হায়দরাবাদ : ভিটামিন ডি ঠিক কী কারণে অপরিহার্য ? গর্ভাবস্থা বা গর্ভধারণের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক আছে কী ? কীভাবে বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব হচ্ছে কি না ৷ আর কীভাবেই বা জানবেন এর জন্য় কী করা জরুরি? আসুন আজ দেখে নেওয়া এই সংক্রান্ত একগুচ্ছ প্রশ্নের উত্তর ৷ ভিটামিন ডি-এর সবচেয়ে সাধারণ প্রকারটি হল কোলেক্যালসিফেরল যা সাধারণত ত্বকে থাকে ৷ এছাড়া কোলেক্যালসিফেরল কিছু খাবারেও পাওয়া যায় ৷ ভিটামিন ডি-এর প্রেসক্রিপশন ফর্মটি হল এরগোক্যালসিফেরল বা ভিটামিন ডি 2 ৷ এছাড়া রয়েছে ভিটামিন ডি 3 ৷
আমরা যদি একটি নির্দিষ্ট সময় রোদে কাটাই তাহলেই ভিটামিন ডি-এর প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটে যেতে পারে ৷ তবে এতখানি সময় পান না অনেকেই ৷ এছাড়া ত্বকের রঙ কালো হলে বা ওজন বেশি হলেও অনেকসময় ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হতে শুরু করে ৷ অনেক মহিলা যাঁরা গর্ভধারণের জন্য চেষ্টা করছেন তাঁদের ক্ষেত্রেও এই অভাব ঘটতে পারে (How Vitamin D Deficiency Affects Health)৷ আসুন দেখে নেওয়া যাক, ভিটামিন ডি সংক্রান্ত কয়েকটি পরিচিত প্রশ্ন এবং তার উত্তর :
ভিটামিন ডি-এর সঙ্গে ফার্টিলিটির কোনও সম্পর্ক আছে কী ?
ভিটামিন ডি-এর প্রচুর স্বাস্থ্য়গুণ রয়েছে ৷ এটি ফার্টিলিটি বাড়ানো এবং স্বাস্থ্য়কর গর্ভাবস্থার সঙ্গেও যুক্ত বলেই ধরা হয় ৷ মেডিকেল ডিরেক্টর, গাইনোকোলজিস্ট তথা বসন্ত বিহারের শান্তা ফার্টিলিটি সেন্টারের আইভিএফ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অনুভা সিংহের মতে, ভিটামিন ডি এবং ন্যাচারাল ফার্টিলিটির কোনও সম্পর্ক আছে কি না এক্ষেত্রে এখনও মিশ্র ফলাফলই দেখা গিয়েছে অর্থাৎ কিছু ক্ষেত্রে হাই ফার্টিলিটির সঙ্গে যুক্ত আবার কিছু ক্ষেত্রে আইভিএফ বা প্রাকৃতিক গর্ভধারণের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি-এর অভাবের প্রভাব দেখা যায়নি ৷ এই বিষয়ে তাই আরও গবেষণা প্রয়োজন ৷ যদিও কিছু গবেষণায় এও দেখা গিয়েছে যে নারীদের রক্তে ভিটমিন ডি-এর অভাব রয়েছে তাঁদের তুলনায় যাঁদের রক্তে ভিটামিন ডি-এর অভাব নেই সেই মহিলাদের আইভিএফের মাধ্য়মে মা হওয়ার সম্ভবনা চারগুণ বেশি ৷
শরীরের ঠিক কতখানি ভিটামিন ডি প্রয়োজন?
ডাঃ অনুভা সিংয়ের মতে,যেহেতু প্রতিটি ব্যক্তির ভিটামিন ডি-এর প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন তাই এটি নির্ধারণ করার জন্য একটি হাইড্রক্সি ভিটামিন ডি পরীক্ষা প্রয়োজন । শুধুমাত্র এর ভিত্তিতেই বলা যায় শরীরের ঠিক কতটা ভিটামিন ডি প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থায়ও কি ভিটামিন ডি অপরিহার্য(Vitamin D in pregnancy)?
মাদার'স ল্যাপ আইভিএফ সেন্টার, নতুন দিল্লির গাইনোকোলজিস্ট এবং আইভিএফ বিশেষজ্ঞ ডাঃ শোভা গুপ্তের মতে, ভিটামিন ডি-এর পরিমাণ স্বাভাবিক হলে তা ফার্টিলিটি বাড়ানোর পাশাপাশি নিরাপদ গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলে। প্রিটার্ম ডেলিভারি, গর্ভাবস্থা চলাকালীন ডায়াবেটিস, প্রিক্ল্যাম্পসিয়া এবং ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস ইত্যাদি সমস্ত ধরণের সমস্যাই ভিটামিন ডি-এর অভাবের সঙ্গে যুক্ত । গর্ভাবস্থায় ভিটামিন ডি তাই মা এবং শিশু উভয়ের জন্যই উপকারী । গবেষণা অনুসারে, সঠিক পরিমাণে ভিটামিন ডি ( 2000-4000 IU) গ্রহণ গর্ভবতী মহিলাদের স্বাভাবিক ভিটামিন ডি স্তর অর্জন করতে এবং শিশুদের ভিটামিন ডি এর অভাব এড়াতে নিরাপদ এবং উপকারী ।
যদি আপনি গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন, তাহলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । সূর্য ভিটামিন ডি-এর অন্যতম সেরা উৎস এবং প্রতিদিন কমপক্ষে 20 মিনিট রোদের তাপ গ্রহণ ভিটামিন ডি-এর লেভেল বাড়ানোর একটি ভাল উপায় ।
সূর্যালোক পাওয়ার পাশাপাশি, আপনি নিম্নলিখিত খাবারগুলিও খেতে পারেন :
- স্যামন, টুনা এবং ম্যাকেরেল-সহ ফ্যাটি মাছ এবং সামুদ্রিক খাবার
- রেড মিট
- ডিমের কুসুম