আমডাঙা, 1 নভেম্বর: নৈহাটি-কাণ্ডে (Naihati Clash) পুলিশের জালে আরও এক অভিযুক্ত । ধৃতের নাম কাজি হাসিবুল হাসান । খুনের ঘটনার পরপরই তিনি এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন অন্যত্র । সোমবার রাতে বছর আঠারোর কাজি হাসিবুল আমডাঙার কুমারদুনি গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন । সেই খবর পৌঁছে যায় পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের কাছে । এরপরই ভোরের দিকে অভিযান চালানো হয় তাঁর গ্রামের বাড়িতে । সেখান থেকেই পুলিশ ঘুমন্ত অবস্থায় পাকড়াও করে খুনে অভিযুক্ত এই দুষ্কৃতীকে (Police arrested one more accused) ।
পুলিশের দাবি, মূল অভিযুক্ত বাচ্চা-সহ ধৃত তাঁর দুই শাগরেদের মতো সেও তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত । খুনের ঘটনায় ধৃত এই চারজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় পুলিশ ৷ কী কারণে এই খুন করা হল সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চান ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কর্তারা (Barrackpore Police Commissionerate) । সেই সঙ্গে এই খুনের তদন্ত প্রক্রিয়াও গুটিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর তাঁরা ।
উল্লেখ্য, শনিবার ভর সন্ধ্যায় নৈহাটির শিবদাসপুরে বোমা ও গুলিতে খুন হন এলাকার প্রতিবাদী যুবক এবং তৃণমূল কর্মী জাকির হোসেন । সেদিন পাড়ারই একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন তিনি । তখনই মুখোশধারী দুষ্কৃতীরা দুটি বাইকে এসে আচমকা হামলা চালায় জাকিরের ওপর । প্রথমে তাঁকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি বোমা ছোঁড়া হয় । রক্তাক্ত অবস্থায় প্রাণে বাঁচতে সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি । কিন্তু তারপরও পিছু ধাওয়া করে জাকিরকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি করে দুষ্কৃতীরা । গুলি তাঁর হাতে, বুকে এবং পেটে লাগে । রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়েন জাকির । সেই দৃশ্য দেখে গ্রামের লোকজন দুষ্কৃতীদের ধাওয়া করলে তারা বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে পালিয়ে যান ঘটনাস্থল থেকে ।
ঘটনায় জাকিরের গুলিবিদ্ধ হওয়া ছাড়াও বোমার স্প্রিন্টার ছিটকে ইউসুফ আলি মণ্ডল নামে আরও এক তৃণমূল কর্মী গুরুতর জখম হন । ঘটনার সময় সে জাকিরের সঙ্গেই ছিলেন । বোমা ও গুলিতে আহত দু'জনকেই কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ভরতি করা হয় । অস্ত্রোপচার করে জাকিরের শরীর থেকে গুলি বের করা হলেও প্রাণে বাঁচানো যায়নি তাঁকে । রবিবার সকালে মৃত্যু হয় প্রতিবাদী ওই যুবকের । ঘটনার পরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শিবদাসপুরের কন্দপুকুর গ্রাম ।
জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বারাসত পুলিশ জেলার এসডিপিও (হাবরা) রোহিত শেখ এবং আমডাঙা থানার আইসি অঞ্জন দত্তের নেতৃত্বে তদন্তকারী দল অভিযান চালায় প্রভাকরকাটির বাঁশবাগানে । সেখান থেকেই প্রথমে পাকড়াও করা হয় নৈহাটি-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত আসিফুল রহমান ওরফে বাচ্চা-সহ তার এক শাগরেদ ফারুক হোসেনকে । এর কিছুক্ষণ পরই জগদ্দল থানা এলাকা থেকে তাপস দে নামে আরও এক অভিযুক্তের সন্ধান পায় পুলিশ । এবার সেই আমডাঙা থানা এলাকা থেকে বাচ্চার আরও এক শাগরেদকে পাকড়াও করল পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল ।
আরও পড়ুন: নৈহাটিকাণ্ডে পুলিশের জালে মূল অভিযুক্ত-সহ 3
খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে অপরাধীদের বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র, অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট । ধৃত হাসিবুল হাসানকে নিজেদের হেফাজতে নিতে মঙ্গলবার দুপুরে তাকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ ।