মধ্যমগ্রাম, 10 ফেব্রুয়ারি : CAA ও NRC আতঙ্কে এবার সার্ভে করতে আসা কলেজ পড়ুয়াদের আটকে রাখলেন গ্রামবাসীরা । তাঁদের ঘিরে দেখানো হল বিক্ষোভ । মধ্যমগ্রামের রোহণ্ডা চণ্ডীগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবরা গ্রামের ঘটনা । খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে পৌঁছায় ৷ আটক পড়ুয়াদের উদ্ধারের চেষ্টা করে ৷ কিন্তু তাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে । পুলিশকেও দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখা হয় । পরিস্থিতির সামাল দিতে ঘটনাস্থানে ডেকে আনা হয় কলেজের টিচার ইনচার্জকে । শেষে পুলিশের সামনে তিনি মুচলেকা দিলে আটক পড়ুয়াদের ছেড়ে দেওয়া হয় ।
স্থানীয় সূত্রে ও পুলিশ সূত্রে খবর, আজ বিকালে মধ্যমগ্রামের একটি বেসরকারি কলেজের প্রায় 25 জন পড়ুয়া গোবরা গ্রামে গেছিল জন উন্নয়ন প্রকল্পের সার্ভে করতে । স্থানীয়দের অভিযোগ, সার্ভে করার নামে পড়ুয়ারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং ব্যাঙ্কের বিভিন্ন নথিপত্র দেখতে চেয়েছিলেন । যার জেরে CAA ও NRC আতঙ্ক ছড়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে । মুহূর্তে অনেকে জড়ো হয়ে যায় সেখানে । আটকে রাখা হয় সার্ভে করতে আসা কলেজ পড়ুয়াদের ।
এদিকে, স্থানীয় পঞ্চায়েতের মাধ্যমে খরব পেয়ে ঘটনাস্থানে পৌঁছায় মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ । গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনার চেষ্টা করে । কিন্তু উলটে পুলিশকেই ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা । ফলে,পরিস্থিতি উতপ্ত হয়ে ওঠে । শেষে ডেকে পাঠানো হয় ওই বেসরকারি কলেজের টিচার ইনচার্জকে । তিনি পুলিশের মধ্যস্থতায় মুচলেকা দিলে আটক পড়ুয়াদের ছেড়ে দেওয়া হয় ।
ঘটনা প্রসঙ্গে গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান মারুফা বিবি বলেন, "NRC, CAA নিয়ে মানুষ আতঙ্কিত ৷ যার জেরেই আজ এই বিভ্রান্তি ৷ 4 মাস আগে ওই কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ৷ জানিয়েছিল উন্নয়নের স্বার্থে গ্রামে গ্রামে পড়ুয়ারা সার্ভে করতে যাবে ৷ কিন্তু আজ আসার আগে আমায় জানানো হয়নি ৷ আমি বলেছি, পড়ুয়াদের পাঠানোর আগে আমাকে জানালেন না কেন ? "
এ বিষয়ে পড়ুয়াদের বক্তব্য, "কলেজের ID কার্ডসহ বিভিন্ন কাগজপত্র দেখানো হলেও মানতে চায়নি গ্রামবাসীরা । উলটে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখানো হয় ৷ কলেজ কর্তৃপক্ষ মুচলেকা দিয়ে উদ্ধার না করলে পরিস্থিতি অন্যরকম হত ।"
ওই বেসরকারি কলেজের প্রফেসর অভিষেক সাহা বলেন, "উন্নত ভারত অভিযান ৷ এটা AICT স্কিম ৷ সেখানে পাঁচটি গ্রামকে বেছে নেওয়া হয়েছিল ৷ যার মধ্যে গোবরা একটি ৷ গ্রামের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সার্ভে করার জন্য পড়ুয়াদের পাঠানো হয় ৷ এর জন্য সাড়ে তিন মাস আগে পঞ্চায়েত প্রধানের অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল ৷ সার্ভের ফর্মে আধার, ভোটার কার্ড সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু সেখানে বিস্তারিত তথ্য নয়, শুধু হ্যাঁ বা না তে উত্তর দেওয়ার অপশন ছিল ৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে NRC, CAA নিয়ে যে পরিস্থিতি রাজ্যে চলছে তাতে কিছু ভালো কাজ এভাবে আটকে যাচ্ছে ৷ NRC, CAA নিয়ে মানুষের কাছে স্বচ্ছ ধারণা না থাকায় মানুষ এমন করছে ৷"
এ বিষয়ে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ জানিয়েছে, কেন ওই কলেজ পড়ুয়ারা গ্রামে সার্ভে করতে গেল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।