রায়গঞ্জ, 15 মে : জেলায় বাড়ছে কোরোনা আক্রান্তদের সংখ্যা । তার উপর পরিযায়ী শ্রমিকরা ভিন রাজ্য থেকে ফিরছেন ঘরে । প্রশাসন ও পুলিশের তরফ থেকে তাঁদের হোম কোয়ারানটিনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । তবে এই হোম কোয়ারানটিনে থাকা মানুষদের ওপর নজরদারি চালাতে রীতিমতো সমস্যায় পড়ছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা । ওয়াকিবহাল মহলের দাবি যাঁরা হোম কোয়ারানটিনে থাকছেন তাঁরা অনেকেই সঠিকভাবে সরকারি নির্দেশ মেনে কাজ করছেন না । যার ফলে এলাকাবাসীর সংক্রমিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত জেলায় প্রায় 35 হাজার 108 জনকে হোম কোয়ারানটিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল । যাঁদের মধ্যে 32 হাজার 342 জন হোম কোয়ারানটিনের মেয়াদ শেষ করেছেন । এরপরেও প্রায় 2 হাজার 800 মানুষ এখনও জেলার বিভিন্ন অংশে হোম কোয়ারানটিনে আছেন । বিভিন্ন ব্লকের এই বাসিন্দাদের মধ্যে বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক । ইতিমধ্যে জেলায় মোট 5 জনের দেহে কোরনা ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে । এরা প্রত্যেকেই পরিযায়ী শ্রমিক ।
এই আক্রান্ত ব্যক্তিদের একাংশ হোম কোয়ারানটিনে থাকাকালীন এলাকায় বিস্তর মেলামেশা করেছিলেন বলেও এলাকাবাসীর অভিযোগ । পরবর্তীকালে তাঁদের লালারস পরীক্ষার পর যখন কোরোনা পজ়িটিভ পাওয়া যায় তখন খুব স্বাভাবিকভাবেই এলাকাবাসীর মধ্যে এই নিয়ে ভীতির সঞ্চার হয়েছিল । তবে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, এই বিষয়টিতে স্বাস্থ্য বিভাগ এবং পুলিশের গুরুত্ব দিয়ে নজরদারি রাখা উচিত । যদিও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, যে পরিমাণ মানুষ বর্তমানে হোম কোয়ারানটিনে রয়েছেন তাঁদের ওপর 24 ঘণ্টা নজরদারি দেওয়া, স্বাস্থ্য বিভাগ বা পুলিশ কারোর পক্ষেই সম্ভব না ।
যদিও স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে নজরদারি নিয়ে কোনও অব্যবস্থার কথা মানা হয়নি । বরং যথেষ্ট নজরদারি করা হচ্ছে বলেই শীর্ষ আধিকারিকরা জানিয়েছেন । এই বিষয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, " আমাদের জেলাতে যাঁরা হোম কোয়ারানটিনে রয়েছেন তাঁদের উপর নজরদারি করছি । আমাদের চিকিৎসক আশা কর্মী থেকে শুরু করে বাকি দল তাঁদের নিয়মিত পরীক্ষা করছেন । কারও মধ্যে কোনও ধরনের উপসর্গ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হচ্ছে । এই বিষয়ে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলা সুপার সুমিত কুমার বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ দ্বারা চিহ্নিত হোম কোয়ারানটিনে থাকা মানুষদের উপর আমরা নজরদারি রাখছি । তাঁদেরকে বারবার এই বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে । সরকারি নির্দেশ মেনে যেন তাঁরা গৃহবন্দী থাকেন, তাঁর জন্য বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে ।"