দেগঙ্গা, 3 সেপ্টেম্বর : আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গা । সংঘর্ষে জখম হয়েছে উভয়পক্ষের তিনজন । এছাড়া সংঘর্ষ চলাকালীন একটি দোকান ও বাইকে ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ । দু-পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে দেগঙ্গা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে । অভিযোগ পেয়ে পুলিশ উভয়পক্ষের মোট 16 জনকে গ্রেপ্তার করেছে । ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আমফান ক্ষতিপূরণে স্বজনপোষণের অভিযোগে সম্প্রতি তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রামবাসী স্থানীয় পঞ্চায়েত ও BDO অফিসে গণ অভিযোগ জানায় । সেই অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা 1 নম্বর পঞ্চায়েতের গোবরা পাড়ার বাসিন্দা ও তৃণমূল নেতা মিজ়ানুর মণ্ডল । এই নিয়ে গতরাতে মিজ়ানুরের সঙ্গে বচসা বাধে তাঁর বিপক্ষ গোষ্ঠীর লোকজনের । সেই বচসা থেকে হাতাহাতি । পরে তা সংঘর্ষের আকার নেয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে । সংঘর্ষ চলাকালীন স্থানীয় একটি দোকান ও বাইকে ভাঙচুর চালানো হয় বলেও অভিযোগ । সংঘর্ষ উভয়পক্ষের তিনজন জখম হয় ।পরে, জখমদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের । রাতেই দু'পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে দেগঙ্গা থানায় অভিযোগ দায়ের করে ।
আরও পড়ুন : আমফান ক্ষতিপূরণে স্বজনপোষণের অভিযোগ, দেগঙ্গায় প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
এই বিষয়ে পূর্ব চ্যাংদানা গ্রামের তৃণমূল নেতা মিজ়ানুর মণ্ডল বলেন, "আমফান ক্ষতিপূরণ নিয়ে পঞ্চায়েত সদস্যের স্বজনপোষণের প্রতিবাদ করাতেই পরিকল্পনা করে হামলা চালানো হয়েছে । হামলার সঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্যের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা সাইফুল ইসলাম ও দুলাল মণ্ডল জড়িত।"
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে বিপক্ষ গোষ্ঠীর তরফে । মিজ়ানুরের গোষ্ঠীর লোকেদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনেছে তারা । এদিকে,দু'পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আজ সকালে মোট 16 জনকে গ্রেপ্তার করেছে । আজ দুপুরে ধৃতদের বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন : আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
অন্যদিকে, আমফান ক্ষতিপূরণ নিয়ে জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে দেগঙ্গা ব্লক থেকেই । এই অভিযোগ ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল বারবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে । কখনও পঞ্চায়েতে তালা ঝোলানো । আবার কখনও পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের সাক্ষী থেকেছে দেগঙ্গা । এবার সেই একই অভিযোগে শাসকদলের বিবাদমান দুই গোষ্ঠী জড়াল সংঘর্ষে, যা তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের বিড়ম্বনা বাড়াবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ।