বসিরহাট, 14 ডিসেম্বর: বসিরহাটে ইটভাটায় চিমনি বিস্ফোরণে মৃত চার জন শ্রমিকের পরিবারপিছু 2 লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেবে রাজ্য সরকার ৷ আহত তিন জন শ্রমিকের পরিবারকে 50 হাজার টাকা করে দেওয়া হবে ৷ বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন উত্তর 24 পরগনা জেলাপরিষদের সভাধিপতি ও বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী ।
তিনি বলেন, "বিস্ফোরণের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী উদ্বিগ্ন । তিনি মৃত ও আহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সবরকম নির্দেশ দিয়েছেন । আহত শ্রমিকের চিকিৎসায় যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেটাও মুখ্যমন্ত্রী দেখার নির্দেশ দিয়েছেন আমাকে । ঘটনার পরই দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে । তিনিও খোঁজখবর নিয়েছেন আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে ৷"
তিনি আরও বলেন,"জেলার অভ্যন্তরে যত ইটভাটা রয়েছে, তার যাবতীয় কাগজপত্র এবং অনুমোদন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে প্রশাসনের তরফে । ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সেদিকেও প্রশাসনের তরফে নজরদারি চালানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি ।
তাহলে এতদিন কোথাও নজরদারির অভাব ছিল ?সুরক্ষা ব্যবস্থা ঠিকঠাক ছিলনা বলেই কি এত বড় ঘটনা ? সেই বিষয়ে সরাসরি উত্তর না দিলেও জেলাপরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন,"কোথাও কোনও খামতি থেকে থাকলে তার দ্রুত সুরাহা করা হবে । শ্রমিকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে ৷" এ নিয়ে আগামী সপ্তাহে ইটভাটা ইউনিয়ন, মালিকপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি ।
এ দিকে,ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই থমথমে পরিবেশ বসিরহাটের ওই এলাকায় । সাধারণ মানুষের জটলা দেখা গিয়েছে ইটভাটা চত্বরে । স্বভাবতই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এ দিন দুর্ঘটনাগ্রস্ত হীরা ইটভাটার আশপাশে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয় । এতবড় দুর্ঘটনার দায় কার ? কাদের গাফিলতিতে চার চারটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল ? দোষীরা কোনওদিন শাস্তি পাবে ? এই প্রশ্নই যখন ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে, তখন কিন্তু এই ইটভাটা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে । সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রায় একবছর বন্ধ ছিল ইছামতী নদীর চরে গড়ে ওঠা এই ইটভাটা । রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কার্যত চিমনির ভিতর গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছিল । আর তাতেই ফায়ারিং করতে গিয়ে এই বিপত্তি ঘটে বলে জানা গিয়েছে ।
অন্যদিকে, ইটভাটা যে একবছর বন্ধ ছিল, তা স্বীকার করে নিয়েছেন নীহার আলি গাজী নামে এক শ্রমিক । তাঁর কথায়, "ওই ইটভাটাটি সম্প্রতি হস্তান্তর হয়েছিল । নতুন মালিকের হাতে দায়িত্ব গিয়েছিল ইটভাটার । কোনও ইটভাটা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে তার ভিতর এমনিতেই গ্যাস তৈরি হয় । ভিতরে গ্যাস চিমনি থেকে বের করতে গেলে আগুনের ধোঁয়া দিতে হয় । কিন্তু,সেটা ঘটনার আগে করা হয়নি । যার ফলেই এই মর্মান্তিক পরিণতি ৷"
আরও পড়ুন: