।
আরও পড়ুন : করোনা প্যানডেমিক এবং লকডাউন কি স্বাস্থ্য পরিষেবায় কোনও ব্যাঘাত ঘটিয়েছে?
প্যানডেমিকের সময় ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোমে’ সদর্থক অভিজ্ঞতা হওয়ার কারণে বহু কোম্পানি পরিকল্পনা করছে, পরিবর্তনশীল কাজের জায়গাই বেছে নিতে । ম্যানকিনসে 2020 সালের আগস্ট মাসে 278 জন এক্সিকিউটিভ-এর উপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে, বেশিরভাগ সংস্থাই অফিসের কাজের জায়গা 30 শতাংশের মতো কমিয়ে ফেলতে চাইছে । আর তাই রেস্তোরাঁ এবং গণপরিবহণের চাহিদা ক্রমশ কমে আসতে পারে । ম্যাককিনসের সফর সংক্রান্ত পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় 20 শতাংশের মতো ‘বাণিজ্য সফর’ যা বিমান পরিবহণ সংস্থাগুলির জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় ক্ষেত্র ছিল, পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে । এসবের প্রভাব এসে পড়তে পারে বিমানসীমায়, বিমানবন্দরে, আতিথেয়তা ক্ষেত্রে এবং খাদ্য পরিষেবায় । অন্যান্য ভার্চুয়াল আর্থিক লেনদেন যেমন টেলিমেডিসিন, অনলাইন ব্যাঙ্কিং এবং বিনোদন স্ট্রিমিংও বাড়বে । উদাহরণস্বরূপ, প্র্যাক্টো, যা একটি ভারতীয় টেলি-হেলথ সংস্থা, এর মাধ্যমে অনলাইনে ডাক্তারি পরামর্শ 2020 সালের এপ্রিল এবং নভেম্বর মাসের মধ্যে 10 গুণ বেড়েছে ।
2025 সালের মধ্যে লক্ষ লক্ষ নতুন ভূমিকা অবতীর্ণ হতে পারে, যা নতুন ধরনের শ্রম দাবি করবে মানুষ, যন্ত্র এবং অ্যালগরিদমের মিশেলে তৈরি নয়া বিভাগের কাছ থেকে । যেসব পেশাগত ভূমিকার চাহিদা বাড়ছে, সেগুলি হল ডেটা অ্যানালিস্ট, ডেটা সায়েন্টিস্ট, এআই, মেশিন লার্নিং স্পেশালিস্ট এবং রোবোটিকস ইঞ্জিনিয়ার । ‘ফিউচার অফ জবস 2020’ বিষয়ে ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’-একটি রিপোর্টের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, 2025 সালের মধ্যে 85 মিলিয়ন চাকরি হারিয়ে যেতে পারে এবং তা ন্যস্ত হতে পারে মানুষ এবং মেশিনের পরিশ্রমের উপর । রিপোর্টে আরও দেখানো হয়েছে, ক্রমশ গুরুত্ব বাড়ছে মানুষের ভূমিকার, বিশেষ করে মার্কেটিং, সেলস এবং উৎপাদনক্ষেত্রে ।
নতুন কাজ, ভূমিকা এবং কেরিয়ার
সিআইও ম্যাগাজিনের মতে, নতুন নতুন চাকরি যেমন পেশাদার নিরাপত্তারক্ষী, ক্লাউড আর্কিটেক্ট, ডেটাবেস অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, প্রোগ্যামার অ্যানালিস্ট, সিস্টেমস অ্যানালিস্ট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনস ডেভলপার, নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, সফটওয়্যার ডেভলপারদের চাহিদা বাড়ছে । আটশোরও বেশি এইচআর নেতাদের উপর হওয়া গার্টনার সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে সংগঠনের 32 শতাংশই পূর্ণমেয়াদের কর্মচারীদের বদলে দিয়ে তাদের স্থানে তত কর্মীদের আনছে, খরচ বাঁচানোর জন্য । গার্টনারের সাম্প্রতিক সমীক্ষা আরও জানাচ্ছে যে, এর মধ্যে 48 শতাংশ কর্মচারী দেরিতে হলেও দূরতম এলাকায় ফের কাজ শুরু করবে, অন্তত পার্টটাইম কাজ হলেও করবে, কোভিড-19 এর পরে, প্যানডেমিকের আগের 30 শতাংশের তুলনায় ।
‘এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ’-এর নতুন রিপোর্টে দেখা গিয়েছে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে 32 থেকে 50 মিলিয়ন চাকরি বিশ্বব্যপী ক্ষেত্রে সহায়তা পেতে পারে । আর এতে স্বাস্থ্য সংকটও কমে যা বাণিজ্যক্ষেত্রে মানুষের দ্বারা তৈরি হয়ে থাকে । ম্যাককিনসের 2020 সালের গ্লোবাল এক্সিকিউটিভসদের এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে, যে সমস্ত সংস্থা ডিজিটাল প্রযুক্তিতে দ্রুতগতিতে লগ্মি করছে প্যানডেমিকের কারণে, এর ফলে তারা অনলাইনে আরও বেশি ক্রেতার মুখোমুখি হতে পারছে । এতে তাদের ব্যবসা বাড়ছে, শারীরিক শ্রম কমছে । নতুন নতুন ট্রেন্ড যেমন ‘ডিজিটাল ওয়ার্কার্স’ (এআই সম্বলিত সফটওয়্যার কর্মসূচি) লাগু করা হবে বেশি সংখ্যায় যাতে তা মানুষের কাজে সহযোগিতা করতে পারে (এবং কখনও কখনও মানুষের বদলে কাজে নিয়োজিত হতে পারে), কিছু কিছু প্রশাসনিক কাজের জন্য এবং ‘ভাইরাস-বান্ধব’ গ্রাহক পরিষেবা সংক্রান্ত কথাবার্তার জন্য । ডিজিটাল রূপান্তর সংক্রান্ত উদ্যোগও নতুন ভূমিকার চালকশক্তি হিসাবে কাজ করছে ।
লিংকডইন জব পোস্টের মধ্যে বেশিরভাগেরই চাহিদা (2021 এর ফেব্রুয়ারি) দেখা গিয়েছে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, নথিবদ্ধ নার্স, সেলসপার্সন, প্রোজেক্ট ম্যানেজার, ফুড ডেলিভারি চালক, ফুল স্ট্যাক ইঞ্জিনিয়ার, অ্যানিম্যাল গ্রুমার, জাভাস্ক্রিপ্ট ডেভলপার, ডেভঅপস ইঞ্জিনিয়ার প্রভৃতির । আর সবচেয়ে দ্রুতগতিতে যে যে পেশাগুলির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে লিংকডইন জব পোস্টের হিসাবে (2021 সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত), তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অ্যানিম্যাল গ্রুমার, ফার্মেসি টেকনিশিয়ান, রিটেল সেলসপার্সন, ওয়্যারহাউস অ্যাসোসিয়েট, সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার, ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইনার, ডেটা আর্কিটেক্ট, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার, সার্ভিস অ্যাসোসিয়েট প্রভৃতি । 2021 সালের আইবিএম-এর রিপোর্ট ‘স্কিলস ট্রান্সফর্মেশন ফর দ্য 2021 ওয়ার্কপ্লেস’ অনুযায়ী, পড়ুয়াদের কাছ থেকে 2021 সালে চাকরিদাতারা যে বিশেষ বিশেষ দক্ষতাগুলি চাইছেন, তা হল বিকাশমুখী মানসিকতা, স্থায়ী শিক্ষালাভ, সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি, অস্তিত্ত্বরক্ষার দক্ষতা, চারিত্রিক দৃঢ়তা, কৌতূহল, নমনীয়তা, নিষ্ঠা প্রভৃতি । সবচেয়ে দ্রুত বেড়ে ওঠা, 2021 সালের সাইবারসিকিউরিটি স্কিলগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল অ্যাপ্লিকেশন ডেভলপমেন্ট সিকিউরিটি, ক্লাউড সিকিউরিটি, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, থ্রেট ইন্টেলিজেন্স, ইনসিডেন্ট রেসপন্স, ডেটা প্রাইভেসি, অ্যাকসেস ম্যানেজমেন্ট, সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি এবং হেলথ ইনফর্মেশন সিকিউরিটি ।
উপসংহার
আগামী কিছু বছরে কাজের পরিকাঠামো আমূল বদলে যাবে । তবে তা কোভিডের জন্য শুধু নয় । বরং গভীরভাবে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে । আরও বেশি বেশি মানুষ ওয়ার্ক ফ্রম হোম করবে আর অফিসের সকাল ন'টা থেকে বিকেল পাঁচটার কাজের হার কমতে থাকবে । এমনকী কর্মচারীরাও এটাই চান কারণ এতে তাদের খরচ বাঁচবে । ভার্চুয়াল মিটিং বাণিজ্য সংক্রান্ত সফরের উপর প্রভাব ফেলবে এবং মানুষ আরও বেশি করে জুমিং, স্কাইপিং প্রভৃতিতে মনোনিবেশ করবে । ‘ফিউচার অফ জব সার্ভে’-র তথ্য বলছে যে অন্তত 50 শতাংশ কর্মচারীরা পুর্নদক্ষ হতে চান , গত বছরের 4 শতাংশের তুলনায় । কর্মচারীরা বর্তমানে তাদের স্কিল ডেভলপমেন্ট-এর ভূমিকা চিহ্নিত করতে সমর্থ হচ্ছেন এবং এতে তাদের তাগিদ বাড়ছে ।
রোবোটিক্স, অটোমেশন, ডিজিটালাইজেশন এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো কিছু কিছু প্রযুক্তিক্ষেত্রের উদ্ভব হচ্ছে, যারা একত্রিত হয়ে এমন একটি কাজের পরিবেশ গড়ে তুলছে, যেখানে কর্মচারীরা এই সমস্ত দক্ষতা অর্জন ও অধিগ্রহণ করে 21 শতকের উপযোগী কাজের জায়গার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে । ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের দেওয়া নতুন ‘ফিউচার অফ জবস’ রিপোর্ট অনুযায়ী 2025 সালের মধ্যে 85 মিলিয়ন চাকরি 26 টি দেশ থেকে মুছে যাবে । আর নতুন ভাবে কাজের তালিকায় যুক্ত হবে 97 মিলিয়ন চাকরি । কর্মচারীদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের জন্য সংস্থা এবং সরকার, উভয়েরই উচিত সামাজিক নিরাপত্তাজনিত পদক্ষেপ জারি নিশ্চিত করা, পুর্নদক্ষতা এবং দক্ষতাবৃদ্ধি সংক্রান্ত কর্মসূচির আয়োজন করা ।
উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নতুন নতুন কলেজ স্নাতকদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি থাকবে এবং 2020 সালে স্নাতক হওয়া অনেকেই যারা 2021 এ কাজের খোঁজ করছেন, কর্মহীনই থাকবেন । বর্তমানে 2021 সালে যারা স্নাতক হয়েছেন, তাদের উচিত ক্যাম্পাসিংয়ে কাজের জগতের প্রতিযোগিতার স্বাদ নিতে ইনটার্নশিপ এবং মিনি প্রোজেক্টের মাধ্যমে কাজের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা । সফল কেরিয়ারের জন্য 2021 সালে স্নাতক হওয়া পড়ুয়াদের দরকার নেটওয়ার্কিংয়ের উপর নির্ভর করা, যা অত্যন্ত সক্রিয় ।
আরও পড়ুন : "লকডাউন কোনও সমাধান নয়, কোভিডের সঙ্গেই বাঁচা শিখতে হবে"
লিংকডইন এর 2020 ওয়ার্কপ্লেস লার্নিং রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী 3 থেকে 5 বছরে দক্ষতার মধ্যে থেকে যাওয়া ফাঁক পূর্ণ করতে হবে । নচেৎ তা উদ্ভাবনী ক্ষমতা, গ্রাহক সন্তুষ্টি, পণ্য উৎপাদন, প্রভৃতির উপর প্রভাব ফেলবে । লিংকডইন এর রিপোর্টে এ কথা বলা আছে যে বিশ্বব্যাপী সংস্থাগুলির মধ্যে অন্তত 57 শতাংশই নেতৃত্বদানের শক্তি এবং ম্যানেজমেন্ট স্কিলসের উপর নির্ভর করে । 42 শতাংশ নির্ভর করে সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা এবং চিন্তাশক্তির উপর আর 40 শতাংশ কমিউনিকেশন স্কিলসের উপর ।
কোভিড-19 প্যানডেমিকের ফলে 195 মিলিয়ন চাকরি হারানোর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল । পাশাপাশি এর ফলে শিক্ষায় ব্যাঘাত ঘটেছে, তরুণ-তরুণীদের কোভিড উত্তর পরিস্থিতিতে শিক্ষাগ্রহণ, উপার্জন করা এবং অস্তিত্ত্বরক্ষার পাঠ পড়িয়ে গিয়েছে আর ভবিষ্যতেও এ দিকে মনোযোগ দরকার । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দ্রুত যে প্রযুক্তিগত দক্ষতাগুলি দরকার, তা পুরনো হয়ে পড়ছে, কারণ প্রযুক্তির জগতে দ্রুত বদল ঘটছে এবং অটোমেশনের গতিও বাড়ছে । ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’ মনে করে, 2022 সালের মধ্যে সমস্ত কর্মচারীর মধ্যে অন্তত 54 শতাংশের পুনর্দক্ষতা লাভ এবং দক্ষতাবৃদ্ধির প্রয়োজন পড়বে পরিবর্তিত কাজের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য । এই সমস্ত কিছু বিশ্বব্যাপী সংস্থা ও অর্থনীতিগুলির উপর প্রচণ্ড চাপ ফেলবে এবং বিশ্বব্যাপী চাকরির বাজারেও তা বোঝা যাবে । সুতরাং, বর্তমানে এবং বাস্তবে, তরুণ-তরুণীদের উচিত দ্রুত নতুন স্কিল শিখে নেওয়া, তা অধিগ্রহণ করা, মানসিক দৃঢ়তা আনা এবং এই প্যানডেমিকের সুযোগ নিয়ে বিশ্বব্যাপী বাস্তবতার সম্মুখীন হওয়া ।
কাজের জায়গায় ‘মেশিন’-এর উপস্থিতি এবং ‘নতুন প্রযুক্তি’র ব্যবহার বাধ্যতামূলক হবে এবং ইতিমধ্যেই এর প্রবণতা বিশ্বে দ্রুত বাড়ছে । গার্টনারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে ছোট ও বড় সবক্ষেত্রেই রোবটদের সংখ্যা 2015 সালের 4.9 বিলিয়ন থেকে বেড়ে 2025 সালে 30 বিলিয়নে এসে দাঁড়াবে । সুতরাং, সরকার এবং উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির উচিত আগে থেকে পড়ুয়াদের প্রস্তুত করে রাখা যাতে তারা কাজের বাজারে ভবিষ্যতের এই সমস্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে পারে এবং ভবিষ্যতে মেশিনের সঙ্গে যাতে এরা মোকাবিলা করতে পারে, তার জন্য এদের এখন থেকেই দক্ষ করে তুলতে হবে ।