রায়গঞ্জ, 5 জুলাই: আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে ৷ নইলে পরর্বতী নির্বাচনগুলি বয়কটের ডাক দিয়েছে গ্রামবাসীরা ৷ ঘটনাটি রায়গঞ্জ ব্লকের 11 নম্বর বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের ধর্মডাঙি এলাকার। এই গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে বীণা নদী। প্রায় 35 বছর ধরে বীাণা নদীর উপর এখনও পর্যন্ত পাকা সেতু নির্মাণ হয়নি ৷ যার জেরে ক্ষোভ জমেছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে । তাদের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দেন। সকলেই প্রতিশ্রুতি দেন যে ভোটে জয় পেলেই বীণা নদীর উপর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত পাকা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে। কিন্তু ভোট আসে, ভোট যায়। প্রতিশ্রুতি তার মতোই থেকে যায় ৷ বাস্তবের রূপ আর পায় না ৷ এখনও পর্যন্ত এই সেতু নির্মাণের কাজে হাত দেয়নি কোনও দলই ।
- ভোট বয়কটের ডাক গ্রামবাসীদের
জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে এখানকার মাটি পরীক্ষার কাজ পর্যন্ত করা হয়েছিল। তবে ব্যস ওইটুকুই ৷ এখনও পর্যন্ত সেতু নির্মাণে কাজের ব্যাপারে কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি প্রশাসনের তরফে। এলাকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এইবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারা শেষবারের মত ভোটদান করবেন । তারপরেও সেতু নির্মাণের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না-করা হলে আগামিদিনে ভোট বয়কটের পথে হাঁটবেন তারা ।
- বর্ষায় নাজেহাল অবস্থা
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গরমকালে বিনা নদীর উপর দিয়ে বাঁশের মাচা বানিয়ে যাতায়াত করেন এলাকার প্রায় তিন হাজার বাসিন্দা । সেতু দিয়ে ভারী কোনও যান চলাচল করতে পারে না । শ্রমিকরা কাজে যান এই রাস্তা । এতে তাদের সুবিধা হয় ৷ না হলে ঘুর পথে প্রায় সাত থেকে আট কিলোমিটার বেশি পথ পেরিয়ে যেতে হয় তাদের । তবে বর্ষাকালে নদীর জল বাড়ায় বেহাল দশা হয় ৷ বাঁশের মাচা দিয়ে আর চলাচল করা যায় না । সেই সময় নৌকা করে কোন রকমে নদী পারাপার করতে হয় ৷ তবে দিনে পারাপার সম্ভব হলেও রাতে যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় । ফলে প্রসূতি মা ও মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে চরম সমস্যায় পড়তে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের ।
আরও পড়ুন: নদী আছে সেতু নেই, গ্রামবাসীদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা খেয়াতরী
- পাকা সেতুর দাবি বহুদিনের
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই এলাকায় তাই অন্যতম প্রধান ইস্যু হয়ে উঠেছে নদীর উপর এই পাকা সেতু নির্মানের কাজ। এলাকার ধর্মডাঙি, জীবনপুর, বীরঘই, ঋষিপুর, দখিনাল, পোয়ালতোড় পারধা, দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দারা পাকা সেতুর দাবিতে সরব হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা অশ্বিনী কুমার বর্মন বলেন, 1988 সালে এখানকার হিউম পাইপের তৈরি সেতু জলের তোড়ে ভেসে যায়। পরে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা তৈরি হয় এবং একটি ব্রিজ নির্মাণ করার কথা হয়েছিল ৷ কিন্তু তা এখনও পর্যন্ত হয়নি । এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর এই সেতু নির্মাণ না হলে আগামিদিনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে পা বাড়াতে বাধ্য হবেন বলেও হুমকি দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা ।