হাবরা, 3 জুলাই : কোরোনা সংক্রমণের আশঙ্কা । তাই হাবরা স্টেট জেনেরাল হাসপাতালে কমছে রোগীর ভিড় । গত কয়েকদিনে অর্ধেকের বেশি বেডই খালি পড়ে রয়েছে ।
উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা স্টেট জেনেরাল হাসপাতালে বেডের সংখ্যা 131টি ৷ তবুও এই হাসপাতালে গড়ে তিনশো রোগী সব সময়ই ভরতি থাকেন । পার্শ্ববর্তী গাইঘাটা, নগরউখরা, অশোকনগর, মছলন্দপুর ও গোবরডাঙা থেকে রোগীরা এখানে আসেন । এমনকী মেঝেতেও মাদুর পেতে রোগীর চিকিৎসা চলে । কিন্তু গত একমাসে ছবিটা বদলে গেছে অনেকটাই । হাবড়ায় পরপর কোরোনা রোগীর খোঁজ মিলেছে । জুন মাসে হাবড়া হাসপাতালে সোয়াব টেস্টে মোট 27 জনের কোরোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে । এভাবে পরপর কোরোনা রোগীর খোঁজ মেলায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ রোগীদের মধ্যে । তাঁরা হাসপাতালে আসছেন না । হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে মোট 80টি বেড আছে । কিন্তু সেখানে এখন রোগী রয়েছে মাত্র 24 জন । যদিও প্রসূতি বিভাগে রোগীর স্বাভাবিক ভিড় রয়েছে ।
ভিড় কমেছে হাসপাতালের আউটডোর বিভাগেও । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিদিন আউটডোরে গড়ে 900 থেকে 1000 রোগী আসে । কিন্তু গত একমাসে তা চোখে পড়ার মতো কমেছে । এখন আউটডোরে প্রতিদিন গড়ে 250 থেকে 300 রোগী আসছে । শুধু তাই নয়, হাসপাতালের ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানেও বিক্রি কমে গেছে কয়েক গুণ । তারক পাল নামে এক রোগী বলেন, "আগে সকালে এসে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে বাড়ি ফিরতে বিকেল হয়ে যেত । এখন দেখছি ভিড় নেই বললেই চলে । হাসপাতালে আসার কিছুক্ষণের মধ্যে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছি । কোরোনায় ভয়ে মনে হয় হাসপাতালে আসছেন না অনেকে । " হাসপাতালে রোগীর ভিড় কমে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের মধ্যেও । সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে হাসপাতালে মোট 21 টি অ্যাম্বুল্যান্স থাকে । প্রতিদিন প্রতিটি অ্যাম্বুল্যান্স গড়ে দু'টি করে ভাড়া পেত । এখন দুই বা তিনদিন পর তাঁরা একটি করে ভাড়া পাচ্ছেন । এবিষয়ে অ্যাম্বুল্যান্স চালক সংগঠনের সম্পাদক দেবাশিস দে বলেন, " আগে আমরা দিনে গড়ে দু'টো করে ভাড়া পেতাম । এখন দু'তিনদিন পরে একটা ভাড়া পাই । কোরোনার আতঙ্কেই রোগীর ভিড় কমেছে হাসপাতালে ।"
হাসপাতালের সুপার শংকর ঘোষ বলেন, "কোরোনা আতঙ্কের জেরে হাবরা হাসপাতালে রোগীর ভিড় কমছে । প্রসূতি বিভাগে ভিড় স্বাভাবিকই আছে । কেবল পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন বিভাগে রোগীর ভিড় কমে গেছে । তাই ওই ওয়ার্ডগুলোয় অর্ধেক বেডই খালি পড়ে রয়েছে । হাবড়ায় কোরোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে । শুধুমাত্র আমাদের হাসপাতালে পরীক্ষা করা কোরোনা পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যাই 27 । সম্ভবত, কোরোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই রোগীরা হাসপাতালে ভরতি হচ্ছেন না ।"