বারাসত, 17 মে: আগ্নেয়াস্ত্র-সহ বেসরকারি কলেজের এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রকে গ্রেফতার করল পুলিশ ৷ ধৃতের নাম আদিত্য কুমার ৷ ঘটনাটিকে ঘিরে মঙ্গলবার রাতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর 24 পরগনার বারাসতের কাজীপাড়া যশোর রোডে ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কলেজের সামনে ঘোরাঘুরি করছিলেন ওই পড়ুয়া ৷ তখনই স্থানীয়দের নজরে আসে বিষয়টি ৷ খবর পেয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সামনে থেকে ওই পড়ুয়াকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ ৷ জানা গিয়েছে, ওই কলেজ সংলগ্ন এলাকায় সম্প্রতি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছিল ৷ আদিত্য সেই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ স্থানীয়দের ৷ কোথা থেকে ওই পড়ুয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি জোগাড় করলেন ? তা জানকে বারাসত থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ৷
বারাসতের কাজীপাড়ায় যশোর রোডের ঠিক পাশেই রয়েছে একটি নামজাদা বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ৷ সেই কলেজেরই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিপ্লোমা কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আদিত্য কুমার ৷ বিহারের পটনায় তাঁর বাড়ি হলেও, পড়াশোনার জন্য হুগলির রিষড়ায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন তিনি ৷ সেখান থেকেই বারাসতের ওই কলেজে যাতায়াত করেন ৷ স্থানীয় সূত্রে খবর, ইদানিং ল্যাপটপ, স্মার্টফোন চুরির ঘটনা বাড়ছিল ওই এলাকায় ৷ সেই চুরির ঘটনায় সন্দেহ গিয়ে পড়ে কলেজের পডুয়াদের উপর ৷
মঙ্গলবারও স্থানীয় এক ব্যক্তি ল্যাপটপ চুরি যায় ৷ তখনই রাতের অন্ধকারে ওই কলেজ ছাত্রকে ইতস্তত ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ আরও বাড়ে স্থানীয়দের ৷ পরিস্থিতির আঁচ করে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন ওই কলেজ ছাত্র ৷ সেই সময় ধাওয়া করে ধরে ফেলা হয় তাঁকে ৷ আর তাতেই সামনে আসে গোটা ঘটনাটি ৷ ছাত্রের সঙ্গে থাকা ব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে আসে একটি ওয়ান শটার ৷ এর পেরই ছাত্রটিকে আটকে রেখে খবর দেওয়া হয় পুলিশে ৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছাত্রের কাছ থেকে ওই আগ্নেয়াস্ত্রটি বাজেয়াপ্ত করে তদন্তকারীরা ৷ তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় থানায় ৷ পরে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় দ্বিতীয় বর্ষের কলেজ ছাত্র আদিত্য কুমারকে ৷
আরও পড়ুন: গয়না পালিশের পাউডার বিক্রির নামে সোনা ছিনতাই দুষ্কৃতীদের
এই ঘটনায় মেহবুব রহমান গাজী নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "এই ধরণের ঘটনা ভাবাই যায় না ৷ কোথায় সমাজ গিয়ে পৌঁছেছে ৷ একজন কলেজ ছাত্রের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যাচ্ছে ৷ অভিভাবকরা ছেলে-মেয়েদের মানুষ করার জন্য কত কষ্ট করছে ৷ আর এরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ক্রিমিনাল হতে চাইছে ৷ এটা খুব খারাপ লাগে ৷’’ একই কথা শেখ আব্দুল হালিম নামে অপর এক স্থানীয় বাসিন্দার মুখে ৷ তাঁর কথায়, "এখানে অসামাজিক কার্যকলাপ মাঝে মধ্যেই ঘটে ৷ বিশেষ করে পড়ুয়াদের নেশার প্রতি আসক্ত বাড়ছে ৷ এই ছাত্রটিও এর ব্যতিক্রম নয় ৷’’ তিনি জানান, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন চুরির কথা আদিত্য তাঁদের কাছে স্বীকারও করেছেন ৷ ধৃত ছাত্রকে বুধবার দুপুরে বারাসত আদালতে তোলা হলে তাঁকে 5 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক ৷