রায়গঞ্জ, 26 মার্চ: ছিল নদী ৷ হয়ে গেল চাষের জমি ৷ এমনকী চাষ করার জন্য বৈধ নথিও আছে কৃষকদের কছে ৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কালিয়াগঞ্জে । উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে শ্রীমতি নদীর এমনই বেহাল ছবি ধরা পড়েছে (farmers occupied river for farming in Raiganj)। যা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে পৌর ও জেলা প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই এই শ্রীমতি নদীকে দেখেছেন ৷ অথচ আজ তাঁরা এই নদীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সংকটে পড়েছেন । বাংলাদেশ থেকে শুরু করে উত্তর দিনাজপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে চলা এই নদী মিশেছে ইটাহার ব্লকের মারনাই এলাকায় মহানন্দাতে । কিন্তু এই নদী বক্ষ এখন পুরোপুরি চরে পরিণত হয়েছে । জলা জমি ডাঙা জমিতে রূপান্তরিত হয়েছে । সেখানেই চলছে চাষাবাদ ৷
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, এই শ্রীমতি নদী একসময় কুলকুল করে বয়ে যেত ৷ সেখানে এখন ধান চাষ করছেন এলাকার কৃষকেরা। বেশ কিছু এলাকায় রীতিমতো কংক্রিটের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ওই জমির ভোগ দখলকারীদের দাবি, তাঁরা নাকি রায়ত জমি হিসাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও দেখিয়ে দেন। তবে কেউই এই ঘটনার দায় স্বীকার করতে চাইছেন না। যদিও পৌর কর্তৃপক্ষ বলেন, "শ্রীমতি নদী যেখান দিয়ে বয়ে যেত, সেই জমি রায়ত জমি হিসাবে পরিগণিত রয়েছে । ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত বলতে পারবে।"
আরও পড়ুন: কাজ করছে না রেডিয়ো কলার ! বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে নিখোঁজ হাতি
এ ব্যাপারে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান রাম নিবাস সাহা বলেন, "মহকুমা শাসক ও বিএল আর ও-কে বিষয়টি জানিয়েছি । সেখানে ভোগ দখলকারী অনেকের কাছে নাকি বৈধ কাগজও রয়েছে । আমরা নতুন করে প্রশাসনিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করার চেষ্টা করব ।" কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা বলেন, "একসময় তিস্তা প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল শ্রীমতি নদীকে । কিন্তু নেভার এন্ডিং এই তিস্তা প্রজেক্ট-এর কারণেই শ্রীমতি নদী আজ তার অস্তিত্ব খোয়াতে বসেছে । আমরা শ্রীমতি নদীকে আবার পুরনো অবস্থায় দেখতে চাই । কিন্তু কী করে তা সম্ভব, প্রশাসনই তা বলতে পারবে । প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথা সময়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে এই নদীর অস্তিত্ব পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য ।"
অন্যদিকে নদীর উপর কিভাবে চাষবাসের বৈধতা পাচ্ছেন কৃষকরা, কীভাবেই বা দিনের পর দিন আস্ত একটি নদীকে দখল করে চাষবাস করছেন কৃষকরা, সে বিষয়ে রায়গঞ্জের মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতি আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, এভাবে নদী দখল করে চাষবাস চলতে থাকলে একদিন নদী নাব্যতা হারিয়ে ফেলবে ৷ তবে এই বিষয় নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ভূমি রাজস্ব দফতরকেও বিষয়টি জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।