হাবড়া, 5 নভেম্বর : পড়াশোনা করে চাকরি পেতে হবে। চাকরি না পেলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এই ভাবনা থেকে বেরিয়ে নিজের চায়ের দোকান করে ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন হাবড়ার কৈপুকুরের বছর ছাব্বিশের টুকটুকি দাস। হাবড়ার 2 নম্বর স্টেশনে একটি ছোট ঘর নিয়ে ইতিমধ্যে তিনি খুলে ফেলেছেন নিজের চায়ের দোকান। যার নাম এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি। চলতি সপ্তাহের সোমবার অর্থাৎ 1 নভেম্বর থেকেই শুরু হয়েছে টুকটুকির চায়ের দোকানের পথ চলা। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার পেয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই দোকান।
টুকটুকির বাবা প্রশান্ত দাস বাড়িতে একটি মুদি দোকান চালান ৷ পাশাপাশি, সংসার চালাতে মাঝেমধ্যে ইঞ্জিনভ্যানও চালান তিনি। প্রশান্তবাবুর দুই মেয়ে ও এক ছেলে। পরিবারে সবার ছোট টুকটুকি। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, ছেলে কর্মসূত্রে মধ্যমগ্রামে থাকেন। টুকটুকি 2016 সালের হাবড়া চৈতন্য কলেজ থেকে ভাল ফল করে ইংরেজিতে অনার্স পাশ করেছেন। পরবর্তীতে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন তিনি । আর পাঁচটা মেয়ের মতো প্রথমদিকে চাকরির ইচ্ছা ছিল টুকটুকির। চাকরির পাশাপাশি ব্যবসার প্রতিও বেশ আগ্রহ ছিল তাঁর। ইউটিউবে ব্যবসামূলক বিভিন্ন ভিডিও দেখে সেই আগ্রহ আরও দৃঢ় হয় তাঁর।
আরও পড়ুন : Tarapith : দু'বছর পর তারাপীঠের মন্দিরে হল কুমারী পুজো
টুকটুকি জানিয়েছেন, লকডাউনের সময় অনলাইনে খাবারের ব্যবসা করে ভালই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই তিনি ভাবতে শুরু করেন কি ধরনের ব্যবসা করা যায়। একদিন হঠাৎ এক চায়েওয়ালার গল্প পড়ে তিনি ঠিক করেন চায়ের দোকান করবেন। সে কথা জানান পরিবারকে। প্রথম থেকে মেয়ের ব্যবসায় ঘোর আপত্তি ছিল পরিবারের। পরিবারের সদস্যদের টুকটুকি বোঝাতে থাকেন ব্যবসা করেও ভবিষ্যৎ গড়া যেতে পারে। একসময় মেয়ের জেদের কাছে হার মেনে ব্যবসার জন্য সম্মতি দেয় তাঁর পরিবার। পরিবারের সম্মতি পেয়ে হাবড়া দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে 4/4 একটি ঘর নেন টুকটুকি । সেখানে খুলে ফেলেন নিজের স্বপ্নের চায়ের দোকান। নাম "এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি"। ট্যাগলাইন "এনিটাইম ইস টি টাইম"।
দোকানের নাম এমন কেন? প্রশ্নে টুকটুকির উত্তর, "ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের নাম খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগামী দিনে এই ব্যবসা বড় করার ইচ্ছা রয়েছে। সেই কারণে নামকরনের ক্ষেত্রে একটু নতুনত্ব ভাবনা। যাতে খুব সহজে মানুষের মনে ধরে ।" তাঁর কথায়, এই নামটা মানুষের খুব মনে ধরছে। ফলে অল্প সময়ে পরিচিতিও বেড়েছে। চায়ের পাশাপাশি সন্ধ্যায় এখন সিঙ্গারা বানাছেন টুকটুকি। আগামী দিনে মোমো করার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। চায়ের ব্যবসাকে একটি ব্র্যান্ড তৈরি করে নিজের পরিচিতি তৈরির স্বপ্ন এখন টুকটুকির। ক্রেতারাও খুশি তাঁর চা খেয়ে ৷