দেগঙ্গা, 19 জানুয়ারি: 'দিদির সুরক্ষা কবচ' কর্মসূচি চলাকালীন রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসুর (Sujit Bose) সামনেই হাতাহাতিতে জড়ালেন তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সদস্যরা (Clash during Didir Suraksha Kawach) ৷ স্লোগান,পালটা স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা ৷ মন্ত্রীর অনুরোধেও কাজ না হওয়ায় শেষমেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হস্তক্ষেপ করতে হল পুলিশকে ৷ আর এই ঘটনাকে ঘিরেই বৃহস্পতিবার অশান্তি ছড়াল উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গার (Deganga) পাথরঘাটা পূর্বপাড়ায় ৷ ঘটনার জেরে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়তে হয় দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুকে ৷ যদিও তাঁর দাবি, ভুল বোঝাবুঝির জেরে সামান্য ঘটনা ঘটেছে ৷ দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগও মানতে চাননি তিনি ৷
সাধারণ মানুষের অভাব, অভিযোগ শুনতে সম্প্রতি 'দিদির সুরক্ষা কবচ' কর্মসূচি শুরু করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ এই কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যের মন্ত্রী, শাসকদলের বিধায়ক, সাংসদরা পৌঁছে যাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকায় ৷ 'দিদির দূত' (Didir Doot) হিসাবে মানুষের কথা শুনছেন তাঁরা ৷ কিন্তু, ইতিমধ্য়েই বহু জায়গায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে দিদির দূতদের ৷ এদিন দেগঙ্গাতেও তার ব্যতিক্রম হল না ৷
আরও পড়ুন: 'সুরক্ষা কবচ' চাইতে গিয়ে 'দিদির দূতে'র হাতে চড় খেলেন যুবক !
এদিন দুপুরে 'দিদির দূত' হয়ে দেগঙ্গার চাকলা পঞ্চায়েত এলাকায় আসেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ৷ সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক রহিমা মণ্ডল, দেগঙ্গার তৃণমূল সভাপতি আনিসুর রহমান, দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিদুল হক সাহাজি-সহ দলের স্থানীয় নেতা ও কর্মীরা ৷ এদিন প্রথমে চাকলা পঞ্চায়েতের পাথরঘাটা পূর্বপাড়ার যান মন্ত্রী সুজিত বসু ৷ এই এলাকাটি স্থানীয় পঞ্চায়েতের 224 নম্বর বুথের অন্তর্গত ৷
'দিদির সুরক্ষা কবচ' কর্মসূচির শুরুতেই স্থানীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ ও অনুন্নয়ন নিয়ে একাধিক অভিযোগ শুনতে হয় দমকলমন্ত্রীকে ৷ বাসিন্দাদের পাশাপাশি সেই ক্ষোভ, বিক্ষোভ ধেয়ে আসে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশের পক্ষ থেকেও ৷ কর্মসূচি চলাকালীনই আচমকা শুরু হয় সংঘর্ষ ৷ মন্ত্রীর সামনেই বচসা ও হাতাহাতিতে জড়ান তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সদস্যরা ৷ পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যেতে দেখে একসময় নেতা ও কর্মীদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ করেন মন্ত্রী ৷ কিন্তু, তাতেও কাজ না হওয়ায় শেষে পুলিশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে ৷
পরে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, "দুপুরের খাওয়া নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির জেরে সামান্য ঘটনা ঘটেছিল ৷ তেমন বড় কিছু নয় ৷ এখানে কোনও গোষ্ঠীকোন্দলের বিষয় নেই ৷ দিদির দূত হয়ে এলাকায় যাওয়ার একটাই কারণ ৷ তা হল, মানুষের অভাব অভিযোগ শোনা ৷ সেই অভিযোগ শুনে সমস্যার সমাধান করাই আমাদের মূল লক্ষ্য ৷ স্থানীয় একটি বাস রুটের সমস্যার কথা আমাকে জানানো হয়েছে ৷ তার যাতে দ্রুত সমাধান হয়, সেই চেষ্টা করব ৷"
এদিকে, মন্ত্রীর পায়ে পড়ে স্থানীয় বিধায়ক রহিমা মণ্ডলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায় মিখাইল নামে স্থানীয় এক তৃণমূলকর্মীকে ৷ তিনি বলেন, "বিধায়ক এলাকায় আসেন না ৷ কোনও উন্নয়নের কাজও করেন না ৷ সেটাই মন্ত্রীকে পায়ে ধরে জানিয়েছি ৷ তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ৷"