কলকাতা, 26 নভেম্বর: ওবেসিটি এই নাম বর্তমানে বহু চর্চিত । এই রোগের শিকার এখন 8 থেকে 80 সকলেই । কিন্তু কী এই রোগ ? শরীরে অতিরিক্ত মেদ বা চর্বিজাতীয় পদার্থ জমা হলে ওবেসিটি বা অতিস্থূলতা অবস্থার সৃষ্টি হয় । এর ফলে শরীরে ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে । এমনকি বহু বাচ্চাও এখন এই রোগের শিকার । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, 1975 থেকে 2016 এই সময়কালে পাঁচ থেকে 19 বছর বয়সি শিশু-কিশোরদের মধ্যে স্থূলতার সমস্যা বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে । যেখানে 1975 সালে স্থূলতায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ছিল চার শতাংশ সেখানে 2016 সালে এই পরিসংখ্যান বেড়ে দাঁড়ায় 18 শতাংশ ।
অত্যধিক মাত্রায় ক্যালোরি যুক্ত খাবার খাওয়া এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব এটাই ওবেসিটির মূল কারণ হিসাবে ধরা হয় । বর্তমানে বহু মা-বাবা তাদের সন্তানদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার জন্য ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন হেলথ ড্রিংক খাওয়ানোর অভ্যাস করেন । তার ফলে শিশুর শরীরে ক্যালোরির পরিমাণ বেড়ে যায় বলেই মত চিকিৎসকদের । কিন্তু এই অত্যাধিক ক্যালরি কি ডেকে আনে বিপদ ? এই নিয়ে শনিবার একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল অ্যাবোট এর পক্ষ থেকে । সেখানে উপস্থিত ছিলেন পেডিয়াট্রিক বিভাগের চিকিৎসক ডক্টর শুভাশিস রায় । তিনি বলেন, "পুষ্টিকর জল কখনওই শিশুদের জন্য ভালো না । এখনকার বাবা মেয়েরা বাজার থেকে যেকোনও একটা হেলথ ড্রিংক কিনে এনে বাচ্চাদের খাইয়ে দিচ্ছে । ভাবছে এতে বচ্ছর পুষ্টি অনেক হারে বেড়ে যাবে । কিন্তু আদতে তা নয় । বরং এর থেকে বাড়ির তৈরি খাবার বাচ্চাদের অনেক গুণ ভালো । "
এই বিষয়ে শিকাগোর অধ্যাপক তথা চিকিৎসক পেড্রো অ্যালারকন বলেন, " বর্তমানে বাচ্চারা অতিরিক্ত কুকিজ, চিপস, চকলেট, পাউরুটি, খাওয়ার ফলে তাদের মধ্যে অতিরিক্ত ক্যালোরি তৈরি হয় । এছাড়া রয়েছে জাঙ্ক ফুড । জাঙ্ক ফুড মানেই অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার । এক গ্রাম প্রোটিন থেকে আসে 4 ক্যালোরি কিন্তু এক গ্রাম ফ্যাট থেকে আসে 9 ক্যালোরি । আর সেই ক্যালরি সম্পূর্ণভাবে ওই শিশুর মধ্যে জমা থাকে । পরবর্তীকালে সেই থেকে তৈরি হয় সমস্যা ।"
তবে এই আলোচনা সভায় বারবার বলা হয়েছে শিশুদের পুষ্টিকর ডায়েটের কথা । কিন্তু এই পুষ্টিকর ডায়েট কী ? এই বিষয় মেডিক্যাল অ্যান্ড সায়েন্টিফিক অ্যাফেয়ার্স এর চিকিৎসক গণেশ কাধে বলেন, " শিশুদের ম্যাক্রো এবং মাইক্রো প্রশ্নের এটি ভালো মিশ্রণ প্রয়োজন যা পাঁচটি খাদ্য গ্রুপ থেকে আসে শাকসবজি, ফল, প্রোটিন, দুধ এবং খাদ্যশস্য । তাই এই সব ধরনের খাবার যে মিশিয়ে বাচ্চাকে দেওয়া হয় তাহলে শিশুর মধ্যে একটা ব্যালেন্স ডায়েট তৈরি হবে ।" তাই বর্তমানে বহু বাচ্চার দুধ, সবজি ও ফল খেতে অনীহা দেখা যায় । সেক্ষেত্রে চিকিৎসক কাধের মত, যদি ওই বাচ্চাকে আনন্দ সহকারে কোনও খাবার বানিয়ে দেওয়া হয় এবং সেই খাবার বানানোর মধ্যে সে নিজেও যদি যুক্ত থাকে তাহলে ছোট থেকে তার সমস্ত কিছু খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হবে ।
আরও পড়ুন: