ETV Bharat / state

সুন্দরবনের শ্রী সুজন, কষ্ট জয়ে অরুণোদয়

গত 20 বছর ধরে চিকিৎসা করে চলেছেন । ফি নামমাত্র ৷ চান বাকিটা জীবনও সুন্দরবনের পিছিয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ৷ এই অসামান্য অবদানের জন্য এবার পদ্মশ্রী পেতে চলেছেন চিকিৎসক অরুণোদয় মণ্ডল ৷

Padmashree Awardee
অরুণোদয় মণ্ডল
author img

By

Published : Jan 26, 2020, 3:31 PM IST

Updated : Jan 26, 2020, 5:04 PM IST

সুন্দরবন, 26 জানুয়ারি : সুন্দরবনের বাদাবনে কেটেছে ছেলেবেলা । ছিল না খাবার । ছিল না চিকিৎসাও । ছেলেবেলায় প্রতি মুহুর্তে চোখের সামনে দেখেছেন সমাজের প্রান্তিক মানুষরা কী নিদারুণ অসহায়তা ৷ সেই থেকেই বদ্ধপরিকর হন ৷ কিছু একটা করতেই হবে এইসব প্রান্তিক মানুষদের জন্য ৷ পড়াশোনা শেষ করে হলেন চিকিৎসক । কিন্তু মাথায় যে তখনও সেই পিছিয়ে পড়া মানুষদের চিন্তা ৷ চাকরির মোহ ছেড়ে ফিরলেন সেই সুন্দরবনেই । নেমে পড়লেন গরিব মানুষের সেবায় । চলল বছরের পর বছর । অবশেষে মিলল স্বীকৃতি । চলতি বছরে সমাজসেবায় পদ্মশ্রী খেতাব পেলেন চিকিৎসক অরুণোদয় মণ্ডল ।

1953 সালের অবিভক্ত 24 পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের দালালখালি গ্রামে জন্ম অরুণোদয়ের । পড়াশোনা গ্রামের স্কুলেই । টাকি গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ ৷ এরপর কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে MBBS । কিন্তু চাকরির মোহ তাঁর ছিল না । তিনি বাঁধা পড়তে চাননি নিয়মের বেড়াজালে । স্বাধীনভাবে প্রাকটিস করেছেন । কর্মজীবনের শুরু থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে গ্রামে গ্রামে ঘুরেছেন । চাক্ষুষ করেছেন প্রান্তিক মানুষের অসহায়তা । 2000 সালের বন্যায় সুন্দরবন ঘুরে ঘুরে তিনি গ্রামের মানুষের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন । উপলব্ধি করেছেন, স্থায়ী কোনও প্রতিষ্ঠান না-গড়ে গ্রামের মানুষের সেবা করা সম্ভব নয় । সুন্দরবনের সাহেবখালি-রায়পাড়াতেই গড়ে তুললেন 'সুজন চিকিৎসা কেন্দ্র'। গত 20 বছর ধরে সেখানে চিকিৎসা করে চলেছেন । ফি নামমাত্র ৷

শেষদিন পর্যন্ত যেন আমার গাঁয়ের মানুষগুলোর পাশে থাকতে পারি, বলছেন পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপক চিকিৎসক

বর্তমানে তিনি থাকেন লেকটাউনে । বিরাটি স্টেশন থেকে প্রতি শনিবার সকালে তিনি কাঁধে ঔষুধের ব্যাগ নিয়ে হাসনাবাদ লোকালে চড়েন । হাসনাবাদে নেমে নদীপথ পেরিয়ে তিনি সেই সাহেবখালি রায়পাড়ার 'সুজন'-এ পৌছান । শনি ও রবিবার সেখানে চিকিৎসা করেন । মহল্লায় তিনি 'সুন্দরবন সুজন' নামে পরিচিত ।

প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের সন্ধ্যায় পদ্মশ্রীর তালিকায় তাঁর নাম ঘোষিত হয়েছে । পদ্ম-স্বীকৃতি পেয়ে কেমন লাগছে? প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, "পুরস্কার পেতে কার না ভালো লাগে । আমারও নিশ্চয়ই ভালো লাগছে । রাষ্ট্রীয় খেতাব পেয়ে আমি গর্বিত । আমি তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছি আমার সুন্দরবনের মানুষের কাছে আমি আপন হতে পেরেছি । তাঁদের জন্য কিছু করতে পেরেছি। শেষদিন পর্যন্ত যেন আমার গাঁয়ের মানুষগুলোর পাশে থাকতে পারি।"

অরুণোদয়বাবুর এই কর্মযজ্ঞের প্রেরণা কে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, " অবশ্যই আমার প্রিয় সুন্দরবনের মানুষ । সঙ্গে স্ত্রী অপর্ণার অবদানও অপরিসীম ।"

অপর্ণাদেবী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা । ছেলে অর্ণব বর্তমানে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করছেন । পুরস্কার তাঁকে উৎসাহিত করেছে । প্রবীণ চিকিৎসকের চোখে আজও একটাই স্বপ্ন, গোটা সুন্দরবনে গড়বেন আরোগ্য নিকেতন ।

সুন্দরবন, 26 জানুয়ারি : সুন্দরবনের বাদাবনে কেটেছে ছেলেবেলা । ছিল না খাবার । ছিল না চিকিৎসাও । ছেলেবেলায় প্রতি মুহুর্তে চোখের সামনে দেখেছেন সমাজের প্রান্তিক মানুষরা কী নিদারুণ অসহায়তা ৷ সেই থেকেই বদ্ধপরিকর হন ৷ কিছু একটা করতেই হবে এইসব প্রান্তিক মানুষদের জন্য ৷ পড়াশোনা শেষ করে হলেন চিকিৎসক । কিন্তু মাথায় যে তখনও সেই পিছিয়ে পড়া মানুষদের চিন্তা ৷ চাকরির মোহ ছেড়ে ফিরলেন সেই সুন্দরবনেই । নেমে পড়লেন গরিব মানুষের সেবায় । চলল বছরের পর বছর । অবশেষে মিলল স্বীকৃতি । চলতি বছরে সমাজসেবায় পদ্মশ্রী খেতাব পেলেন চিকিৎসক অরুণোদয় মণ্ডল ।

1953 সালের অবিভক্ত 24 পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের দালালখালি গ্রামে জন্ম অরুণোদয়ের । পড়াশোনা গ্রামের স্কুলেই । টাকি গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ ৷ এরপর কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে MBBS । কিন্তু চাকরির মোহ তাঁর ছিল না । তিনি বাঁধা পড়তে চাননি নিয়মের বেড়াজালে । স্বাধীনভাবে প্রাকটিস করেছেন । কর্মজীবনের শুরু থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে গ্রামে গ্রামে ঘুরেছেন । চাক্ষুষ করেছেন প্রান্তিক মানুষের অসহায়তা । 2000 সালের বন্যায় সুন্দরবন ঘুরে ঘুরে তিনি গ্রামের মানুষের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন । উপলব্ধি করেছেন, স্থায়ী কোনও প্রতিষ্ঠান না-গড়ে গ্রামের মানুষের সেবা করা সম্ভব নয় । সুন্দরবনের সাহেবখালি-রায়পাড়াতেই গড়ে তুললেন 'সুজন চিকিৎসা কেন্দ্র'। গত 20 বছর ধরে সেখানে চিকিৎসা করে চলেছেন । ফি নামমাত্র ৷

শেষদিন পর্যন্ত যেন আমার গাঁয়ের মানুষগুলোর পাশে থাকতে পারি, বলছেন পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপক চিকিৎসক

বর্তমানে তিনি থাকেন লেকটাউনে । বিরাটি স্টেশন থেকে প্রতি শনিবার সকালে তিনি কাঁধে ঔষুধের ব্যাগ নিয়ে হাসনাবাদ লোকালে চড়েন । হাসনাবাদে নেমে নদীপথ পেরিয়ে তিনি সেই সাহেবখালি রায়পাড়ার 'সুজন'-এ পৌছান । শনি ও রবিবার সেখানে চিকিৎসা করেন । মহল্লায় তিনি 'সুন্দরবন সুজন' নামে পরিচিত ।

প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের সন্ধ্যায় পদ্মশ্রীর তালিকায় তাঁর নাম ঘোষিত হয়েছে । পদ্ম-স্বীকৃতি পেয়ে কেমন লাগছে? প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, "পুরস্কার পেতে কার না ভালো লাগে । আমারও নিশ্চয়ই ভালো লাগছে । রাষ্ট্রীয় খেতাব পেয়ে আমি গর্বিত । আমি তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছি আমার সুন্দরবনের মানুষের কাছে আমি আপন হতে পেরেছি । তাঁদের জন্য কিছু করতে পেরেছি। শেষদিন পর্যন্ত যেন আমার গাঁয়ের মানুষগুলোর পাশে থাকতে পারি।"

অরুণোদয়বাবুর এই কর্মযজ্ঞের প্রেরণা কে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, " অবশ্যই আমার প্রিয় সুন্দরবনের মানুষ । সঙ্গে স্ত্রী অপর্ণার অবদানও অপরিসীম ।"

অপর্ণাদেবী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা । ছেলে অর্ণব বর্তমানে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করছেন । পুরস্কার তাঁকে উৎসাহিত করেছে । প্রবীণ চিকিৎসকের চোখে আজও একটাই স্বপ্ন, গোটা সুন্দরবনে গড়বেন আরোগ্য নিকেতন ।

Intro:সুন্দরবনে আর্তের সেবায় পদ্মশ্রী অরুণোদয়

সুন্দরবনঃ সুন্দরবনের বাদাবনে কেটেছে ছেলেবেলা। ছিল না খাবার। ছিল চিকিৎসাও। জীবনভর চাক্ষুষ করেছেন প্রান্তিক মানুষের কী নিদারুণ অসহায়তা! বড় হয়ে হলেন চিকিৎসক। চাকরির মোহ ছেড়ে ফিরলেন সেই আপন মুলুকে। সেই বাদাবন সুন্দরবনেই। নেমে পড়লেন গরিব মানুষের সেবায়। চলল বছরের পর বছর। অবশেষে মিলল স্বীকৃতি। চলতি বছর সমাজসেবায় পদ্মশ্রী খেতাব পেলেন চিকিৎসক অরুণোদয় মণ্ডল।

১৯৫৩ সালে অবিভক্ত ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের দালালখালি গ্রামে জন্ম অরুণোদয়ের। পড়াশোনা গ্রামের স্কুলেই। টাকি গভর্ণমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস। কিন্তু চাকরির মোহ তাঁর ছিল না। তিনি বাঁধা পড়তে চাননি নিয়মের বেড়াজালে। স্বাধীনভাবে প্রাকটিস করেছেন। কর্মজীবনের শুরু থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে গ্রামে-গঞ্জে ঘুরেছেন। চাক্ষুষ করেছেন প্রান্তিক মানুষের অসহায়তা। ২০০০ সালের বন্যায় সুন্দরবন ঘুরে ঘুরে তিনি গ্রামের মানুষের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। উপলব্ধি করেছেন, স্থায়ী কোনও প্রতিষ্ঠান না-গড়ে গ্রামের মানুষের সেবা করা সম্ভব নয়। সুন্দরবনের সাহেবখালি-রায়পাড়াতেই গড়ে তুললেন 'সুজন চিকিৎসা কেন্দ্র'। গত ২০ বছর ধরে টানা সেখানে নামমাত্র ফি নিয়ে তিনি চিকিৎসা করে চলেছেন। বর্তমানে তিনি থাকেন লেকটাউনে। বিরাটি স্টেশন থেকে প্রতি শনিবার সকালে তিনি কাঁধে ওষুধের ব্যাগ নিয়ে হাসনাবাদ লোকালে চড়েন। হাসনাবাদে নেমে নদীপথ পেরিয়ে তিনি সেই সাহেবখালি রায়পাড়ার 'সুজন'-এ পৌঁছন। শনি ও রবিবার সেখানে চিকিৎসা করেন। মহল্লায় তিনি 'সুন্দরবন সুজন' নামে পরিচিত।

প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের সন্ধ্যায় পদ্মশ্রীর তালিকায় তাঁর নাম ঘোষিত হয়েছে। পদ্ম-স্বীকৃতি পেয়ে কেমন লাগছে? প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, 'পুরস্কার পেতে কার না ভালো লাগে। আমারও নিশ্চয়ই ভালো লাগছে। রাষ্ট্রীয় খেতাব পেয়ে আমি গর্বিত। আমি তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছি আমার সুন্দরবনের মানুষের কাছে আমি আপন হতে পেরেছি। তাঁদের জন্য কিছু করতে পেরেছি। শেষদিন পর্যন্ত যেন আমার গাঁয়ের মানুষগুলোর পাশে থাকতে পারি।' আপনার এই কর্মযজ্ঞের প্রেরণা কে?
জবাবে ৬৮ বছরের প্রবীণ চিকিৎসক বললেন, 'অবশ্যই আমার প্রিয় সুন্দরবনের মানুষ। সঙ্গে স্ত্রী অপর্ণার অবদানও অপরিসীম।' অপর্ণাদেবী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। ছেলে অর্ণব বর্তমানে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করছেন। পুরস্কার তাঁকে উৎসাহিত করেছে। প্রবীণ চিকিৎসকের চোখে আজও একটাই স্বপ্ন--গড়বেন গোটা সুন্দরবনের আরোগ্য নিকেতন। Body:সুন্দরবনে আর্তের সেবায় পদ্মশ্রী অরুণোদয়

সুন্দরবনঃ সুন্দরবনের বাদাবনে কেটেছে ছেলেবেলা। ছিল না খাবার। ছিল চিকিৎসাও। জীবনভর চাক্ষুষ করেছেন প্রান্তিক মানুষের কী নিদারুণ অসহায়তা! বড় হয়ে হলেন চিকিৎসক। চাকরির মোহ ছেড়ে ফিরলেন সেই আপন মুলুকে। সেই বাদাবন সুন্দরবনেই। নেমে পড়লেন গরিব মানুষের সেবায়। চলল বছরের পর বছর। অবশেষে মিলল স্বীকৃতি। চলতি বছর সমাজসেবায় পদ্মশ্রী খেতাব পেলেন চিকিৎসক অরুণোদয় মণ্ডল।

১৯৫৩ সালে অবিভক্ত ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের দালালখালি গ্রামে জন্ম অরুণোদয়ের। পড়াশোনা গ্রামের স্কুলেই। টাকি গভর্ণমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস। কিন্তু চাকরির মোহ তাঁর ছিল না। তিনি বাঁধা পড়তে চাননি নিয়মের বেড়াজালে। স্বাধীনভাবে প্রাকটিস করেছেন। কর্মজীবনের শুরু থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে গ্রামে-গঞ্জে ঘুরেছেন। চাক্ষুষ করেছেন প্রান্তিক মানুষের অসহায়তা। ২০০০ সালের বন্যায় সুন্দরবন ঘুরে ঘুরে তিনি গ্রামের মানুষের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। উপলব্ধি করেছেন, স্থায়ী কোনও প্রতিষ্ঠান না-গড়ে গ্রামের মানুষের সেবা করা সম্ভব নয়। সুন্দরবনের সাহেবখালি-রায়পাড়াতেই গড়ে তুললেন 'সুজন চিকিৎসা কেন্দ্র'। গত ২০ বছর ধরে টানা সেখানে নামমাত্র ফি নিয়ে তিনি চিকিৎসা করে চলেছেন। বর্তমানে তিনি থাকেন লেকটাউনে। বিরাটি স্টেশন থেকে প্রতি শনিবার সকালে তিনি কাঁধে ওষুধের ব্যাগ নিয়ে হাসনাবাদ লোকালে চড়েন। হাসনাবাদে নেমে নদীপথ পেরিয়ে তিনি সেই সাহেবখালি রায়পাড়ার 'সুজন'-এ পৌঁছন। শনি ও রবিবার সেখানে চিকিৎসা করেন। মহল্লায় তিনি 'সুন্দরবন সুজন' নামে পরিচিত।

প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের সন্ধ্যায় পদ্মশ্রীর তালিকায় তাঁর নাম ঘোষিত হয়েছে। পদ্ম-স্বীকৃতি পেয়ে কেমন লাগছে? প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, 'পুরস্কার পেতে কার না ভালো লাগে। আমারও নিশ্চয়ই ভালো লাগছে। রাষ্ট্রীয় খেতাব পেয়ে আমি গর্বিত। আমি তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছি আমার সুন্দরবনের মানুষের কাছে আমি আপন হতে পেরেছি। তাঁদের জন্য কিছু করতে পেরেছি। শেষদিন পর্যন্ত যেন আমার গাঁয়ের মানুষগুলোর পাশে থাকতে পারি।' আপনার এই কর্মযজ্ঞের প্রেরণা কে?
জবাবে ৬৮ বছরের প্রবীণ চিকিৎসক বললেন, 'অবশ্যই আমার প্রিয় সুন্দরবনের মানুষ। সঙ্গে স্ত্রী অপর্ণার অবদানও অপরিসীম।' অপর্ণাদেবী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। ছেলে অর্ণব বর্তমানে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করছেন। পুরস্কার তাঁকে উৎসাহিত করেছে। প্রবীণ চিকিৎসকের চোখে আজও একটাই স্বপ্ন--গড়বেন গোটা সুন্দরবনের আরোগ্য নিকেতন। Conclusion:সুন্দরবনে আর্তের সেবায় পদ্মশ্রী অরুণোদয়

সুন্দরবনঃ সুন্দরবনের বাদাবনে কেটেছে ছেলেবেলা। ছিল না খাবার। ছিল চিকিৎসাও। জীবনভর চাক্ষুষ করেছেন প্রান্তিক মানুষের কী নিদারুণ অসহায়তা! বড় হয়ে হলেন চিকিৎসক। চাকরির মোহ ছেড়ে ফিরলেন সেই আপন মুলুকে। সেই বাদাবন সুন্দরবনেই। নেমে পড়লেন গরিব মানুষের সেবায়। চলল বছরের পর বছর। অবশেষে মিলল স্বীকৃতি। চলতি বছর সমাজসেবায় পদ্মশ্রী খেতাব পেলেন চিকিৎসক অরুণোদয় মণ্ডল।

১৯৫৩ সালে অবিভক্ত ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের দালালখালি গ্রামে জন্ম অরুণোদয়ের। পড়াশোনা গ্রামের স্কুলেই। টাকি গভর্ণমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস। কিন্তু চাকরির মোহ তাঁর ছিল না। তিনি বাঁধা পড়তে চাননি নিয়মের বেড়াজালে। স্বাধীনভাবে প্রাকটিস করেছেন। কর্মজীবনের শুরু থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে গ্রামে-গঞ্জে ঘুরেছেন। চাক্ষুষ করেছেন প্রান্তিক মানুষের অসহায়তা। ২০০০ সালের বন্যায় সুন্দরবন ঘুরে ঘুরে তিনি গ্রামের মানুষের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। উপলব্ধি করেছেন, স্থায়ী কোনও প্রতিষ্ঠান না-গড়ে গ্রামের মানুষের সেবা করা সম্ভব নয়। সুন্দরবনের সাহেবখালি-রায়পাড়াতেই গড়ে তুললেন 'সুজন চিকিৎসা কেন্দ্র'। গত ২০ বছর ধরে টানা সেখানে নামমাত্র ফি নিয়ে তিনি চিকিৎসা করে চলেছেন। বর্তমানে তিনি থাকেন লেকটাউনে। বিরাটি স্টেশন থেকে প্রতি শনিবার সকালে তিনি কাঁধে ওষুধের ব্যাগ নিয়ে হাসনাবাদ লোকালে চড়েন। হাসনাবাদে নেমে নদীপথ পেরিয়ে তিনি সেই সাহেবখালি রায়পাড়ার 'সুজন'-এ পৌঁছন। শনি ও রবিবার সেখানে চিকিৎসা করেন। মহল্লায় তিনি 'সুন্দরবন সুজন' নামে পরিচিত।

প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের সন্ধ্যায় পদ্মশ্রীর তালিকায় তাঁর নাম ঘোষিত হয়েছে। পদ্ম-স্বীকৃতি পেয়ে কেমন লাগছে? প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, 'পুরস্কার পেতে কার না ভালো লাগে। আমারও নিশ্চয়ই ভালো লাগছে। রাষ্ট্রীয় খেতাব পেয়ে আমি গর্বিত। আমি তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছি আমার সুন্দরবনের মানুষের কাছে আমি আপন হতে পেরেছি। তাঁদের জন্য কিছু করতে পেরেছি। শেষদিন পর্যন্ত যেন আমার গাঁয়ের মানুষগুলোর পাশে থাকতে পারি।' আপনার এই কর্মযজ্ঞের প্রেরণা কে?
জবাবে ৬৮ বছরের প্রবীণ চিকিৎসক বললেন, 'অবশ্যই আমার প্রিয় সুন্দরবনের মানুষ। সঙ্গে স্ত্রী অপর্ণার অবদানও অপরিসীম।' অপর্ণাদেবী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। ছেলে অর্ণব বর্তমানে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করছেন। পুরস্কার তাঁকে উৎসাহিত করেছে। প্রবীণ চিকিৎসকের চোখে আজও একটাই স্বপ্ন--গড়বেন গোটা সুন্দরবনের আরোগ্য নিকেতন।
Last Updated : Jan 26, 2020, 5:04 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.