ETV Bharat / state

Women Football in Sandeshkhali: ঝুমুর গানের ছন্দ থেকে ফুটবলের স্কিল, প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়েৃই উত্থান সন্দেশখালির মেয়েদের

author img

By

Published : Feb 5, 2023, 6:08 PM IST

প্রতিকূলতাকে জয় করে ফুটবলকে আঁকড়ে ধরেছে সন্দেশখালি ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম কানমারীর মেয়েরা (Women Football in Sandeshkhali) ৷ যারা বাংলার ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ৷ এবার তাদের নিয়ে কলকাতায় মেয়েদের লিগে খেলানোর পরিকল্পনা রয়েছে ৷

Women Football in Sandeshkhali ETV BHARAT
Women Football in Sandeshkhali

কলকাতা/উত্তর 24 পরগনা, 5 ফেব্রুয়ারি: নদীর সঙ্গে বসবাস বারোমাসের চিন্তা ৷ বিদ্যাধরী নদীর তিরে মাছের ভেড়ির পাশে গড়ে ওঠা একটি সুন্দরবন এলাকার এক প্রত্যন্ত জনপদ সন্দেশখালির কানমারী গ্রাম ৷ বন্যার সময় মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে হয় ভিটে-মাটি ছেড়ে ৷ দু’বেলা পেট ভরানোটাই যেখানে দায়, সেখানে 'পুষ্টিকর খাদ্য' শব্দটি হয়তো তাঁদের অভিধানেই নেই ৷ সরকারি পরিকাঠামো নেই বললেও হয়তো কম বলা হবে ৷ ঠিক এমন এক জায়গায় ফুটবল খেলার কথা লোকে ভাবতেও পারে না ৷ তাও কি না মেয়েরা (Story of Rising Women Footballers from Sandeshkhali) !

হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও, এটাই সত্যি ৷ এক-আধজন নয়, এলাকার বহু মেয়ে হাজারও প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে হাসিমুখে আঁকড়ে ধরেছে ফুটবলকে ৷ সোনালি মাহাতো, অর্পণা সর্দার, সুমনা সর্দার, প্রতিমা মাহাতো, বৃহস্পতি সর্দার, পূজা মাহালী, সীমা সর্দাররা গত তিন বছর ধরে ফুটবলকে আঁকড়ে ধরে জীবনের স্রোতে ভাসতে চাইছে ৷ ঝুমুর ও লোকনৃত্যে পারদর্শী ওরা এবার ফুটবল মাঠে ৷ তাদের জন্য গড়ে উঠেছে একটি অ্যাকাডেমিও ৷ যার সঙ্গে নাম জুড়েছে মোহনবাগান ক্লাবের ৷

যে নাচে সে ফুটবল খেলে এবং পড়াশোনাও করেও ৷ অপর্ণা, সীমা, সুমনারা কেউ স্নাতক, কেউ বা উচ্চমাধ্যমিক দেবে ৷ উত্তর 24 পরগনার প্রত্যন্ত গ্রামে মোহনবাগান নামটিকে আঁকড়ে ধরেছিলেন এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠরা ৷ যা বয়ে নিয়ে চলেছে নতুন প্রজন্ম ৷ কানমারী সোশাল কেয়ার ফুটবল অ্যাকাডেমির তত্ত্বাবধানে নিয়মিত প্রায় 60-70 জন মেয়ে এখানে ফুটবল চর্চা করে ৷ দু-তিনজন এই অ্যাকাডেমি থেকে তো এবার সদ্য সমাপ্ত কন্যাশ্রী কাপে খেলারও সুযোগ পেয়েছিল ৷ তবে, এবার ফুটবল বৃত্তের পরিধিটা বাড়ানোর পালা ৷

কানমারী মোহনবাগান ক্লাবের (Kanmari Mohun Bagan Club) এই প্রচেষ্টাকে সফল করতে আগেই আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন । এবার তা আরও দৃঢ়ভাবে তা বাড়ানোর উদ্যোগ ৷ জার্সি, ফুটবল-সহ যাবতীয় প্রয়োজনী ক্রীড়া সামগ্রী প্রদানের পৃষ্ঠপোষকতা করে চলেছেন কানমারী মোহনবাগান ক্লাবের শীর্ষ কর্মকর্তা প্রবীর রায়চৌধুরী ৷ যিনি তাঁর সংস্থার মাধ্যমে গ্রামেগঞ্জে ফুটবলের বিকাশে এবং প্রতিভাবান ফুটবলারদের তুলে আনার কাজ করেন ৷

এবার এই অঞ্চলের মেয়েদের ফুটবলকে কলকাতা ময়দানের আঙিনায় নিয়ে আসতে চান ৷ প্রবীর রায়চৌধুরী বলেন, ‍‘‘বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে এরা যেভাবে ফুটবলকে নিজেদের জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ বানিয়ে ফেলেছে, তা সত্যিই গর্বের ৷ ইতিমধ্যে আইএফএ-এর সঙ্গে কথা হয়েছে ৷ নতুন বছরে মেয়েদের লিগ দু’টো ডিভিশনে হবে ৷ আমরা যে কোনও একটি ডিভিশনে অংশ নিতে চাই ৷ সেভাবেই কথা চলছে ৷ আশা করছি নতুন দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারব ৷”

আরও পড়ুন: ক্যারাটেতে বাংলা তথা দেশের নাম উজ্জ্বল করছে ক্যানিংয়ের প্রিয়াংশু

সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে এদিন আরও একটা ধাপ উঠল কানমারীর ফুটবল অ্যাকাডেমি ৷ ময়দানে তাঁবু এবং মেয়েদের ড্রেসিংরুমের সমস্যা মেটাতে এবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের ৷ প্রাথমিক আশ্বাসও মিলেছে বলে জানান ৷ নোনা জলের জমিতে ঘাসের মাঠ নেই ৷ আগামী দিনে 20-22 জন মেয়েকে বাছাই করে কলকাতায় নিয়ে আসা হবে ৷ যাতে কোনও ভালো মাঠে তাঁরা সপ্তাহে অন্তত দু’দিন অনুশীলন করতে পারে, সেই পরিকল্পনা রয়েছে ৷

এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের তিন ফুটবলার শৌভিক চক্রবর্তী, শুভম সেন এবং তুহিন দাস ৷ তাঁরাও ছোটদের উৎসাহ দিয়ে গেলেন ৷ তবে, এই তিন ফুটবলারই প্রথম নন ৷ কুন্তলা ঘোষদস্তিদার, সুজাতা কর, শান্তি মল্লিক, মলয় সেনগুপ্তরাও এই প্রত্যন্ত গ্রামের ফুটবল চর্চায় সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন ৷ এবার সম্মিলিত চেষ্টায় বড় আকাশে ডানা মেলতে চায় ওরা ৷

কলকাতা/উত্তর 24 পরগনা, 5 ফেব্রুয়ারি: নদীর সঙ্গে বসবাস বারোমাসের চিন্তা ৷ বিদ্যাধরী নদীর তিরে মাছের ভেড়ির পাশে গড়ে ওঠা একটি সুন্দরবন এলাকার এক প্রত্যন্ত জনপদ সন্দেশখালির কানমারী গ্রাম ৷ বন্যার সময় মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে হয় ভিটে-মাটি ছেড়ে ৷ দু’বেলা পেট ভরানোটাই যেখানে দায়, সেখানে 'পুষ্টিকর খাদ্য' শব্দটি হয়তো তাঁদের অভিধানেই নেই ৷ সরকারি পরিকাঠামো নেই বললেও হয়তো কম বলা হবে ৷ ঠিক এমন এক জায়গায় ফুটবল খেলার কথা লোকে ভাবতেও পারে না ৷ তাও কি না মেয়েরা (Story of Rising Women Footballers from Sandeshkhali) !

হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও, এটাই সত্যি ৷ এক-আধজন নয়, এলাকার বহু মেয়ে হাজারও প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে হাসিমুখে আঁকড়ে ধরেছে ফুটবলকে ৷ সোনালি মাহাতো, অর্পণা সর্দার, সুমনা সর্দার, প্রতিমা মাহাতো, বৃহস্পতি সর্দার, পূজা মাহালী, সীমা সর্দাররা গত তিন বছর ধরে ফুটবলকে আঁকড়ে ধরে জীবনের স্রোতে ভাসতে চাইছে ৷ ঝুমুর ও লোকনৃত্যে পারদর্শী ওরা এবার ফুটবল মাঠে ৷ তাদের জন্য গড়ে উঠেছে একটি অ্যাকাডেমিও ৷ যার সঙ্গে নাম জুড়েছে মোহনবাগান ক্লাবের ৷

যে নাচে সে ফুটবল খেলে এবং পড়াশোনাও করেও ৷ অপর্ণা, সীমা, সুমনারা কেউ স্নাতক, কেউ বা উচ্চমাধ্যমিক দেবে ৷ উত্তর 24 পরগনার প্রত্যন্ত গ্রামে মোহনবাগান নামটিকে আঁকড়ে ধরেছিলেন এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠরা ৷ যা বয়ে নিয়ে চলেছে নতুন প্রজন্ম ৷ কানমারী সোশাল কেয়ার ফুটবল অ্যাকাডেমির তত্ত্বাবধানে নিয়মিত প্রায় 60-70 জন মেয়ে এখানে ফুটবল চর্চা করে ৷ দু-তিনজন এই অ্যাকাডেমি থেকে তো এবার সদ্য সমাপ্ত কন্যাশ্রী কাপে খেলারও সুযোগ পেয়েছিল ৷ তবে, এবার ফুটবল বৃত্তের পরিধিটা বাড়ানোর পালা ৷

কানমারী মোহনবাগান ক্লাবের (Kanmari Mohun Bagan Club) এই প্রচেষ্টাকে সফল করতে আগেই আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন । এবার তা আরও দৃঢ়ভাবে তা বাড়ানোর উদ্যোগ ৷ জার্সি, ফুটবল-সহ যাবতীয় প্রয়োজনী ক্রীড়া সামগ্রী প্রদানের পৃষ্ঠপোষকতা করে চলেছেন কানমারী মোহনবাগান ক্লাবের শীর্ষ কর্মকর্তা প্রবীর রায়চৌধুরী ৷ যিনি তাঁর সংস্থার মাধ্যমে গ্রামেগঞ্জে ফুটবলের বিকাশে এবং প্রতিভাবান ফুটবলারদের তুলে আনার কাজ করেন ৷

এবার এই অঞ্চলের মেয়েদের ফুটবলকে কলকাতা ময়দানের আঙিনায় নিয়ে আসতে চান ৷ প্রবীর রায়চৌধুরী বলেন, ‍‘‘বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে এরা যেভাবে ফুটবলকে নিজেদের জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ বানিয়ে ফেলেছে, তা সত্যিই গর্বের ৷ ইতিমধ্যে আইএফএ-এর সঙ্গে কথা হয়েছে ৷ নতুন বছরে মেয়েদের লিগ দু’টো ডিভিশনে হবে ৷ আমরা যে কোনও একটি ডিভিশনে অংশ নিতে চাই ৷ সেভাবেই কথা চলছে ৷ আশা করছি নতুন দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারব ৷”

আরও পড়ুন: ক্যারাটেতে বাংলা তথা দেশের নাম উজ্জ্বল করছে ক্যানিংয়ের প্রিয়াংশু

সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে এদিন আরও একটা ধাপ উঠল কানমারীর ফুটবল অ্যাকাডেমি ৷ ময়দানে তাঁবু এবং মেয়েদের ড্রেসিংরুমের সমস্যা মেটাতে এবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের ৷ প্রাথমিক আশ্বাসও মিলেছে বলে জানান ৷ নোনা জলের জমিতে ঘাসের মাঠ নেই ৷ আগামী দিনে 20-22 জন মেয়েকে বাছাই করে কলকাতায় নিয়ে আসা হবে ৷ যাতে কোনও ভালো মাঠে তাঁরা সপ্তাহে অন্তত দু’দিন অনুশীলন করতে পারে, সেই পরিকল্পনা রয়েছে ৷

এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের তিন ফুটবলার শৌভিক চক্রবর্তী, শুভম সেন এবং তুহিন দাস ৷ তাঁরাও ছোটদের উৎসাহ দিয়ে গেলেন ৷ তবে, এই তিন ফুটবলারই প্রথম নন ৷ কুন্তলা ঘোষদস্তিদার, সুজাতা কর, শান্তি মল্লিক, মলয় সেনগুপ্তরাও এই প্রত্যন্ত গ্রামের ফুটবল চর্চায় সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন ৷ এবার সম্মিলিত চেষ্টায় বড় আকাশে ডানা মেলতে চায় ওরা ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.