ব্যারাকপুর, 13 ডিসেম্বর: আবাস যোজনা প্রকল্পের বাড়ি বন্টন নিয়ে যাতে কোনও অনিয়ম না হয় সে বিষয়ে এবার আগে থেকেই সতর্ক রাজ্য ৷ জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই নিয়ে যাতে কোনও অনিয়ম না হয়, অভিযোগ না ওঠে সে বিষয়ে নজর রাখতে ৷ যোগ্য দাবিদাররাই যাতে প্রকল্পের সুবিধা পান তা একাধিক স্তরে খতিয়ে দেখতে ও পুলিশকে দিয়ে যাচাই করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ সেই মতো পুলিশি ভেরিফিরেশন শুরু হতেই সামনে আসতে শুরু করছে অনিয়মের ছবি (dispute in Awas Yojana beneficiary list find in Barrackpore during verification) ৷
আবাস যোজনার প্রকল্পে ব্যারাকপুর মহকুমার পানপুর বিডিও অফিসের অন্তর্গত ব্যারাকপুর এক পঞ্চায়েত সমিতির কাউগাছি এক নম্বর পঞ্চায়েতে 569টি বাড়ির নামে অনুমোদন এসেছে । আবাস যোজনা প্রকল্পে (Awas Yojana) উত্তর 24 পরগনার জেলাশাসকের নির্দেশে 10 শতাংশ বাড়ির অনুমোদন যাচাই করে দেখার কাজ শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের ৷ কাউগাছি এক নম্বর পঞ্চায়েত বাসুদেবপুর থানার অন্তর্গত (awas yojana verification in Barrackpore)।
আরও পড়ুন: আবাস যোজনার সমীক্ষা করা কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ মুখ্যসচিবের
জানাই গিয়েছে, অনুমোদিত বাড়ি যাচাই করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি এরকম বাড়ির চোখে পড়েছে যেগুলি অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মাবলীর বিরুদ্ধ । দেখা যাচ্ছে পাকা বাড়ি থাকতেও অনেকে এই প্রকল্পে আবেদন জানিয়েছে ৷ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশিতে সেরকমই কয়েকটা ঘটনা উঠে এসেছে । কেউ ভাঙা বাড়ি, কেউ ফাঁকা জমি দেখিয়ে এই প্রকল্পে ঘরের জন্য আবেদন জানিয়েছেন । যেমন এই এলাকার বাসিন্দা রাজেশ দেবনাথ ৷ জানা গিয়েছে পেশায় সারাই মিস্ত্রি এই ব্যক্তি তাঁর এক আত্মীয়ের ফাঁকা জমি দেখিয়ে ঘরের আবেদন করেছেন । বাসুদেবপুর থানার আধিকারিক তাঁর তথ্য যাচাই করতে গিয়ে দেখেন, আবেদনের সময় যে জমির নথি ওই ব্যক্তি জমা দিয়েছিলেন সেখানে রয়েছে নবনির্মিত বাড়ি । পুলিশের প্রশ্নে ওই ব্যক্তি জানান, তিনি যখন আবেদন করেছিলেন তখন এই বাড়ি ছিল না । পরবর্তীকালে তা নির্মাান হয় । বাড়ি করতে গিয়ে দেনায় পড়ে গিয়েছেন সেই ঋণ শোধ করার জন্য আত্মীয় জমি দেখিয়ে এই প্রকল্পের আর্থিক সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন ওই ব্যক্তি ৷ তবে ধরা পড়ে এই প্রকল্পের সুবিধা তিনি আর নেবেন না বলে জানিয়েছেন ৷
আরও দেখা যায় একজন ব্যক্তি প্রায় পুরো জমিতেই বাড়ি করে ফেলেছেন ৷ তিনি পরিবার নিয়ে পাকা বাড়িতে থাকেন ৷ তাঁর জমিতে বেশ কয়েক ঘর ভাড়াও থাকে ৷ অথচ তিনি প্রকল্পের সুবিধা পেতে আবেদন জানিয়েছেন ৷ যাতে ওই টাকায় বাকি থাকা বাড়ির কাজ শেষ হয় ৷ সূত্রের খবর, এই 569টি অনুমোদিত বাড়ির 5 শতাংশের অনুমোদন যথার্থ নয় ৷ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারকনাথ আদক জানিয়েছেন, যদি কেউ এরকম অন্যায় ভাবে আবেদন করে থাকেন তাদের আবেদন মঞ্জুর করা হবে না ৷ প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে । উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় রাজ্যের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র ৷ শর্ত দেওয়া হয়েছে যোগ্যরাই যাতে এই প্রকল্পের সুবিধা পান তা নিশ্চিত করতে হবে ৷